রাজধানীর ওয়ারি এলাকায় ক্যাসিনোকাণ্ডে গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত দুই নেতা এনু ও রুপনের বাসায় অভিযান চালিয়ে পাঁচটি সিন্দুকভর্তি টাকা, স্বর্ণালঙ্কার, এফডিআর ও ক্যাসিনো সামগ্রী জব্দ করেছে র্যাব।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দিনগত রাতে র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সরোয়ার আলমের নেতৃত্বে এ অভিযান চালানো হয়।
সারোয়ার আলম বলেন, সরু গলির ওই বাসায় পাঁচটি সিন্দুকভর্তি টাকা ও পাঁচ কোটি টাকার এফডিআরের বইয়ের পাশাপাশি ক্যাসিনোর সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে। বাসাটি খুব ছোট আকারে। এখানে মাত্র একটি চৌকি আছে। এটি ছয়তলা ভবনের নিচতলার একটি বাসা। ধারণা করা হচ্ছে, এ বাসায় টাকা রেখে কেউ এর পাহারায় থাকতেন। তবে এখান থেকে কাউকে আটক করা যায়নি।
ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের পরিচালক এনু ছিলেন গেণ্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। আর তার ভাই রুপন ছিলেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রকিবুল হাসান জানান, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার মধ্যরাত থেকে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত পুরান ঢাকার লালমোহন স্ট্রিটের ওই ছয়তলা বাড়ির নিচতলায় অভিযান চালানো হয়। অভিযান চালিয়ে সেখান থেকে ২৬ কোটি ৫৫ লাখ টাকা, ১ কেজি স্বর্ণ ও ৯ হাজার ইউএস ডলার উদ্ধার করা হয়েছে।
এর আগে গত ১৩ জানুয়ারি নগদ ৪০ লাখ টাকা ও দুটি মোবাইল ফোনসহ এনামুল ও রুপনকে কেরোনীগঞ্জের সুবাদ্দা এলাকার একটি বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পরবর্তীতে অর্থ পাচার মামলায় দুই ভাইয়ের প্রত্যেককে ৪ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে গেন্ডারিয়া এলাকায় তাদের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে সাড়ে পাঁচ কোটি নগদ টাকা ও ৮ হাজার ৭২ গ্রাম স্বর্ণ উদ্ধারের পর থেকেই পলাতক ছিলেন এনামুল ও রুপন। তাদের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের চারটি মামলা দায়ের করা হয়।
অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) উপ-মহাপরিদর্শক ইমতিয়াজ আহমেদ জানান, এনামুল হক এবং রুপন ভূঁইয়ার নামে ঢাকায় ২২টি বাড়ি ও জমি রয়েছে। এছাড়া তাদের ব্যবহার করা পাঁচটি গাড়ির সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। বিভিন্ন ব্যাংকে তাদের নামে ৯১টি একাউন্ট রয়েছে। এসব একাউন্টে ১৯ কোটি ১১ লাখ টাকা রয়েছে। ক্যাসিনো বিরোধী অভিযানের পর থেকে তাদের এসব ব্যাংক একাউন্ট অবরুদ্ধ (ফ্রিজ) করে রাখা হয়েছে।
ঘটনার পর তাদের বিরুদ্ধে অবৈধ ক্যাসিনো ব্যবসা, জুয়া পরিচালনা, অর্থপাচার, মানি লন্ডারিংয়ের দায়ে মোট সাতটি মামলা দায়ের করা হয়, যার মধ্যে অবৈধ ক্যাসিনো ও জুয়া পরিচালনা ও অর্থ-পাচারের অভিযোগে চারটি মামলার তদন্ত করছে সিআইডি।