The news is by your side.

বস্তায় ঘুষের টাকা নিতেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

0 118

সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বস্তায় করে ঘুষ নিতেন। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসে নিয়োগ দিতেন তিনি বস্তা ভর্তি টাকা ঘুষ নিয়ে। শুধু তার বিরুদ্ধেই নয়, এমন অভিযোগ উঠেছে তার পাঁচ সহযোগীর বিরুদ্ধেও।

এমন গুরুতর অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) সংস্থাটির উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলমের নেতৃত্বে একটি অনুসন্ধান টিম গঠন করা হয়েছে।টিমের অন্য সদস্যরা হলেন– দুদক উপপরিচালক মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীন, সহকারী পরিচালক আবুল কালাম আজাদ, নাছরুল্লাহ হোসাইন ও মোহাম্মদ জিন্নাতুল ইসলাম।

দুদকের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) মো. আকতারুল ইসলাম এসব তথ্য জানিয়েছেন।

আসাদুজ্জামান খান ছাড়াও যাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে তারা হলেন- মন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব (পিএস) ও অতিরিক্ত সচিব ড. হারুন অর রশিদ বিশ্বাস, যুগ্ম সচিব ধনঞ্জয় কুমার দাস, প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোল্লা ইব্রাহিম হোসেন, সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) মনির হোসেন ও জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফ মাহমুদ অপু।
দুদক সূত্র জানায়, সাবেক ওই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই ঘুষ হিসেবে বস্তা বস্তা টাকা নিতেন। পুলিশ, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও ফায়ার সার্ভিস থেকে ওই টাকা আদায় করা হতো। এজন্য তৎকালীন অতিরিক্ত সচিব ড. হারুন অর রশীদ বিশ্বাসের নেতৃত্বে সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন। এই সিন্ডিকেটের অন্য সদস্য হলেন– যুগ্মসচিব ধনঞ্জয় কুমার দাস, মন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) মনির হোসেন, জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফ মাহমুদ অপু এবং প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোল্লা ইব্রাহিম হোসেন।
ঘুষের টাকা আদায় বা উত্তোলনে মূল ভূমিকা পালন করতেন ড. হারুন। হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে কামাল-হারুন সিন্ডিকেট। এক পর্যায়ে হারুন অবসরে গেলেও মন্ত্রণালয়ের সব ঘুষ, দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ করতেন তিনি। ঝুঁকি এড়াতে টাকাগুলো দেশের বাইরে পাচার করা হয়েছে। 
সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকে দেওয়া অভিযোগে বলা হয়, জেলায় পুলিশ সুপার নিয়োগে ৮০ লাখ থেকে ২ কোটি টাকা পর্যন্ত নেওয়া হতো। এই চক্রের আশীর্বাদ ছাড়া পুলিশের কারও কোনো জেলায় বা গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়ন সম্ভব ছিল না। জেলা পুলিশ সুপার হিসেবে পদায়নের ক্ষেত্রে ১ থেকে ৩ কোটি টাকা নিত এই সিন্ডিকেট।
এ ছাড়া ফায়ার সার্ভিস এবং সিভিল ডিফেন্সে কোনো সার্কুলার হলে নিয়োগের জন্য মন্ত্রীর দপ্তর থেকে তালিকা পাঠানো হতো। ২০২৩ সালে ফায়ার সার্ভিসে ৫৩৫ জনকে নিয়োগে মন্ত্রীর দপ্তর থেকে ২৫০ জনের তালিকা পাঠানো হয়। এসব নিয়োগে জনপ্রতি ৮ থেকে ১২ লাখ টাকা ঘুষ নেয় কামাল-হারুন সিন্ডিকেট।

এ ছাড়া এনজিওর ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেট’ বা ‘এনওসি’ দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রতি সংস্থা থেকে ৮০ লাখ থেকে ১ কোটি টাকা দিতে হতো আসাদুজ্জামানকে। ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে রাজধানীর উত্তরার একটি উন্নয়ন সংস্থাকে এনওসি দিতে মন্ত্রীকে ৮৫ লাখ টাকা দেওয়া হয়।

অভিযোগ রয়েছে, শুধু নিয়োগ, পদোন্নতি, বদলিতেই নয়, আলোচিত মানি লন্ডারিং মামলার চার্জশিট থেকে নাম বাদ দিতে হারুন সিন্ডিকেট কোটি কোটি টাকা গ্রহণ করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

এদিকে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গত ৫ আগস্ট থেকে পলাতক রয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। তিনি কোথায় আত্মগোপন করেছেন এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে তাকে ধরতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ইতোমধ্যে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামালের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতা হত্যাকা-ের ঘটনায় মামলা হয়েছে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.