সিরিয়া ও ইরাকে ইরানি লক্ষ্যবস্তুতে হামলার পরিকল্পনার অনুমোদনের একদিন পরেই তার কার্যকর করল যুক্তরাষ্ট্র। শনিবার বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিরিয়া ও ইরাকে ৮৫ এর বেশি ইরানি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে মার্কিন বাহিনী।
হামলায় বিভিন্ন ধরনের মার্কিন যুদ্ধবিমান অংশ নেয়। যার মধ্যে দীর্ঘ পাল্লার বোমারু বিমানও ছিল। সাতটি জায়গায় এসব হামলা চালানো হয়েছে। এরমধ্যে সিরিয়ায় চারটি জায়গায় এবং ইরাকে তিনটি জায়গায়। দেশ দুইটিতে ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের (আইআরজিসি) এলিট বাহিনী কুদস ফোর্স এবং তাদের সমর্থিত বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীর স্থাপনায় লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয়েছে।
যেসব লক্ষ্যবস্তুতে হামলা হয়েছে তার মধ্যে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর কমান্ড ও নিয়ন্ত্রণকেন্দ্র, সামরিক রসদভান্ডার এবং ড্রোন স্টোরেজ ইউনিট মার্কিনও ছিল। হোয়াইট হাউজের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এসব হামলাকে সফল হিসেবে দাবি করা হয়েছে। এই হামলায় ৩০ মিনিট সময় লেগেছে বলে হোয়াইট হাউজের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
শুক্রবার এক বিবৃতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, আজ থেকে আমাদের জবাব দেওয়া শুরু হয়েছে। এটি এখন আমাদের পছন্দমতো বিভিন্ন সময় ও স্থানে অব্যাহত থাকবে।
মার্কিন বাহিনীর এসব হামলা কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের ঘটনা ঘটেছে- তা নিয়ে এখন পর্যন্ত কিছু বলা হয়নি। গত ৭ অক্টোবর গাজায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে তুমুল উত্তেজনা বিরাজ করছে।
গাজা যুদ্ধে ইসরায়েলকে সমর্থন দেওয়ার কারণে মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন বাহিনীর ওপর হামলার পরিমাণও অনেক বেড়েছে। ইরান সমর্থিত ইয়েমেনের বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুথি লোহিত সাগরে বিভিন্ন জাহাজের হামলা চালানো শুরু করে। তারা মার্কিন জাহাজ ও ব্রিটিশ জাহাজে হামলা চালানোরও দাবি করেছে।
জবাবে ইয়েমেনে যৌথ হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। এর মধ্যে গত ২৮ জানুয়ারি জর্ডানে মার্কিন ঘাঁটিতে হামলায় তিনজন মার্কিন সেনা নিহত ও ৪০ জন আহত হয়।
হামলার জন্য ইরানকে দায়ী করে যুক্তরাষ্ট্র। যদিও ইরান তা প্রত্যাখ্যান করে। এরপর গত বৃহস্পতিবার ইরাক ও সিরিয়া ইরানি স্থাপনায় হামলার পরিকল্পনার অনুমোদন দেয় বাইডেন প্রশাসন, শেষমেশ গতকাল শুক্রবার তা কার্যকর করে দেশটি।
ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি শুক্রবার বলেছেন, ইরান যুদ্ধ শুরু করতে চায় না তবে কেউ আঘাত করতে এর কঠোর জবাব দেওয়া হবে। তাই ইরাক ও সিরিয়ায় ইরানি স্থাপনায় মার্কিন এ হামলায় মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের ঝনঝনানি আরও বাড়ল।