নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে দু’টি মসজিদে হামলায় ব্রেনটন টারান্ট (২৮) একাই জড়িত বলে জানিয়েছে দেশটির পুলিশ। রোববার বিবিসি অনলাইনের এক সংবাদে এই তথ্য জানানো হয়।
দেশটির পুলিশ কমিশনার মাইক বুশ বলেন, অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক ব্রেনটন টারান্ট একাই দুটি হামলা চালিয়েছেন। ব্রেনটন ছাড়া আটক অন্যদের হামলার সঙ্গে সম্পৃক্ততা নেই বলে মনে করা হচ্ছে। তবে এটা পুলিশের চূড়ান্ত মতামত নয়।
গত শুক্রবার নিউ জিল্যান্ডের ইতিহাসে সবচেয়ে নৃশংস সন্ত্রাসী হামলায় ৫০ জন নিহত ও অপর ৫০ জন আহত হয়। অস্ট্রেলীয় নাগরিক ২৮ বছর বয়সী ব্রেনটন ট্যারান্ট নামে স্বঘোষিত এক শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদী হামলার দৃশ্য সরাসরি ফেসবুকে সম্প্রচার করে। ওই ভিডিওতে তাকে নিজের বন্দুক দিয়ে নির্বিচারে গুলি ছুড়তে দেখা যায়। ঘটনার পরই তাকেসহ চারজনকে আটকের কথা জানায় দেশটির পুলিশ।
শনিবার ব্রেনটনকে হত্যার দায়ে অভিযুক্ত করে ক্রাইস্টচার্চ আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় আদালত তার রিমান্ড মঞ্জুর করেন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে একজনের নাম উল্লেখ করে ব্রেনটনের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। এছাড়া আরও কয়েকটি অভিযোগ আনার প্রস্তুতি চলছে।
আল নূর ও লিনউড মসজিদে হামলায় হতাহত ব্যক্তিদের পরিচয় নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষ দ্রুততার সঙ্গে কাজ করছে জানিয়ে পুলিশ কমিশনার মাইক বুশ বলেন, এটি খুবই সংবেদনশীল প্রক্রিয়া। এক্ষেত্রে আমাদের সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় ব্যাপারেও সতর্ক থাকতে হচ্ছে।
পুলিশ কমিশনার জানান, ব্রেনটনকে সরাসরি হুমকি মনে করে সাহসিকতার সঙ্গে আটক করে পুলিশ। সে যাতে আরও হামলার ঘটনা ঘটাতে না পারে, সেজন্য তারা জীবন ঝুঁকি নিয়ে তাকে ঠেকিয়েছে। এর মাধ্যমে আরও হামলা প্রতিরোধ করা গেছে।
মাইক বুশ আরও বলেন, হামলার ঘটনায় শুধু একজনের (ব্রেনটন) বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। ঘটনাস্থলের কাছাকাছি স্থান থেকে আটক দুজন এ ঘটনায় জড়িত নন বলে মনে করা হচ্ছে। আটক এক নারীকে কোনো অভিযোগ ছাড়াই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ১৮ বছর বয়সী এক তরুণের বিরুদ্ধে অস্ত্রবিরোধী মামলায় অভিযোগ আনা হয়েছে। ওই তরুণকে আগামীকাল সোমবার আদালতে হাজির করা হতে পারে। তাদের কারও বিরুদ্ধে এর আগে কোনো অপরাধমূলক কাজে জড়িত থাকার তথ্য নেই।
এদিকে রোববার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আর্ডেন। হামলার ঘটনাসহ দেশের অস্ত্র আইন সংস্কারের জন্য সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠক ডাকা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, সেখানে আমাদের দেশের অস্ত্র আইন পরিবর্তন করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী জানান, বৈঠকে দুই মসজিদে সন্ত্রাসী হামলায় হতাহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হবে। নিহত সবার মরদেহ বুধবার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের ফেসবুকের মতো সামাজিক মাধ্যমগুলোর ভূমিকা সম্পর্কে আরও কিছু প্রশ্নের উত্তর জানতে হবে, যা হামলার লাইভ ফুটেজ সম্প্রচারের জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল। এই সামাজিক মাধ্যমের প্ল্যাটফর্মগুলো বিস্তৃতি রয়েছে, এবং এটি একটি সমস্যা যার মাধ্যমে ভিডিও নিউজিল্যান্ডের বাইরে ছড়িয়ে যায়।