পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে শুক্রবার পৃথকভাবে বিবৃতি দিয়েছে যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।
বিবৃতিতে নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে উদ্বেগ জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে নির্বাচনে অনিয়মের যেসব অভিযোগ সামনে এসেছে, তা তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে এসব দেশ ও জোট।
নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বর্তমানে কারাগারে থাকা ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) এবং আরেক সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) মধ্যে।
আইনি প্রতিবন্ধকতার কারণে পিটিআই-সমর্থিত প্রার্থীরা স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। তবে ভোটের ফলে দুদলই নিজেদের বিজয়ী দাবি করেছে।
পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে ২৬৬ আসনে সরাসরি ভোট হয়। নির্বাচনের আগে দুর্বৃত্তের গুলিতে একজন প্রার্থী নিহত হওয়ায় একটি আসনে ভোট স্থগিত করা হয়েছিল আগেই। তাই এবার ভোট হয়েছে ২৬৫ আসনে। এককভাবে সরকার গঠন করতে চাইলে কোনো দলকে ১৩৪টি আসনে জিততে হবে।
শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৫০ আসনের ফল ঘোষণা করেছে পাকিস্তান নির্বাচন কমিশন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৯৯ আসনে জয় পেয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। তাদের বেশির ভাগই পিটিআইয়ের সমর্থন নিয়ে নির্বাচনে লড়েছেন।
এর পর নওয়াজের পিএমএল-এন ৭১, বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) ৫৩ এবং এমকিউএম ১৭ আসনে জয়ী হয়েছে। এ ছাড়া অন্যান্য দল পেয়েছে ১০টি আসন।
এবারের নির্বাচনে হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুলেছে যুক্তরাজ্য ও ইইউ।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নির্বাচনে অধিকারকর্মীদের আটক করা হয়েছে। সেই সঙ্গে অনিয়ম, হস্তক্ষেপ ও জালিয়াতির যেসব অভিযোগ উঠেছে, তার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করতে হবে।
ইমরান খান ও তার দল মনে করে, এবারের নির্বাচনের আগে পাকিস্তানের শক্তিশালী সেনাবাহিনী তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। সেনাবাহিনী সমর্থন জুগিয়েছে নওয়াজ শরিফকে।
বিবৃতিতে ইইউ জানিয়েছে, নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দলের জন্য সমান সুযোগ (লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড) ছিল না। সেই সঙ্গে সমাবেশের স্বাধীনতা ও বাক্স্বাধীনতার ঘাটতি দেখা গেছে। ইন্টারনেট ব্যবহারে প্রতিবন্ধকতার কথাও বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে ইইউ।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বাক্স্বাধীনতা ও সমাবেশের স্বাধীনতার ওপর অযৌক্তিক বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল। একই সঙ্গে সহিংসতা ও সংবাদকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনাও দেখা গেছে।
অন্যদিকে বিবৃতিতে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন বলেছেন, পাকিস্তানের নির্বাচনে স্বচ্ছতা ও অন্তর্ভুক্তির অভাব নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইইউ পাকিস্তানের পরবর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করার অভিপ্রায়ের কথা জানিয়েছে। যদিও কেউই এখন পর্যন্ত কোনো প্রার্থী কিংবা দলকে অভিনন্দন জানায়নি।