ধর্ষণের ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় কঠোর ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে সরকার। ধর্ষণের সর্বোচ্চ সাজা যাবজ্জীবনের পরিবর্তে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে আগামীকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভায় এ সংক্রান্ত খসড়া প্রস্তাব উপস্থাপন করা হবে।
মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের পর চলতি সপ্তাহেই রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ জারি হতে পারে। আইন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বিদ্যমান নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০ সংশোধিত হচ্ছে। আইনের ৯(১) ধারায় যেখানে ধর্ষণের সাজা যাবজ্জীবন ছিল, সেখানে মৃত্যুদণ্ড যুক্ত করা হবে।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সমকালকে জানিয়েছেন, ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০ সংশোধন করে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করা হচ্ছে। সোমবার এই খসড়া প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় উঠবে। অপেক্ষা করেন। অনেক কিছু নিয়েই আমরা ভাবছি।’
এর আগে বৃহস্পতিবার আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ও জনদাবির পরিপ্রেক্ষিতে ধর্ষণ সংক্রান্ত শাস্তির বিধান সংশোধন করে মৃত্যুদণ্ড যুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে নারী নির্যাতন ও ধর্ষণের ঘটনা হঠাৎ করেই বেড়ে যায়। এর মধ্যে সিলেট এমসি কলেজ হোস্টেলে বর্বরোচিত সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এরপর গত ৪ অক্টোবর নোয়াখালীতে গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের এক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ওই ঘটনা জানাজানির পর ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে রাজধানীসহ সারাদেশে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। অধিকাংশ মহল থেকেই ধর্ষণকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রাখার দাবি জানানো হয়। সে প্রেক্ষাপটেই সরকার কঠোর এ সিদ্ধান্ত গ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছে।
বর্তমানে জাতীয় সংসদ অধিবেশন নেই। যে কারণে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে রাষ্ট্রপতি বরাবর বিল আকারে সারসংক্ষেপ (সামারি) পাঠানো হবে। এর আগেই সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। পরে তা প্রধানমন্ত্রী হয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে যাবে। রাষ্ট্রপতি ৯৩(১) অনুচ্ছেদের বলে অধ্যাদেশ জারি করবেন এবং তা আইনে রূপ নেবে। এরপর জাতীয় সংসদ অধিবেশন বসলেই প্রথম বৈঠকে এই অধ্যাদেশকে আনুষ্ঠানিক অনুমোদন দেওয়া হবে।