জান্নাতুল ফেরদৌস
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী বলেছেন, বাংলাদেশের জলবায়ু কর্ম পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য ৮৭৬ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
শনিবার (০১ জুন) সাভারের ব্র্যাক সিডিএমে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ আয়োজিত ‘ক্লাইমেট ফাইন্যান্স এক্সেস অ্যান্ড মোবিলাইজেশন ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক তিন দিনব্যাপী কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন শুধুমাত্র একটি পরিবেশগত বিষয় নয়; এটি একটি অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং উন্নয়নমূলক বিষয় যা আমাদের সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রকে প্রভাবিত করে। জলবায়ু অর্থায়ন সংগ্রহ আমাদের নিম্ন-কার্বন, জলবায়ু-সহনশীল অর্থনীতিতে রূপান্তরকে সমর্থন করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টিকে নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রেক্ষাপটে দেখি। এখানে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পরিবেশ, বন সবকিছুই এর সাথে জড়িত। পরিবর্তনের সমাধানটা সবকিছুকে নিয়েই করতে হবে।
তিনি বলেন, ২০৪০ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে ৪০ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা আমরা গ্রহণ করেছি। এখন সেটা সাড়ে চার শতাংশের মধ্যে রয়েছে।বাংলাদেশের কার্বন নি:সরণের মাত্রা ১ শতাংশেরও কম, তারপরও নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বেশ কিছু কারণ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। প্রথমত এর খরচ অনেক কম। দ্বিতীয়ত, এখানে কর্মসংস্থানের অনেক সুযোগ রয়েছে। তাছাড়া প্রযুক্তিগত দিক থেকেও আমাদের সুবিধা রয়েছে।
সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, আমাদের অনেক চ্যালেঞ্জ আছে, সেগুলো বিভিন্নভাবে মোকাবেলা করা সম্ভব। কৃষিতে যেসব সেচপাম্প ব্যবহার করা হয়, সেগুলো সোলার পাম্পে রুপান্তরিত করা যেতে পারে। এছাড়া ভাসমান সৌরবিদ্যুৎ নিয়েও কাজ করা যেতে পারে।
তিনি বলেন, আমাদের বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ, আন্তর্জাতিক জলবায়ু তহবিল এবং উদ্ভাবনী অর্থায়ন ব্যবস্থাকে কাজে লাগাতে হবে। আমাদের শক্তিশালী প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো গড়ে তুলতে হবে এবং জলবায়ু অর্থায়নে প্রবেশাধিকার, ব্যবস্থাপনা ও ব্যবহার কার্যকর করার জন্য আমাদের প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, উন্নত দেশগুলোর নৈতিক এবং আইনগত দায়িত্ব রয়েছে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে তাদের জলবায়ু কর্মে সহায়তা করার। আমরা আমাদের আন্তর্জাতিক অংশীদারদের তাদের প্রতিশ্রুতিগুলো সম্মান করতে এবং পর্যাপ্ত আর্থিক সহায়তা করার আহ্বান জানাই।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী, সুইডেনের দূতাবাসের উন্নয়ন সহযোগিতার উপ-প্রধান নায়োকা মার্টিনেজ-ব্যাকস্ট্রোম, ব্রিটিশ হাই কমিশনের ডেপুটি হাই কমিশনার এবং উন্নয়ন পরিচালক ম্যাট ক্যানেল, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিন্টিং এবং জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির বাংলাদেশের প্রতিনিধি স্টেফান লিলারও অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।