The news is by your side.

বলিউডে জয়া আহসান

0 145

 

 

বলিউডে জয়া আহসান। শুক্রবার জি-ফাইভে মুক্তি পাবে অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরীর হিন্দি ছবি ‌কড়ক সিং’।

কেমন আছেন?

হ্যাঁ, আমি ভালো আছি। খুব স্যরি, অনেক রাত হয়ে গেল…

না না ঠিক আছে, কোনো ব্যাপার না

ভোর থেকে আমাকে একেবারে দৌড়ের ওপর থাকতে হবে, কোথায় যেন যাচ্ছি।

দিল্লি..?

হা হা হা। হ্যাঁ, দিল্লি যাচ্ছি।

‘কড়ক সিং’-এর তিনটা প্রিমিয়ার হওয়ার কথা। দিল্লিরটা দিয়েই শুরু?

হ্যাঁ।

দিল্লি দিয়ে শুরু। তার আগে একবার তো ওখানে প্রিমিয়ার হলো, ঐ যে…

গোয়া চলচ্চিত্র উৎসবে?

হ্যাঁ।

আবার কলকাতায় ফিরব। কলকাতায় প্রিমিয়ার ৮ ডিসেম্বর।

রাত পোহালেই তো আপনি অফিশিয়ালি বলিউড নায়িকা…

না না, এভাবে বলবেন না।  এখন কি আর বলিউড, টালিউড, ঢালিউড আলাদা কিছু আছে? এখন গ্লোবালাইজেশনের যুগ। যেকোনো দেশের যেকোনো ভাষায় কাজ করাটা এখন নরমাল, অনেকেই করছেন।

একদম ঠিক আছে। তারপরও হিন্দি ভাষার ছবি বলে কথা। দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে বড় ইন্ডাস্ট্রি…

আমি যদি কনস্ট্যান্টলি অনেক কাজ করতে পারি, যদি করি। অনেকদিন সাসটেইন করি, তখন বলতে পারব, হ্যাঁ, আমি বলিউডেও কাজ করছি। এখনই বলাটা…ইটস টু আর্লি।

 

এমনিতে  কি ভেতরে ভেতরেও থ্রিলিং ফিল করছেন না?

আমি যখন শুটিং করি, সে সময়টা ছাড়া আর থ্রিল-ফিল করি না। এটা অদ্ভুত লাগবে শুনতে, আমি জানি না। শুটিংয়ে যে লাইফটা আমি লিড করি, সে ট্রিপটা আমি নিই। কাজের সময়টাতেই থ্রিলটা ফিল করি, অন্য চরিত্র হয়ে ওঠার যে ট্রিপ সেটা আমার খুব ইন্টারেস্টিং মনে হয়। তারপরে যে এখন প্রমোশন চলছে, ছবিটা লোকে দেখবে বা দেখবে না সেটা পরের ব্যাপার। আমার কাজ অনেস্টি দিয়ে অভিনয় করা, সেটুকু করে দিয়েছি। বাকি দায়িত্ব প্রযোজক-পরিচালকের। ছবিতে আরো অনেকেই আছেন, আমি একা নই।

‘কড়ক সিং’-এ পঙ্কজ ত্রিপাঠী আছেন, সানজানা সাংঘি, পার্বতী থিরুবতী আছেন। পঙ্কজ যেমন ওয়ার্ল্ডওয়াইড পরিচিত মুখ, বড় তারকা; আমাদের কাছে আপনি সেরকমই।

[কিছুটা বিব্রত] এটা আপনি বলতে পারেন। আমি পারি না।

আপনি যেখানেই যান বাংলাদেশের পতাকাটা আপনার সঙ্গে চলে যায়। সাকিব আল হাসানরা যখন খেলেন তাদের গায়ে জার্সি থাকে, পতাকাও থাকে অনেক সময়। অদৃশ্যভাবে আপনার সঙ্গে সবসময়ই বাংলাদেশের পতাকাটা থাকে কিন্তু।

হ্যাঁ, এটা ট্রু এক অর্থে। সে কান ফেস্টিভাল থেকে শুরু হয়েছে। তারপরে যে আরেকটা দেশে আরেকটা ভাষায় আরেকটা স্টেটে কাজ করলাম… আমি সব জায়গায় বলিও। আমার সমস্ত ইন্টারভিউ যদি দেখেন, নিজেকে বাংলাদেশি অ্যাক্টর হিসেবেই স্ট্যাবলিশ করি। আমাদের ছবিতে [কড়ক সিং] এ মজাটাও আছে। বিভিন্ন দেশ, বিভিন্ন ল্যাঙ্গুয়েজ এখানে কোলাব করেছে। অনেক সময় বলি আমি বেঙ্গলি কিন্তু এবারের সব ইন্টারভিউতে আমি বাংলাদেশকেই হাইলাইটেড করেছি।

‘কড়ক সিং’-এর ট্রেলারে আপনার কণ্ঠে হিন্দি শুনে ধাতস্থ হতে একটু সময় লেগেছে, আসলে আমরা এই জয়াকে দেখে অভ্যস্ত না তো…

ও হ্যাঁ (হেসে)। ট্রেলারটা কেমন হয়েছে আগে বলেন।

ট্রেলার তো দুর্দান্ত। অনিরুদ্ধর কাজ বরাবরই ভালো। কিন্তু কথা হচ্ছে, আমরা যারা নাইনটিজে বেড়ে উঠেছি তাদের তো ভিসিআরে ছবি দেখে দেখে অলমোস্ট হিন্দিটা শেখা হয়ে গেছে। পারলেও আপনি নিশ্চয়ই অভিনয়ের জন্য আলাদা করে শিখেছেন?

আমার যে হিন্দি ভালো ছিল না তা নয়, কিছুটা তো শিখতে হয়েছেই। মজার ব্যাপার যেটা ছিল, আমাদের পুরো ছবিটা হয়েছে সিঙ্ক সাউন্ডে [শুটিংয়ে যা বলেছেন, তাই আছে ছবিতে। ডাবিং করা হয়নি]। এটা কিন্তু খুব গুরুত্বপূর্ণ। এখানে একটা ওয়ার্ডও পরে ঠিক করার কোনো কায়দাই নাই।

মাই গড! এটা তো আপনার জন্য অনেক টাফ! নিশ্চয়ই শুটের আগে ভাষা এক্সপার্টের সাহায্য নিয়েছেন?

একজন ছিলেন। তাছাড়া দেখুন, আমরা তো অ্যাক্টর, আমরা কুইক লার্নার। শিখে যাই আসলে, করতে হয়। যখন একবার শুরু করে দিই, ট্র্যাকে উঠে যাই, তখন ঠিকভাবেই চলতে হবে রাস্তায়। যত উঁচু-নিচু যাই থাকুক, সেটা দর্শক পর্যন্ত পৌঁছানো যাবে না। আমি চেষ্টা করেছি, বাকিটা দর্শক বলবে।

তারমানে বলিউড মিশন পাক্কা। এবার বলুন, মুম্বাইয়ে বাড়ি কিনছেন কবে?

এইরে! [সশব্দ হাসি] আমি কোথাও বাড়ি কিনি না। কলকাতাতেও তো বাড়ি নেই। ভাড়া বাড়িতে থাকি।

ঠিক আছে, ভাড়া ফ্ল্যাটই না হয় নিলেন

না না, এক্ষুণি এরম কিছু প্ল্যান নাই। আগে তো দর্শক ‘কড়ক সিং’ দেখুক। ছবিটা বা আমার চরিত্রটা পছন্দ করে কিনা সেটাও তো একটা ব্যাপার।

অতীতে এমন বহু পরীক্ষায় পাশ করছেন, এখানেও করবেন আশা করছি। আগ্রহ নিয়ে একটা বিষয় জানতে চাই। ক্যারিয়ারের শুরুতে কখনো কি স্বপ্ন দেখেছিলেন, একদিন বলিউড ছবিতে অভিনয় করবেন?

না, দেখিনি। আমার তো কোনো কিছুই রোডম্যাপ করা থাকে না। রোডম্যাপ করে অভিনয়েও আসিনি। অভিনয় যে করব সেটাই জানতাম না, তারপর যে কলকাতায় আসব সেটাও কিন্তু জানতাম না। অরিন্দমদা [অরিন্দম শীল, যার হাত ধরে পশ্চিমবঙ্গের ছবিতে জয়ার অভিষেক] আমাকে প্রথম ফোন করে বলেছিলেন, ‌‘আমি অরিন্দম শীল, অভিনয় করি। আমার একটা ডেব্যু ফিল্মে আপনাকে নিতে চাচ্ছি।’ প্রথমে আসলে আমি বিশ্বাস করিনি, মানে অতটা আমলে দেইনি। উনাকে অনেকবার করে বলতে হয়েছিল, ‘আমি সিরিয়াসলি ছবি করতে চাই, আপনি করুন কাজটা।’

এভাবেই আমার সামনে যে চ্যালেঞ্জ আসে সেটা আমি নিই রনি, সেটাই ভালো লাগে। আমি কোনোকিছুর জন্য কখনোই ডেসপারেট নই, মানে আসলে দৌড়াতে চাই না। আমার কাজ দেখলে বা ফলো করলে যে কেউই নিশ্চয়ই বুঝতে পারবেন। বাকিটা যা আসে সেটা বোনাস পাওয়া। মানুষের ভালোবাসা বলুন, ভালো ছবির অফার বলুন বা ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের দুটো পুতুল বলুন—সবকিছুই আসলে বোনাস। আমি শুধু বুঝতে চাই, কোনটা করব কোনটা করব না। ডিসিশন নিই, অনেস্টির সঙ্গে কাজটা করি।

অভিনয়ে বলিউডে আপনার প্রিয় কারা?

নারী অভিনেতাদের মধ্যে স্মিতা পাতিল, আলিয়া ভাট, টাবু ও বিদ্যা বালানকে ভালো লাগে। অভিনেতাদের মধ্যে নাসিরউদ্দিন শাহ, আমির খান, পঙ্কজ ত্রিপাঠী, আদর্শ গৌরব, বিজয় ভার্মা আর ভালো লাগে শাহরুখ খানের এনার্জি।

শাহরুখ খানের এনার্জি ভালো লাগে বললেন। কাকতালীয়ভাবে আপনার যেদিন অভিষেক হচ্ছে বলিউডে ঠিক তার আগের দিন [৭ নভেম্বর] শাহরুখের মেয়ে সুহানা খানেরও অভিষেক হয়েছে।

আচ্ছা! দারুণ তো!

একই সময়ে দুই প্রজন্মের জয়া আহসান ও সুহানা খানের বলিউড অভিষেক, বিষয়টাকে আপনি কিভাবে দেখছেন?

না না, ওরা তো এ দেশের মানুষ। প্রথমত আমি কিন্তু একটা দেশ থেকে আরেকটা দেশে এসে কাজ করি, এটা আপনাকে বুঝতে হবে। আমাকে বারবার প্রমাণ দিয়ে দিয়েই এতদূর আসতে হয়েছে। আমার ব্যাকগ্রাউন্ড ফিল্মের না। অভিনয় করব সেটাই কখনো ভাবিনি, বেশ পরে এসে অভিনয় করেছি। শুরুতে আমাকে পরিবারের কাছে প্রমাণ দিতে হয়েছে যে আমি যে কাজটা করব সেটা ঠিক কাজ করব, কোনো ভুল কাজ নয়। তারপর সোসাইটির কাছে প্রমাণ দিতে হয়েছে, আমি একজন সিঙ্গেল পারসন। বিয়িং আ সিঙ্গেল পারসন সমাজের সঙ্গে ফাইট করে আমি শুধু কাজটা করে যাচ্ছি। তারপর আমার দেশের কাছে প্রমাণ দিতে হয়েছে যে, আমি আরেক দেশে গিয়ে কাজ করব। পারব কি পারব না, সেটারও প্রমাণ দিতে হয়েছে। প্রমাণ দিয়েই আমাকে প্রত্যেকটা রাস্তা এগুতে হয়েছে। কলকাতায় একের পর এক কাজ করার পর নিজের ওপর বিশ্বাসটা আনতে পেরেছি। টনিদার [অনিরুদ্ধ] সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছা ছিল অনেকদিনের। ব্যাটে বলে মিলছিল না দুজনেরই। তারপর আমাকে দিলেন তো দিলেন এমন একটা চ্যালেঞ্জ দিলেন, একদম অন্য ভাষার ছবি। প্রমাণ করেছি বলেই হয়তো বিশ্বাস করেছেন আমাকে। এই প্রমাণ দেওয়ার মধ্যে যে আনন্দটা, সেটা কিন্তু অন্যরকম। বুঝাতে পেরেছি, এখানে কোনো নেপোটিজম বা অন্য কোনো কিছু নেই। এতে কলারটা উঁচু হয়েই যায়। আমার কোনো গডফাদার বা কোনো গডমাদার জাতীয় কেউ নেই। আমি নিজের মতো করে রাস্তাটা তৈরি করতে করতে এগিয়েছি, কাজ করেছি। হাতি ঘোড়া মেরে দিয়েছি তা না, করতে পেরেছি, করছি আরকি।

ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য উত্কৃষ্ট দৃষ্টান্ত আপনার এই পথ। এপার বাংলা, তারপর ওপারে মানে ঢালিউড, টলিগঞ্জ এখন বলিউড। মাঝখানে মুর্তজা অতাশ জমজমে ইরানি ছবি ‘ফেরেশতে’‌ও করলেন। এটাকে কি ইরানি ছবি বলা যায় আসলে?

হ্যাঁ। তবে সেখানে আমি ইরানি ভাষায় কথা বলিনি, বাংলাতেই বলেছি। ওটাও পুরোপুরি সিঙ্ক সাউন্ডে হয়েছে। আন্ডার প্রিভিলাইজড গোষ্ঠীদের নিয়ে ছবি। আমরা ইট কাঠের পাথরের আরাম কেদারায় এসি ঘরে বসে থেকে ঐ জীবনটা দেখিনি, যাপন করিনি। সেটাও একটা চ্যালেঞ্জ আমার জন্য, আরেকটা নতুন টিম, যারা ইংরেজি বুঝে না, না বাংলা বুঝে। ইরানি ছাড়া কিছুই বলে না। একটা পর্যায়ে দেখলাম যে, আমিও উনাদের সঙ্গে কমিউনেট করতে পেরেছি। কারণ কি জানেন তো? ফিল্মের আলাদা একটা ভাষাই থাকে।

অবস্থা যা, আপনার পরের মিশন বা গন্তব্য তো হলিউড ছাড়া আর কিছু দেখছি না?

না না। ধুর! একটা ছবি মাত্র।

কেন? আপনার কথা ধরেই যদি বলি, যেভাবে পরিশ্রম করে যাচ্ছেন, পথই তো আপনাকে নিয়ে যাবে কাঙ্খিত গন্তব্যে…

পথ নিয়ে যায়…। অনেক আর্টিস্ট খুব ডেসপারেট থাকেন, আমি কিন্তু খুব ডেসপারেট আর্টিস্ট নই। আমি খুব আনন্দ নিয়ে কাজ করি। যে কোনো ভাষা বা অন্য যে চ্যালেঞ্জই আসে তা অবশ্যই নিব। আপনি যেটা বলছেন, হলে তো খুব ভালো, হোয়াই নট? কোনো কিছু করলে সেটার সর্বোচ্চ শিখরে দৃষ্টি দেওয়া উচিত্। তবে একটা ছবি করে আমি এটলিস্ট বলতে পারি না যে, আমি তো বলিউডের অভিনেত্রী। আমার মতো অনেকেই করেছেন। বাংলা থেকে অনেকেই করেছেন। কলকাতায় আমি কনস্ট্যান্টলি দশ বছর কাজ করতে পেরেছি, এখন বলতে পারি যে এটা আমার বা আমি টলিউডের একজন অভিনেতা। সো ‌‘বলিউড বা হলিউড অভিনেতা’‌ এটা বলার জন্য টাইম লিমিট লাগে আসলে।

পঙ্কজ ত্রিপাঠী দুর্দান্ত অভিনেতা, সানজানা সাংঘি সম্ভাবনাময়ী। ওদের সঙ্গে যখন প্রথম দেখা হলো, আপনাকে রিকগনাইজ করতে পেরেছিল? ওরা কি জানে আপনার কাজ সম্পর্কে?

ওরা ভীষণ ম্যাচিওরড। পঙ্কজজি কার সঙ্গে কাজ করবেন সেটা তো আগেই দেখে নিয়েছেন। উনার স্ত্রী ব্যক্তিগতভাবে আমায় ভীষণ ভালোবাসেন। তারপর সানজানারাও দারুণ আর্টিস্ট। ঐ যে আমার পেছনে একটা বোঝা আছে, এর জন্য অনেকে ভয় পায়। ভাবে, ওরে বাবা!

গোয়া চলচ্চিত্র উৎসবে ‘কড়ক সিং’-এর প্রিমিয়ারে জয়া আহসান ও পঙ্কজ ত্রিপাঠী

বোঝাটা কীসের?

পাঁচটা ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড আমার, দুই কাঁধে ভর করে আছে আমার। এটা কিন্তু একটা প্রেসারও। আমাদের এই ফিল্মে [কড়ক সিং] সবাই ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড উইনার। আমাদের যে এডিটর, ডিরেক্টর, পঙ্কজজি, আর্ট ডিরেক্টর, মিউজিক ডিরেক্টর, শ্রেয়া ঘোষাল—সবাই ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড উইনার। একমাত্র সানজানাই এখনো পায়নি। ও এতো ভালো অভিনয় করছে যে আমি মুগ্ধ। ওরা তো যথেষ্ট প্রিভিলাইজড ছেলে-মেয়ে। মুম্বাইয়ে থাকে। তার মধ্যে ও একটা মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ের চরিত্র করেছে, কিভাবে যে ট্রান্সফর্ম করেছে! সত্যিই মুগ্ধ। আর পার্বতী ছিল, ও তো আমার প্রচন্ড পছন্দের আর্টিস্ট।

পার্বতীকে নামে চিনছি না। কিন্তু ফটোগ্রাফ দেখে মনে হয়েছে তাঁর অনেক কাজ দেখেছি।

সাউথে তো প্রচুর ছবি তাঁর। হিন্দিতে দেখেছেন ‌‘কারিব কারিব সিঙ্গেল’‌-এ।

প্রথম দেখায় পঙ্কজ ত্রিপাঠির সঙ্গে কী কথা হয়েছিল আপনার?

প্রথম লুক সেটেই দেখা হয়েছিল আমাদের। উনি অসম্ভব ভালো মানুষ। অনিরুদ্ধর ওপর তাঁর ভরসা আছে, কেমন শিল্পী নেবেন, যোগ্য বলেই কাস্ট করবেন। শুটিং হয়েছে একদমই স্ট্রেস ছাড়া। আমাদের সব শটই বলতে গেলে ওয়ান টেকে ওকে। আমি এমনিতেও ভার্জিন টেক দিতে ভালোবাসি, সেটাই আমার বেস্ট টেক হয়।

আপনার অভিনয়ের যে ধরণ তার সঙ্গে পঙ্কজ ত্রিপাঠির অভিনয়ের কোনো মিল পান?

উনি খুব সাত্ত্বিক অভিনয় করেন। আর আমিও খুব সেরিব্রাল অভিনয় বিশ্বাস করি। যেমন, ‌না অভিনয়। এই ছবিতে আমাদের ডিরেক্টর বলেছেন একদম অভিনয় করা যাবে না। সো যতটা আন্ডারটোন করা যায়। পঙ্কজ ত্রিপাঠি থেকে সবাই খুব সুন্দর অভিনয় করেছে, ছবিটা দেখলে বুঝতে পারবেন।

শুধু এ ছবিটার কথা বলছি না। ওভারঅল আপনাদের দুজনের অভিনয়ের ধারাটার কথা বলছি

আমার অ্যাক্টিং স্কিল তো আপনারা বেশি অ্যানালাইসিস করতে পারবেন। যেখানে যেমন দরকার হয়, সেখানে তেমন করি। তবে আমি খুব মিনিমাল অ্যাপ্রোচ খুব পছন্দ করি।

দর্শক হিসেবে এ জায়গাতেই আপনাদের দুইজনের মিল পাই। আপনি সেটা মানতে নাও পারেন, অসুবিধা নেই।

উনি খুব বড় মাপের আর্টিস্ট। উনার সঙ্গে আমার তুলনার জায়গা নেই। তবে হ্যাঁ, একই ধারার অ্যাক্টিং বিশ্বাস করি আমরা।

ট্রেলার দেখে মনে হয়েছিল, এটা আগা-গোড়া পঙ্কজ ত্রিপাঠি শো না তো?

অনেকখানি তাই। একই সঙ্গে অন্য চরিত্রগুলোতে বিভিন্ন লেয়ার আছে। বিভিন্ন ক্যারেক্টারের সঙ্গে অপর ক্যারেক্টারের ম্যাচিওরড সম্পর্ক আছে। কিন্তু আমার মনে হয়, ছবিটা দেখার পর অনেকেই তাদের সম্পর্কগুলো রি-ডিসকভার করবে।

গোয়া উৎসবে করণ জোহর, শহিদ কাপুরসহ নামকরা নির্মাতার সঙ্গে আপনাকে দেখা গেছে…

হ্যাঁ, আমরা একটা টিম গিয়েছিলাম তো।

তারা ছবি দেখেছিল?

সেদিন তো উৎসবের উদ্বোধনী দিন ছিল। আমাদের ছবি দেখায়নি।

তবে আপনার সঙ্গে সেলফি পেলাম বিজয় সেতুপতির…

ঢালিউড, টালিগঞ্জের পর এবার বলিউডে জয়া আহসান। আগামীকাল [৮ ডিসেম্বর] জি-ফাইভে মুক্তি পাবে অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরীর হিন্দি ছবি ‌‘কড়ক সিং’। এই মাহেন্দ্রক্ষণের ঠিক আগে আগে জয়া আহসান ও তাঁর ফিল্মিসফরের মুখোমুখি হয়েছেন দাউদ হোসাইন রনি

অনিরুদ্ধের ছবি, বলিউডের অন্যরা কিন্তু খুব মনোযোগ দিয়ে দেখবে। মনে হচ্ছে আপনি আরো কাজ পাবেন বলিউডে।

আপনারা দোয়া করলে…।

বলিউডে অনেক ধরনের ছবি হয়। কিন্তু আপনাদের মতো আর্টিস্টের বিকল্প খুব বেশি নাই। এ কারণেই তো জানতে চেয়েছি, মুম্বাইতে বাড়ি কিনবেন কবে?

এগুলা না আসলে বলা যায় না। টলিউডে ‘আবর্ত’‌ হাতে নেওয়ার তিন বছর পরে গিয়ে সেকেন্ড কাজটা করেছি, খেয়াল করেছেন ব্যাপারটা?

হ্যাঁ, ‘আবর্ত’‌ ২০১৩, এর পর ‘রাজকাহিনী’‌ ২০১৫ তে।

আমি কিন্তু রিপিট কাজ করিনি। যেখানে আমার করার কিছু নেই ওরকম ছবি করিনি। টনিদার এই ছবিতে আমার খুব বেশি প্রেজেন্স আছে তা নয় কিন্তু এমপাওয়ারিং একটা চরিত্র। সেজন্যই আমি করেছি, আর টনিদাও আমাকে নিয়েছেন। আমার মূল্যায়ন হলো না, কাঠ পুতুলের মত ছবিতে থেকে গেলাম—সেটা করার কি খুব দরকার? তার চেয়ে বাংলাতেই ভালো আছি, ভালো কাজ করে যাচ্ছি। বাংলার দর্শক আমায় ভালোবাসেন, সেটাও তো বিরাট পাওয়া।

সেটা তো ঠিক আছে। তবে অমিতাভ বচ্চনের মতো তারকা যখন হলিউডে গিয়ে ‘দ্য গ্রেট গ্যাটসবি’‌তে মিনিটখানিকের চরিত্র করেন, সেটাকে কিন্তু কেউ খারাপ চোখে দেখে না।

ট্রু, কেউই খারাপ চোখে দেখে না।

 

কলকাতায় ২০২৩ সালটা আপনার জন্য সফল একটা বছর। ‘অর্ধাঙ্গিনী’‌র পর ‘দশম অবতার’‌, দুটোই দারুণ ব্যবসা করল। ওপারে এ বছর ব্যবসাসফল ছবি খুবই কম, তার মধ্যে আপনারই দুটি। মজা করে যদি বলি, ওপারে এ বছরের শাহরুখ খান আপনি। ‘পাঠান’‌, ‘জওয়ান’‌-এর পর বছর শেষে ‘ডাঙ্কি’‌ নিয়ে আসছেন শাহরুখ। আপনি আসছেন ‘কড়ক সিং’‌ নিয়ে।

হা হা হা [ম্যারাথন হাসি]। সর্বনাশ! ‘অর্ধাঙ্গিনী’‌ সমালোচকরা যেমন পছন্দ করেছেন, সাধারণ মানুষও পছন্দ করেছে। ‘দশম অবতার’‌ও দারুণ করেছে বক্স অফিসে।

আগেই বলেছিলাম, যেখানেই যান আপনার সঙ্গে অদৃশ্যভাবে বাংলাদেশের পতাকা থাকে। বাংলাদেশে এবার জাতীয় পুরস্কার পেলেন, অথচ দেশের পর্দায় আপনাকে পাওয়াই গেল না।

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.