শর্ত মানতে নারাজ হামাস, কঠোর অবস্থানে ট্রাম্প : অনিশ্চয়তায় গাজার ভবিষ্যৎ!
বিশেষ সম্পাদকীয়
সুজন কৃষ্ণ হালদার
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাবে সম্মত ইসরায়েল। দু, সপ্তাহ আগের কথা বলছি। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে সেই প্রস্তাব পাঠানো হয় হামাসের কাছে। কঠিন কিছু শর্তের আড়ালে হামাস কার্যত জানিয়ে দেয়, তারা যুদ্ধ বিরতির চুক্তিতে রাজি না। হামাসের এমন অবস্থানে বেঁকে বসেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
বৃহস্পতিবার সকালে হামাস জানিয়েছিল, তারা ইজ়রায়েলের দেওয়া যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব মানতে রাজি। তবে তাদেরও কিছু শর্ত রয়েছে। সীমান্তে ইজ়রায়েলি সেনার আধিপত্য কমাতে হবে এবং বন্দিদের মুক্তির বিনিময়ে ইজ়রায়েল কত জন বন্দিকে মুক্তি দেবে, তা স্পষ্ট করতে হবে!
তেল আভিভের স্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রতিশ্রুতি ছাড়া একতরফা ভাবে সমস্ত ইজ়রায়েলি পণপন্দিকে মুক্তি দিতে নারাজ হয় তারা। এই পরিস্থিতিতে পশ্চিম এশিয়ায় ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ জানান, ওয়াশিংটন যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতার উদ্যোগ থেকে সরে এসেছে।
তিনি বলেন, ‘‘আমরা এখন পণবন্দিদের বাড়িতে ফিরিয়ে আনার জন্য বিকল্প ব্যবস্থা বিবেচনা করব। শুধু তা-ই নয়, গাজ়াবাসীর জন্য স্থিতিশীল পরিবেশ তৈরির চেষ্টাও করব আমরা।’’
এই পরিস্থিতিতে ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সরকারকে দ্রুত ‘গাজ়া পরিষ্কার করার কাজ’ শেষ করার বার্তা দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্পের মন্তব্য, ‘‘হামাস আসলে কোনও চুক্তি করতে চায় না। আমার মনে হয় তারা মরতেই চাইছে।’’
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, হামাসের কৌশলগত অবস্থান স্পষ্ট প্রমাণ করে , তারা যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাবে রাজি না।
বিদ্যমান বাস্তবতায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েলের অবস্থান যদি কঠোর থেকে কঠোরতর হয় সে ক্ষেত্রে যুদ্ধ অনিবার্য।
প্রশ্ন দেখা দিয়েছে গাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গাঁজার নিরীহ মানুষের নিরাপত্তার কথা বললেও তা কতটা রক্ষা করা সম্ভব হবে, তা এই মুহূর্তে বলাটা অসম্ভব।
ইসরায়েল যদি নতুন ভাবে আক্রমণ শুরু করে সেক্ষেত্রে গাজার সাধারণ মানুষের প্রাণহানি এবং ক্ষয়ক্ষতির শঙ্কা থেকেই যায়।
কথা হচ্ছে সংকট উত্তরণের উপায় কি? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বৃটেনের একজন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক ভিশন নিউজ. ২৪কে জানান, হামাস যদি তাদের কঠিন শর্ত থেকে সরে আসে, একইসঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আলোচনার উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করে ; কেবলমাত্র তখনই বাস্তবিক অর্থের যুদ্ধ বিরতি চুক্তি কার্যকর করা সম্ভব। গাজাবাসীর সুরক্ষায় এর কোন বিকল্প নেই বলে অভিমত প্রকাশ করেন ওই আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক।
২০২৩ সালের অক্টোবরে দক্ষিণ ইজ়রায়েলে হামলা চালিয়েছিল হামাস। প্রায় ১২০০ জনের প্রাণ গিয়েছিল। বন্দি করা হয়েছিল আড়াইশো জনকে। এখনও ৫০ জনের মতো ইজ়রায়েলি নাগরিক হামাসের হাতে বন্দি।