বেশ কদিন ধরেই তীব্র শীতে কাঁপছে দেশ। সোমবার রাজধানী ঢাকাসহ দেশের অধিকাংশ এলাকা ঢেকে রয়েছে ঘন কুয়াশার চাদরে। রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের প্রায় সব জেলাসহ মোট ২১ জেলায় বইছে শৈত্যপ্রবাহ। এর মধ্যে নওগাঁ, দিনাজপুর ও জয়পুরহাটে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৮ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
জয়পুরহাট প্রতিনিধি জানান, আজ জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ দশমিক ১ডিগ্রী সেলসিয়াস সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। চলতি মৌসুমে এটিই এখানকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।
বদলগাছি ও জয়পুরহাট খুবই কাছাকাছি এলাকা এজন্য বদলগাছির রেকর্ড জয়পুরহাটেও ধরা হয়ে থাকে। বদলগাছি আবহাওয়া কার্যালয়ের টেলিপ্রিন্ট অপারেটর আরমান হোসেন জানান, বদলগাছিসহ আশপাশের এলাকায় আজ সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এ বছরেই প্রথম সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় এখানে। এর আগে কখনও এমন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়নি বলেও জানান তিনি ।
ঘন কুয়াশা আর হিমেল হাওয়ায় হাড় কাঁপানো শীতে জনজীবন একেবারেই বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জয়পুরহাটে। কনকনে ঠাণ্ডার কারণে শিশু থেকে বৃদ্ধ সবার নাজেহাল অবস্থা। জেলায় এক সপ্তাহ ধরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় জেলা প্রাথমিক ও জেলা শিক্ষা অফিসার দুদিন ধরে জেলার সব স্কুল বন্ধ ঘোষণা করেছেন।
দিনাজপুর আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, জেলায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বিরাজ করছে। এতে ঘনকুয়াশার প্রভাব থাকবে। দিন ও রাতের তাপমাত্রা কিছুটা পরিবর্তন হতে পারে।
সরকারি নির্দেশনার পরও জেলার তাপমাত্রা ৮ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামলেও মাধ্যমিক পর্যায়ের বিদ্যালয়গুলো বন্ধ না করে পূর্বের মতোই ক্লাস পরীক্ষা চালু রাখা হয়েছে। ফলে এই তীব্র হাড় কাঁপানো শীতের মধ্যেই শিশু-কিশোর শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে গিয়ে ক্লাস ও পরীক্ষায় অংশ নিতে হচ্ছে।
শীতের কারণে সমস্যায় পড়েছেন খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষেরা। শীত নিবারণের জন্য পুরাতন মোটা কাপড় দোকানে ভিড় বাড়ছে। শীত ও ঘনকুয়াশা কৃষকদেরও চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মাঠে থাকা আলু ও টমেটো ক্ষেতে দেখা দিয়েছে শীতজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব।
এমন পরিস্থিতিতে আজ জেলার সব মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুল-মাদরাসা ও প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আজ সকালে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সকাল থেকেই কুয়াশার কম ও মেঘলা আকাশ। তবে সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত দেখা মেলেনি সূর্যের।
স্থানীয়রা জানান, গত দুইদিন থেকে দুপুরের পর একটু সূর্যের দেখা পাওয়া যায়। কিন্তু উত্তাপ ছড়াতে না পারায় বিকেল হতেই তাপমাত্রা আবারও নিম্নগামী হওয়া শুরু করে। আর দিনভর হিমেল বাতাস। সন্ধ্যার পর থেকে শীতের মাত্রা বাড়ে। রাত বাড়তে থাকলে শীতও বাড়ে সমানতালে।
এদিকে হাড়কাঁপানো কনকনে শীতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন নিম্নআয়ের শ্রমজীবী মানুষেরা। জীবিকার তাগিদে সকাল হলেই তারা মোটা গরম কাপড় পরে- কেউ সাইকেলে, কেউ পায়ে হেঁটে কর্মে বেরিয়ে পড়েন।