ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান যুদ্ধবিরতি আরও ২৪ ঘণ্টা বাড়াতে সম্মত হয়েছে ইসরায়েল ও হামাস। গতকাল বুধবার সাময়িক যুদ্ধবিরতির সময় শেষ হওয়ার শেষ মুহূর্তে এই চুক্তি হয়েছে। খবর আল-জাজিরা ও রয়টার্সের।
ইসরায়েলের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, মধ্যস্থতাকারীদের প্রচেষ্টার আলোকে জিম্মিদের মুক্তির প্রক্রিয়া চালিয়ে যেতে চুক্তির শর্তাবলী সাপেক্ষে গাজা উপত্যকায় সাময়িক যুদ্ধবিরতি অব্যাহত থাকবে।
আরেক বিবৃতিতে ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সংগঠন হামাস বলেছে, গত শুক্রবার শুরু হওয়া অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানোর একটি চুক্তি হয়েছে।
যুদ্ধবিরতি বাড়ানো নিয়ে গাজার শাসকগোষ্ঠী হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে আলোচনায় মধ্যস্থতা করছে কাতার ও মিসর।
দেড় মাস ধরে ইসরায়েলি বাহিনীর সর্বাত্মক হামলার পর গত শুক্রবার প্রথমবারের মতো চার দিনের যুদ্ধবিরতি শুরু হয় গাজায়। প্রথম দফা শেষে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ আরও দুই দিন বাড়াতে একমত হয় বিবদমান দুই পক্ষ। এরপর গত মঙ্গলবার শুরু হয় আরও দুই দিনের যুদ্ধবিরতি। বুধবার ছিল ছয় দিনের যুদ্ধবিরতি শেষ দিন।
হামাসের পলিটব্যুরোর সদস্য গাজি হামাদ বুধবার রাতে সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, যুদ্ধবিরতির মেয়াদ আরও বাড়ানো হলে আমরা আরও জিম্মি মুক্তি দিতে প্রস্তুত। বিষয়টি নিয়ে আমাদের কাতারি ও মিসরীয় ভাইদের সঙ্গে কথাবার্তাও চলছে। আশা করছি আজই নতুন যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে। এ যুদ্ধবিরতি হতে পারে আরও কয়েক দিনের।
এদিকে ইসরায়েল সরকারের মুখপাত্র আইলন লেভি গতকাল বলেন, যুদ্ধবিরতি নিয়ে যেকোনো প্রস্তাব গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে ইসরায়েল। যদিও তিনি এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু বলেননি।
যুদ্ধবিরতির ষষ্ঠ দিন বুধবার রাতে আরও ৩০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে ইসরায়েল। অন্যদিকে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ছেড়ে দিয়েছে ১০ ইসরায়েলি জিম্মিকে। যুদ্ধবিরতি চুক্তির অধীনে ইসরায়েল থেকে মুক্তিপ্রাপ্ত ফিলিস্তিনি বন্দিদের সংখ্যা পৌঁছেছে ২১০ জনে। অন্যদিকে চুক্তির অধীনে ৭০ জন ইসরায়েলিকে এবং অন্যান্য জাতীয়তার আরও প্রায় ৩০ জন বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস ও গাজার অন্যান্য প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলো।
ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সংগঠন হামাস ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায়। জবাবে ওই দিনই পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরায়েল। এর মধ্যে জেরুজালেমসহ ফিলিস্তিনের কয়েকটি জায়গায় আশ্রয়শিবিরে অভিযান চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এ ছাড়া গাজা থেকে পালানোর সময় বেসামরিক লোকজনের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান হামলা চালানোর খবর এসেছে। হামলা হয়েছে গাজার হাসপাতালেও।
ফিলিস্তিনের সরকারি তথ্য দপ্তরের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, গাজায় ইসরায়েলের হামলায় নিহতের সংখ্যা ১৫ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। নিহতদের মধ্যে ৬ হাজার ১৫০ জন শিশু এবং ৪ হাজার নারী রয়েছেন। গাজায় এখনো প্রায় ৭ হাজার মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। তাদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যা ৪ হাজার ৭০০ জনের বেশি।