The news is by your side.

বিশ্বকাপ ২০১৯:প্রস্তুত টিম বাংলাদেশ

0 774

দরজায় কড়া নাড়ছে স্বপ্নের বিশ্বকাপ। নিউজিল্যান্ডের দুঃস্মৃতি কাটিয়ে একটু একটু করে স্বাভাবিক হচ্ছেন টাইগাররাও। কেউ খেলছেন ঢাকা লিগ, কেউ বা নিজের মতো করে অনুশীলন করছেন, কেউ বা ছুটি কাটাচ্ছেন পরিবারের সঙ্গে। বসে নেই টিম ম্যানেজমেন্টও। ইংল্যান্ড-ওয়েলসে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্বকাপের জন্য এরই মধ্যে ত্রিশজনের স্কোয়াড তৈরি করে রেখেছেন নির্বাচকরা।

দু-একটি জায়গা ছাড়া মাশরাফিও তার বিশ্বকাপ স্কোয়াড সাজিয়ে রেখেছেন। আইসিসির বেঁধে দেওয়া নিয়মে ১৫ জনের স্কোয়াড যাবে বিশ্বকাপ খেলতে। তাদের খরচও দেবে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ামক এ সংস্থাটি। তবে এবার যেহেতু দেড় মাসের লম্বা সফর তাই নির্ধারিত পনেরোজনের বাইরে অতিরিক্ত দুই ক্রিকেটার দলের সঙ্গে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে টিম ম্যানেজমেন্ট এবং সেটা বিশ্বকাপের আগে আয়ারল্যান্ড সফর থেকেই।

২২ এপ্রিল ঢাকার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে দলগত অনুশীলনের মধ্য দিয়ে শুরু হবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের বিশ্বকাপের আনুষ্ঠানিক প্রস্তুতি। এরপর বাকি প্রস্তুতি হবে আয়ারল্যান্ড ও ইংল্যান্ডের লিস্টারশায়ারে।

আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজ, কন্ডিশনিং ক্যাম্প এবং বিশ্বকাপ মিলিয়ে যেহেতু ইউরোপে লম্বা সফরে থাকবেন মাশরাফিরা। সেহেতু ক্রিকেটারদের ইনজুরি, নেটে বোলার আর ব্যাটসম্যানের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি কন্ডিশনের সঙ্গে বিকল্প খেলোয়াড়দের প্রস্তুত রাখতে অতিরিক্ত দুই ক্রিকেটার সঙ্গে নিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে বিসিবি।

এই সৌভাগ্যবান দুই ক্রিকেটার দলের সঙ্গে থাকবেন সম্পূর্ণ বিসিবির ব্যবস্থাপনায়। কারণ বিশ্বকাপ শুরু হলে চূড়ান্ত তালিকায় থাকা ১৫ জন ক্রিকেটারের যাবতীয় খরচ বহন করবে আইসিসি। বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরী জানান, ‘কতজন অরিক্ত খেলোয়াড় দলের সঙ্গে যাবে তা ঠিক হয়নি। সেটা নির্বাচকরা ঠিক করবেন। তবে দলের প্রয়োজন ও চাহিদা অনুযায়ী খেলোয়াড় পাঠাব আমরা। কারণ আগেও আমরা দলের সঙ্গে অতিরিক্ত খেলোয়াড় পাঠিয়েছি। যার সুফল পেয়েছে দল।’

ত্রিদেশীয় সিরিজে অংশ নিতে ১ মে আয়ারল্যান্ডে রওনা দেবেন মাশরাফিরা। স্বাগতিক আয়ারল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে নিয়ে ৫ থেকে ১৭ মে হবে তিন জাতির এ ওয়ানডে টুর্নামেন্ট। যে টুর্নামেন্টে হার-জিতের চেয়েও দলের প্রস্তুতিকে গুরুত্ব দেবে টিম ম্যানেজমেন্ট।

টাইগারদের সেরা প্রস্তুতি হবে ত্রিদেশীয় সিরিজিটা জিততে পারলে। দলের সঙ্গে অতিরিক্ত এই দুই ক্রিকেটারের নামও হয়তো ঠিক করে রেখেছে টিম ম্যানেজমেন্ট। বোর্ডে অনুমোদন হওয়ার পরই খেলোয়াড়দের নাম প্রকাশ করা হবে। তবে ইঙ্গিত মিলেছে একজন পেসার ও একজন ব্যাটসম্যানকে সুযোগ দেওয়া হবে।

অতিরিক্ত দুই ক্রিকেটারকে দলে নেওয়ার কারণ সমকালকে জানালেন বিসিবির প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু, ‘দুই থেকে আড়াই মাসের একটা সফরে থাকবে দল। টানা খেলা এবং কন্ডিশনিং ক্যাম্প মিলিয়ে খেলোয়াড়দের কারও কারও বিশ্রামের প্রয়োজন হতে পারে। ইনজুরি সমস্যা হতে পারে। আর ইনজুরি হলে বিকল্প খেলোয়াড় দরকার হবে। আগে থেকে দলের সঙ্গে থাকলে কন্ডিশনে মানিয়ে নেওয়ার ঝামেলা হবে না। এজন্য দু’জন অতিরিক্ত খেলোয়াড় দলের সঙ্গে যাবে।’

ত্রিদেশীয় ও বিশ্বকাপ মিলিয়ে প্রায় আড়াই মাস ইউরোপে থাকতে হবে টাইগারদের। ইউরোপে লম্বা সময় খেলার অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের নেই বললেই চলে। ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পর জাতীয় দলের কোনো ক্রিকেটারই ইউরোপে কোনো ধরনের ক্রিকেট খেলেননি। বৈরী কন্ডিশনে ভালোভাবে মানিয়ে নিতে বিশ্বকাপের আগের পুরো সময়টাই ইউরোপে নিবিড় প্রশিক্ষণে থাকবে বাংলাদেশ দল। বিসিবি ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান আকরাম খানের মতে, ‘২০১৬ সাল থেকেই আমরা মূল দলের সঙ্গে কয়েকজন অতিরিক্ত ক্রিকেটার নিয়েছি। যাতে করে বিকল্প প্রয়োজন হলে হাতের কাছেই পাওয়া যায়।’

আয়ারল্যান্ডে তিন জাতি ওয়ানডে টুর্নামেন্টের লিগ রাউন্ডে চারটি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাচ্ছে টাইগার বাহিনী। প্রথম ম্যাচ ৭ মে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। ৯ মে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচ। ১৩ ও ১৫ মে ফিরতি লেগ ম্যাচ হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ আর আইরিশদের সঙ্গে। ফাইনালে উন্নীত হতে পারলে বাড়তি ম্যাচ পাবে। ১৭ মে হবে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচটি।

আয়ারল্যান্ড মিশন শেষে লেস্টারশায়ারে তাঁবু ফেলবেন মাশরাফিরা। ১০ থেকে ১২ দিনের কন্ডিশনিং ক্যাম্প শেষে বিশ্বকাপের হোটেলে উঠবেন। কার্ডিফে ২৬ মে পাকিস্তানের বিপক্ষে আর ২৮ মে ভারতের বিপক্ষে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে। ৫ জুন কেনিংটন ওভালে দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচ দিয়ে আনুষ্ঠানিক বিশ্বকাপ শুরু করবে বাংলাদেশ। অতীতেও অবশ্য মূল স্কোয়াডের বাইরে এভাবে নিজেদের খরচে বাড়তি ক্রিকেটার নেওয়ার ঘটনা আছে বাংলাদেশ ক্রিকেটে।

২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজেও তিনজন ক্রিকেটার নাসির হোসেন, শুভাশীষ রায় ও নুরুল হাসানকে দলে রেখেছিল বিসিবি। টুর্নামেন্ট শুরু হলে নাসির আর শুভাশীষ দেশে ফেরেন। মুশফিকুর রহিমের বিকল্প হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শেষ পর্যন্ত দলের সঙ্গে ছিলেন সোহান। এবারও তেমন কিছু দেখা যেতে পারে।

তবে নিজ খরচে বাড়তি ক্রিকেটার নেওয়ার এই রীতি হাথুরুসিংহের সময় থেকেই চালু হয়েছে। এবারও যেমন শ্রীলংকা বিশ্বকাপে হাথুরুর পরামর্শেই নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চারজন ক্রিকেটার নিয়ে যাচ্ছে ইংল্যান্ডে।

 

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.