সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজা শুরু হচ্ছে আজ। সনাতন ধর্ম মতে, যা কিছু দুঃখ-কষ্টের বিষয়, যেমন- বাধাবিঘ্ন, ভয়, দুঃখ-শোক, জ্বালা-যন্ত্রণা এসব থেকে ভক্তকে রক্ষা করেন দেবী দুর্গা। শাস্ত্রকাররা দুর্গা নামের অর্থ করেছেন—দুঃখের মধ্য দিয়ে যাকে লাভ করা যায়, তিনিই দুর্গা। দেবী দুঃখ দিয়ে মানুষের সহ্য ক্ষমতা পরীক্ষা করেন। তখন মানুষ অস্থির না হয়ে তাকে ডাকলেই তিনি সবার কষ্ট দূর করেন। এ বছর ভক্তদের কষ্ট দূর করতে দেবী দুর্গা আসবেন ঘোড়ায় চড়ে, আর দশমীর দিন বিদায় নেবেন একই বাহনে।
দুর্গাপূজার সঠিক সময় বসন্তকাল। কিন্তু বিপাকে পড়ে রামচন্দ্র, রাজা সুরথ ও বৈশ্য সমাধি, সে পর্যন্ত অপেক্ষা না করে শরতেই দেবীকে অসময়ে জাগিয়ে পূজা করেন। সেই থেকে অকালবোধন হওয়া সত্ত্বেও শরৎকালেই দুর্গাপূজার প্রচলন হয়ে যায়।
শুক্রবার সকাল ৯টা ৫৮ মিনিটে কল্পারম্ভ ও বিহিত পূজার মাধ্যমে শুরু হবে এবারের দুর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা। এদিন ষষ্ঠী, সায়ংকালে দুর্গাদেবীর বোধন, আমন্ত্রণ এবং অধিবাস হবে।
বোধন মানে জাগ্রত করা বা জাগানো। বোধন হয় বেল গাছের তলায়। দেবতারাও বেল গাছের তলায় বোধন করেছিলেন। এ গাছের অন্য নাম শ্রীবৃক্ষ। শ্রী অর্থ সম্পদ বা সৌন্দর্য। তাই পুরোহিতরা সম্পদ বা সৌন্দর্য বা সংসারের উন্নতির জন্য, জ্ঞান-ভক্তি লাভের জন্য বেল গাছের মূলে দুর্গাপূজার বোধন করেন। বোধনে ঘট স্থাপন করা হয়। ঘট হলো হৃদয়ের প্রতীক। ঘটের জলে যেমন প্রতিবিম্ব পড়ে, সে রকম ভক্তের হৃদয়েও মায়ের ভাব বা স্বরূপের ধারণা হয়। সেই ধারণা অনুযায়ী প্রতিমা তৈরি হয়।
মহালয়াতেই দেবীর আগমনের ঘণ্টা বাজে, আর বিজয়া দশমী দেবী দুর্গাকে বিদায় জানানোর দিন। এই দিনটি শেষ হয় মহা-আরতির মাধ্যমে। এর মধ্য দিয়ে দুর্গাপূজার সব কার্যক্রম সম্পন্ন হয়। আগামী শনিবার মহাসপ্তমী, রবিবার অষ্টমী, সোমবার মহানবমী এবং মঙ্গলবার) দশমীর মাধ্যমে বিদায় নেবেন দুর্গা দেবী।