কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্রের আমুর দায়িত্বে আসায় স্বাগত জানিয়েছেন শরিক দলের নেতারা।
তাদের প্রত্যাশা মোহাম্মদ নাসিমের মতো তিনিও যোগ্য নেতৃত্ব দিয়ে জোটকে সামনের দিকে এগিয়ে নেবেন। তার নেতৃত্বে জোটের কার্যক্রমে গতি ফিরবে। তবে করোনাভাইরাস সংকটকালে আওয়ামী লীগের অভিজ্ঞ নেতা আমুকে বড় চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হবে। একদিকে তাকে আওয়ামী লীগ ও শরিকদের মধ্যকার দূরত্ব ঘুচাতে হবে। অন্যদিকে সময় উপযোগী কর্মসূচি দিয়ে জোটের ঐক্য ধরে রাখতে হবে।
আমির হোসেন আমু বুধবার বলেন, ১৪ দলের আন্দোলন-সংগ্রামে সব সময় সঙ্গে ছিলাম। নেত্রী (আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা) ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্রের দায়িত্ব দেয়ায় আমি তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।
তিনি বলেন, মোহাম্মদ নাসিম অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে ১৪ দলকে পরিচালিত করেছেন। নানা কর্মসূচি দিয়ে সবসময় শরিক দলগুলোকে তিনি সক্রিয় রেখেছিলেন। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা প্রসঙ্গে আমু বলেন, শেখ হাসিনার নির্দেশে শরিক দলগুলোর সঙ্গে সুন্দর সম্পর্ক বজায় রেখে প্রাসঙ্গিক কর্মসূচি দেব। করোনাকালেও জনকল্যাণকর কর্মসূচি দিয়ে মানুষের পাশে থাকব। দায়িত্ব পাওয়ার পর আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা কোনো নির্দেশ দিয়েছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, না, পাইনি। তবে সময় হলে বা প্রয়োজন মনে করলে তিনি অবশ্যই নির্দেশনা দেবেন।
বুধবার দুপুরে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানান, ১৪ দলের শরিক দলের নেতাদের সম্মতিক্রমে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা প্রবীণ নেতা আমির হোসেন আমুকে ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্রের দায়িত্ব দিয়েছেন। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের অভিজ্ঞতা, দক্ষতা ও প্রজ্ঞা দিয়ে প্রবীণ নেতা আমু ১৪ দলের সমন্বয়কের দায়িত্ব পালনে যথাযথ ভূমিকা রাখবেন বলে নেত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
জানা গেছে, মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুর পর ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র খোঁজার কাজ শুরু করে আওয়ামী লীগ। ১৪ দলের শরিক দলগুলোর সঙ্গে এ বিষয়ে ওবায়দুল কাদের আলাপ-আলোচনা করেন। আমুর বিষয়ে কারও আপত্তি না থাকায় তাকে মুখপাত্র করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। আনুষ্ঠানিক ঘোষণার পর তাকে স্বাগত জানিয়েছেন ১৪ দলের শরিক দলের নেতারা। শরিক দলের কেউ কেউ তাকে অভিনন্দনও জানিয়েছেন।
জাতীয় পার্টির (জেপি) সাধারণ সম্পাদক শেখ শহীদুল ইসলাম বুধবার বিকেলে বলেন, আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আমাদের কাছ থেকে মতমত নেয়া হয়েছে। আমরা মনে করি, আমির হোসেন আমু একজন অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ। মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুতে ১৪ দলে যে শূন্যতা তৈরি হয়েছিল, আশা করি তিনি (আমু) সেই শূন্যতা পূরণ করতে সক্ষম হবেন।
ন্যাপের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন বলেন, আমু প্রবীণ রাজনীতিবিদ। তার অনেক অভিজ্ঞতা রয়েছে। ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন ও সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা বিবৃতিতে আমুকে স্বাগত ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। আমু ষাটের দশকের সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, স্বৈরাচারবিরোধী সংগ্রাম ও বিএনপি-জামায়াত জোটের বিরুদ্ধে ১৪ দলের আন্দোলনে দৃঢ় ভূমিকা রেখেছেন। ১৪ দলকে আরও কার্যকর ভূমিকায় তিনি এগিয়ে নেবেন বলেও তারা আশা প্রকাশ করেন।
বিভিন্ন সংগঠনের অভিনন্দন : আমির হোসেন আমু ১৪ দলের মুখপাত্র হওয়ায় অভিনন্দন জানিয়েছেন ঝালকাঠি জেলা আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা। ঝালকাঠি-২ আসনের সংসদ সদস্য আমুকে অভিনন্দন জানান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সরদার মো. শাহ আলম, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খান সাইফুল্লাহ পনির, পৌর মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. লিয়াকত আলী তালুকদার, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান খান আরিফুর রহমান, নলছিটি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র তছলিম উদ্দিন চৌধুরী প্রমুখ।