চ্যাম্পিয়নস লিগ বড় তারকাদের খেলা। রূপকথা লিখে সেমিফাইনালে আসা আরবি লাইপজিগকে হারানোর পর মন্তব্যটা করেন জার্মান কোচ। তারকা সমৃদ্ধ দল ধরলে পিএসজি এবং বায়ার্ন মিউনিখকে একে অপরের থেকে পিছিয়ে রাখার তেমন উপায় নেয়। যদিও অভিজ্ঞতায় এগিয়ে বাভারিয়ানরা।
পিএসজিতে আছেন বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে দামি দুই ফুটবলার নেইমার দি সিলভা জুনিয়র এবং কিলিয়ান এমবাপ্পে। পায়ের জাদুতে তারা বুদ করে রেখেছেন ফুটবল বিশ্ব। চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনাল জেতার যে চ্যালেঞ্জ নিয়ে নেইমার পিএসজিতে এসেছিলেন এখন তা বাস্তবে রূপ দেওয়ার পালা। তার সঙ্গে আছেন টগবগে রক্তের কিলিয়ান এমবাপ্পে। কোয়ার্টারে ইনজুরি থেকে ফেরা এই ফ্রান্সম্যান ফাইনালে নিজেকে উজাড় করে দেওয়ার মুডে থাকবেন। পিএসজি শিবিরে আরও আছেন ডি মারিয়ার মতো অভিজ্ঞ একজন।
বায়ার্ন মিউনিখও কম যায় না। চ্যাম্পিয়নস লিগ, বিশ্বকাপ জয়ের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন টমাস মুলার হতে পারেন দলটির বাজির ঘোড়া। দলের সাইলেন্ট কিলার তিনি। খুব আলো তার ওপর পড়ে না। কিন্তু ম্যাচ শেষে আলোটা তিনিই কেড়ে নেন। তরুণ সের্গি গিনাব্রির সঙ্গে আছেন চলতি মৌসুমে একাই নেইমার-এমবাপ্পের সমান গোল করা রবার্ট লেভানডভস্কি। আর ফিলিপে কুতিনহো, পেরিসিচ এবং কোম্যানের মতো তারকা তাদের দলে যোগ করবে বাড়তি মাত্রা।
দুই দলের রক্ষণ নিয়েও খুব বেশি প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই। তবে নেইমারদের বিপক্ষে বায়ার্ন মিউনিখের রক্ষণভাগের দিতে বেশি পরীক্ষা। বাভারিয়ানদের রক্ষণভাগের বিশেষ করে দুই উইঙ্গ ব্যাক আলাবা এবং আলফনসো ডেভিস উপরে উঠে খেলতে পছন্দ করেন। দুই উইঙ্গ দিয়ে আক্রমণ তুলতে সহায়তা করেন তারা। নেইমারদের বিপক্ষে ওই অভ্যাস বদলাতে না পারলে বিপদে পড়তে হবে জার্মান চ্যাম্পিয়নদের।
কারণ পিএসজির ভালো মতোই বায়ার্নের জাল চেনা। ইউরোপ সেরার লড়াইয়ে আটবার মুখোমুখি হয়ে পাঁচটিতে জয় পিএসজির। এর মধ্যে ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়নস লিগ আসরে বায়ার্নের মুখোমুখি হয়ে নিজেদের শক্তি বুঝিয়েছে পিএসজি। দুই লেগে অ্যাওয়ে ম্যাচে হেরেছে দু’দলই। তবে নেইমার-এমবাপ্পেকে থামানো কতো কঠিন সেটা ভালো মতোই জানা আছে বাভারিয়ানদের। ২০১৭ সালে গ্রুপ পর্বের প্রথম দেখায় তাদের ৩-০ গোলে ধসিয়ে দিয়েছিল নেইমার-এমবাপ্পের নতুন জুটি।
ওই ম্যাচে গোল করেছিলেন দানি আলভেজ, এডিনসন কাভানি এবং নেইমার। ব্রাজিল ফরোয়ার্ড নেইমার চোখ ধাঁধানো পারফরম্যান্স দেখিয়েছিলেন। মনে হচ্ছিল প্রথম মৌসুমেই চ্যাম্পিয়নস লিগে বাজিমাত করবে নেইমার-এমবাপ্পে জুটি। কিন্তু নেইমারের ইনজুরি সেবার আশাহত করেছিল পিএসজিকে। ওই ম্যাচে গোল না করলেও এমবাপ্পে বুঝিয়েছিলেন তিনি বিশ্ব ফুটবল কাঁপাতে আসছেন। পরের লেগে পিএসজি হারে ৩-১ গোলে। ওই ম্যাচে এমবাপ্পে গোল করেন। ভালোও খেলেই হারে প্যারিসের ক্লাবটি।
বায়ার্নের বিপক্ষে নেইমার তার জাদু ২০১৫ সালেও দেখিয়েছেন বার্সার হয়ে। সেবার সেমিফাইনালে দুই লেগ মিলিয়ে ৫-৩ গোলে জিতেছিল বার্সেলোনা। দুই লেগে নেইমার করেন তিন গোল। এছাড়া পুরো মাঠ দাপিয়ে বেড়ানো নেইমার গোলে সহায়তাও দেন। বার্সার হয়ে এবং পিএসজির হয়ে তাই বায়ার্নের গোলের জাল চেনা আছে নেইমারদের। কোয়ার্টার-সেমিফাইনালে গোল মিস করা নেইমারের ফাইনালে সেটা প্রমাণের পালা।