The news is by your side.

আদালতে ফাঁসির দাবিতে স্লোগান, কাঠগড়ায় কাঁদলেন দীপু মনি

0 121

আওয়ামী লীগ টানা চার দফায় ক্ষমতায় থাকাকালে তিন বারই ছিলেন মন্ত্রী। দলেরও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। সদ্য সাবেক সরকারের সমাজ কল্যাণ মন্ত্রী দীপু মনি এবার গ্রেফতার হয়েছেন একটি হত্যা মামলায়। আদালত তার চার দিনের রিমান্ডও মঞ্জুর করেছে। রিমান্ড আবেদনের শুনানিকালে তিনি আদালতে কান্নায় ভেঙে পড়েন। এ সময় বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা তার ফাঁসির দাবিতে স্লোগান দেন। এতে আরও ভেঙে পড়েন সাবেক প্রভাবশালী এই মন্ত্রী।

মোহাম্মদপুর থানায় দায়ের হওয়া মুদি দোকানি আবু সায়েদ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে মঙ্গলবার আদালতে হাজির করা হয় দীপু মনি ও জয়কে। তাদের ১০ দিন করে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক তোফাজ্জল হোসেন।

ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম সুলতান সোহাগ উদ্দিন শুনানি শেষে দীপু মনিকে চার দিন এবং জয়কে পাঁচ দিন হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন।

বিকেল ৩টা ২৫ মিনিটের দিকে একটি সাদা রঙের মাইক্রোবাসে আদালতে আনা হয় তিনবারের সাবেক মন্ত্রী ডা. দীপু মনি এবং সাবেক যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়কে।

আদালত প্রাঙ্গণে তাদের উপস্থিতি দেখে স্লোগান দিতে থাকেন আইনজীবীরা। তারা বলতে থাকেন, ‘দীপু মনির দুই গালে জুতা মারো তালে তালে’। যখন সিএমএম আদালতের গেট দিয়ে তাদের বহন করা গাড়ি প্রবেশ করে, তখন এক ব্যক্তি সড়কে শুয়ে পড়েন। তিনি দীপু মনির ফাঁসির দাবি জানান। পরে সেখান থেকে তাকে তুলে দেয় পুলিশ সদস্যরা। এ সময় কেউ কেউ গাড়িতে আঘাত করছিলেন। তাদের সরিয়ে একসময় দুই আসামিকে ভিড় ঠেলে আদালতের হাজতখানায় নেওয়া হয়।

বেলা পৌনে ৪টার দিকে দীপু মনি ও জয়কে সিএমএম আদালতের দ্বিতীয় তলার একটি এজলাসে ওঠানো হয়। এ সময় আসামিদের মাথায় হেলমেট ও পরনে বুলেট প্রুফ জ্যাকেট ছিল। দ্বিতীয় তলায় ওঠানোর সময় আইনজীবীরা পুলিশের নিরাপত্তার মধ্যে দীপু মনি ও জয়কে মারধরের চেষ্টা করেন। তখন কয়েকটি চড়-থাপ্পড় লাগে জয়ের শরীরে।

সেখানে আইনজীবীরা স্লোগান দিতে থাকেন, ‘ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই, দীপু মনির ফাঁসি চাই’। হট্টগোলের মধ্যেই দুই আসামিকে আদালতের দ্বিতীয় তলার ২৮ নম্বর এজলাসের কাঠগড়ায় ওঠানো হয়।

কাঠগড়ায় জয় সামনে দিকে মুখ করে থাকলেও দীপু মনি উত্তরে মুখ করে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময় কাঁদতে দেখা যায় দীপু মনিকে। তবে জয় চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিলেন।

বিচারক ৫ মিনিটের মধ্যেই এজলাসে ওঠেন। কিন্তু তখনও এজলাস কক্ষে হৈ চৈ চলছিল।ক্লান্ত দীপু মনি আদালতে এসে পুলিশ সদস্যদের কাছে পানি চান। তবে আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়ে যাওয়ায় তাকে আর পানি খেতে দেওয়া হয়নি।

আদালতে থাকা বিএনপিপন্থী আইনজীবী ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি মহসিন মিয়া, ইকবাল হোসেন এবং সাবেক সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক ফারুকী আইনজীবীদের থামানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু তাতে কোনো ফলাফল না হওয়ার পর ওই অবস্থায়ই শুনানি শুরু হয়। রাষ্ট্রপক্ষে পরিদর্শক আসাদুজ্জামান তদন্ত কর্মকর্তার আবেদন অনুযায়ী ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। ওই সময় আসামিদের হাতে হাতাকড়া নেই কেন—এ প্রশ্ন তোলেন আইনজীবীরা। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, জয়ের হাতে হাতকড়া আছে এবং নারী হওয়ায় দীপু মনিকে হাতকড়া পরানো হয়নি।

আদালতে শুনানিকালেও দীপু মনির কান্না থামেনি। এসময় জয় কিছু বলতে চান। তবে আদালত কথা বলার অনুমতি দেননি।

রিমান্ড আবেদনে তদন্তকারী কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, ‘ভিকটিমকে হত্যার ঘটনার বিষয়ে এ দুই আসামি জ্ঞাত আছেন মর্মে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। মামলার ভিকটিমকে হত্যায় হুকুমদাতা, উসকানিদাতাদের নামসহ মামলার ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটন এবং মামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত অপরাপর আসামির নাম ঠিকানা সংগ্রহ করার জন্য তাদের রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন। মামলার সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে এবং মামলার মূল রহস্য উৎঘাটন, এজাহারে বর্ণিত সহিংস ঘটনার বিষয়ে এবং মামলার ভিকটিমকে হত্যাকারী, হত্যার হুকুম দানকারী, উসকানিদানকারী ব্যক্তি ও ব্যক্তিদের নাম ও ওই ঘটনায় সরাসরি জড়িত আসামিদের নাম ও ঠিকানা সংগ্রহ এবং গ্রেফতারের নিমিত্তে ডা. দীপু মনি (৫১) এবং আরিফ খান জয়কে (৫৩) দশ দিনের পুলিশ রিমান্ডের আদেশদানে আদালতের সদয় মর্জি হয়।’

এর আগে গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর বারিধারা থেকে ডা. দীপু মনিকে গ্রেফতার করা হয়। অন্যদিকে ধানমন্ডি এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয় আরিফ খান জয়কে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.