মেট্রোরেলের ভাড়ায় ভ্যাট না বসাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অনুরোধ করেছেন বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, মেট্রোরেল অনেক জনপ্রিয় গণপরিবহন। একে আরও জনপ্রিয় করতে চাই। এ অবস্থায় ১৫ শতাংশ ভ্যাট বসানোর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পুনঃবিবেচনা করতে অনুরোধ জানিয়েছি।
আজ রোববার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত ‘ব্র্যান্ডিং সেমিনার অন ঢাকা মেট্রোরেল’ অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
পৃথিবীর কোন দেশে মেট্রোরেলে ১৫ শতাংশ ভ্যাট রয়েছে—এমন প্রশ্ন তুলে মন্ত্রী বলেন, ‘ভারতের মেট্রোরেলেও ভ্যাট নেই। তাহলে আমরা কেন ১৫ শতাংশ ভ্যাট বসাব?’ তিনি আরও বলেন, ‘মেট্রোরেল আমাদের সম্পদ। ২০৩০ সালে ছয়টি এমআরটি লাইনের কাজ শেষ হবে। এগুলোর মধ্যে দুটিই পাতালরেল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যে পরিকল্পনা, ঢাকা সেটারই অবিচ্ছেদ্য অংশ।’
এ সময় রাজধানীতে চলাচল করা বাসগুলোর গরীব চেহারা দেখলে লজ্জা লাগে বলে মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, এত গরীব গরীব চেহারা আমাদের বাসের। আফ্রিকার ছোট ছোট শহরেও এর চেয়ে ভালো বাস চলে।
সেতুমন্ত্রী বলেন, এই শহরে এত দামী গাড়ি চলে। কিন্তু বাসের অবস্থা এত খারাপ কেন? বারবার কথাবার্তা বলেও সমাধান করা যায়নি। এই অবস্থা থেকে আমাদের মুক্তি পেতেই হবে। ঢাকায় যে বাসগুলো চলে তা দেখলে ভীষণ খারাপ লাগে। এগুলো দেখলে কেমন লাগে। এটা দেখলে আমার লজ্জা লাগে। আমাদের মালিক সাহেবরা কি বিদেশ যান না, দেখেন না!
তিনি বলেন, যে বাংলাদেশ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়নের বিস্ময়, সে দেশের রাজধানী পৃথিবীর অন্যতম খারাপ রাজধানী। বসবাসযোগ্য ১৪০টি দেশের মধ্যে ১৩০-এর পরে আমাদের অবস্থান। এটা দেশের উন্নয়নের সঙ্গে মেলে না।
ব্র্যান্ডিং সেমিনারে অতিথিদের আমন্ত্রণ নিয়ে সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সামনে যাঁরা বসে আছেন, তাঁরা বেশির ভাগই আমাদের মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা। কিন্তু যাঁদের কাছে ব্র্যান্ডিংয়ের দরকার, তাঁরা নেই। তিন লাখ যাত্রী প্রতিদিন উত্তরা থেকে মতিঝিল আসছেন। মতিঝিল থেকে উত্তরা যাচ্ছেন। এখানে তাঁদের কাউকে রাখা দরকার ছিল।’
মেট্রোরেলের ওপর ভ্যাট বসানোর সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার অনুরোধ জানিয়েছেন ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিক। তিনি বলেন, ‘১৫ শতাংশ ভ্যাট ধরা হলে ডিএমটিসিএলের ওপর চাপ বাড়বে। তখন এটা যাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করতে হবে।’
এম এ এন সিদ্দিক আরও বলেন, ‘এর আগে মেট্রোরেলে ভ্যাট বসানো হয়েছিল। তখন কথা বলে জুন পর্যন্ত স্থগিত রাখা হয়। এখন সেটা আবার ১ জুলাই থেকে কার্যকরের কথা বলা হচ্ছে। যদি ভ্যাট দিতে হয়, তাহলে এটি যাত্রীর দিতে হবে। তাই এটি রিভিউ করার জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি।’
মেট্রোরেল চালু করার পর থেকে এ পর্যন্ত বিদ্যুতের দাম তিনবার বেড়েছে। কিন্তু মেট্রোরেলের ভাড়া বাড়ানো হয়নি। এখন ভ্যাট যুক্ত হলে ভ্যাটের টাকা যাত্রীদের দিতে হবে। মেট্রোরেলের পক্ষে সেটি বহন করা সম্ভব নয়। ফলে মেট্রোরেলের ভাড়া বেড়ে যাবে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়।