দু’ দিক থেকে খুলে যাচ্ছে দরজা। ঠিক যেন সিনেমা! চামড়ার জ্যাকেট গায়ে, চোখে কালো সানগ্লাস। ‘স্লো মোশনে’ বেরিয়ে আসছেন যিনি, তিনি কোনও হলিউড ছবির নায়ক নন। তবে একনায়ক তো বটেই। তিনি উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জং উন। দু’পাশে দুই সেনাকর্তাকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে আসছেন কিম। তার পরেই নির্দেশ দিচ্ছেন ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার। ব্যাকগ্রাউন্ডে তখন রোমাঞ্চকর মিউজ়িক বাজছে। উত্তর কোরিয়া প্রশাসনের প্রকাশিত এক ভিডিয়োয় এই ধরনের ফিল্মি অবতারে ধরা দিলেন কিম।
উত্তর কোরিয়ার সমালোচকদের মতে, দেশে চলতি খাদ্য সঙ্কট বা ধুঁকতে থাকা অর্থনীতি থেকে দেশবাসী ও বিশ্বের নজর ঘোরাতে নতুন নতুন প্রচার কৌশল আনছেন কিম। তার জন্যে হলিউডি সিনেমার ধাঁচে সামরিক মহড়া ও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার একের পর এক ঝকঝকে ভিডিয়ো প্রকাশ করা হচ্ছে। যাতে উত্তর কোরিয়ার বাসিন্দাদের মনে শক্তিশালী কিম সাম্রাজ্যের ভিত আরও পোক্ত করা যায়। পাশাপাশি আমেরিকা ও এশিয়ায়
আমেরিকার মিত্রপক্ষকে সমঝে চলার বার্তাও দিতে চাইছে কিমের প্রশাসন। সেনা মহড়ার ভিডিয়োগুলোয় জাঁকজমক বাড়াতে ড্রোন ফুটেজ, নেপথ্য সঙ্গীত, সিনেম্যাটিক কায়দা ব্যবহার করা হচ্ছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার মতে, সেনাবাহিনীর প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে ভিডিয়োটি উত্তর কোরিয়ার সরকারি চ্যানেলে ২৪ মার্চ প্রকাশ করা হয়েছিল। তাতে সফল ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার দাবি করা হয়। ওই ভিডিয়ো প্রকাশের ঠিক আট দিনের মাথায় আর একটি আন্তর্মহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষায় ব্যর্থ হয় পিয়ংইয়্যাং। সোলের মতে, দু’টো ঘটনা মিলিয়ে-মিশিয়ে ‘সাফল্যের চমকদার ভিডিয়ো’ তৈরিতে ক্রমশ পারদর্শী হয়ে উঠছে উত্তর কোরিয়া। কিন্তু প্রযুক্তির কারিকুরি দিয়ে তৈরি করা ‘ফাঁকি’ যে বিশ্বের কাছে ধরা পড়ে যাচ্ছে সে খবর সম্ভবত কিমের রাজ্যে পৌঁছচ্ছে না।