একটি ভাইরাস- যা পূর্বে বিজ্ঞানীদের অজানা ছিল- এর মধ্যেই চীনে অনেক মানুষের ফুসফুসের মারাত্মক রোগ সৃষ্টি করেছে এবং বিশ্বের নানা দেশে এটি ছড়িয়ে পড়ছে।
ভাইরাসটি রোগীদের শরীরে নিউমোনিয়া তৈরি করছে, এমন একটি ভাইরাস সবসময়েই উদ্বেগজনক। ফলে সারা বিশ্বের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা চরম সতর্ক অবস্থায় রয়েছেন।
করোনাভাইরাস এমন একটি সংক্রামক ভাইরাস – যা এর আগে কখনো মানুষের মধ্যে ছড়ায়নি।
ভাইরাসটির আরেক নাম ২০১৯ – এনসিওভি বা নভেল করোনাভাইরসা। এটি এক ধরণের করোনাভাইরাস। করোনাভাইরাসের অনেক রকম প্রজাতি আছে, কিন্তু এর মধ্যে মাত্র ছয়টি মানুষের দেহে সংক্রমিত হতে পারে। তবে নতুন ধরণের ভাইরাসের কারণে সেই সংখ্যা এখন থেকে হবে সাতটি।
করোনাভাইসের কীভাবে বুঝবেন, এর লক্ষণ কী তা নিয়ে সবাই জানতে চান। তাই এসব বিষয় বিবেচনা করে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে এ রোগের লক্ষণ, প্রতিকার ও প্রতিরোধে সতর্কতামূলক যেসব ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায় তা তুলে ধরা হলো-
করোনাভাইরাসের লক্ষণ: জ্বর দিয়ে এ রোগের লক্ষণ শুরু হয়। জ্বরের সঙ্গে সর্দি, শুকনো কাশি, মাথাব্যথা, গলাব্যথা ও শরীরে ব্যথা থাকতে পারে। এক সপ্তাহের মধ্যে শ্বাসকষ্ট দেখা দিতে পারে। সাধারণ ফ্লুর মতোই হাঁচি-কাশির মাধ্যমে এই ভাইরাস ছড়াতে পারে। করোনাভাইরাস মূলত শ্বাসতন্ত্রে সংক্রমণ ঘটায়। লক্ষণগুলো হয় অনেকটা নিউমোনিয়ার মতো। কারও ক্ষেত্রে ডায়রিয়াও হতে পারে।
মানুষের দেহে ভাইরাসটি সংক্রমণের পর ১ থেকে ১৪ দিনের মধ্যে লক্ষণ দেখা দিতে পারে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো হলে এ রোগ কিছুদিনের মধ্যে এমনতিইে সেরে যায়। কিন্তু কিডনি, ডায়াবেটিস, হৃদযন্ত্র কিংবা ফুসফুসের রোগীদের ক্ষেত্রে মারাত্মক জটিলতা দেখা দিতে পারে। একই সঙ্গে এটি নিউমোনিয়া, রেসপিরেটরি ফেইলিওর অথবা কিডনি অকার্যকারিতার দিকে মোড় নিতে পারে। এতে করে আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু হতে পারে।
প্রতিরোধে করণীয়
প্রথমত, এই ভাইরাসটি যেখানে ছড়াচ্ছে সেখানে যাওয়া এড়ানো উচিত। আর আপনি যদি একান্তই এমন জায়গার কাছাকাছি থাকেন তবে এই ভাইরাস থেকে বাঁচতে আপনি নিম্নলিখিত পদ্ধতিগুলি অবলম্বন করতে পারেন …
১. আপনার হাত সাবান দিয়ে ভাল করে ধুয়ে নিন। যদি কোনও সাবান না থাকে তবে স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন।
২. আপনার নাক এবং মুখ ভালভাবে ঢেকে রাখুন।
৩. অসুস্থ ব্যক্তিদের থেকে যতটা সম্ভব দূরত্ব বজায় রাখুন। তাঁদের ব্যবহৃত বাসন ব্যবহার করবেন না এবং তাঁদের স্পর্শ করবেন না। এর ফলে রোগী এবং আপনি দুজনেই সুরক্ষিত থাকবেন।
৪.ঘর পরিষ্কার রাখুন এবং বাইরে থেকে আসা জিনিসগুলিকেও পরিষ্কার করে ঘরে আনুন।
৫. নন-ভেজ বিশেষত সামুদ্রিক খাদ্য খাওয়া থেকে নিজেকে বিরত রাখুন। কেননা এই ভাইরাস সি-ফুড থেকেই ছড়ায়।
করোনাভাইরাসের চিকিৎসা
এখনও পর্যন্ত করোনাভাইরাস থেকে মুক্তি পেতে কোনও ভ্যাকসিন আবিষ্কার হয়নি। বিজ্ঞানীরা এই ভাইরাসের চিকিৎসার জন্য ভ্যাকসিন তৈরির জন্যে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।