ধারাবাহিকভাবে কমছেই দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। রিজার্ভের পতন ঠেকাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নানা ধরনের সিদ্ধান্ত ও বিধিনিষেধ আরোপ করছে। কিন্তু বাস্তবে এর সুফল মিলছে না। বরং ডলারের সংকটকে আরও প্রকট করে তুলছে। শুধু সেপ্টেম্বরে কমেছে ২ বিলিয়ন ডলার। যা দেশের ইতিহাসে ১ মাসে সর্বোচ্চ পতন। বাংলাদেশ ব্যাংকের বরাতে বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
এতে বলা হয়, ২০২১ সালের আগস্টের পর থেকে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমছেই। প্রতি মাসে গড়ে ১ বিলিয়ন ডলার করে কমেছে রিজার্ভ। তবে গত সেপ্টেম্বরে প্রথমবারের মতো ২ বিলিয়ন ডলার হ্রাস পেয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, মাত্র এক মাসের ব্যবধানে রিজার্ভ ২ বিলিয়ন ডলার কমে যাওয়া ভালো লক্ষণ নয়। শঙ্কা রয়েছে, শর্ত পূরণে ব্যর্থতার কারণে আইএমএফের ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি স্থগিত করে দেওয়ার। সেক্ষেত্রে দেশের রিজার্ভ বিপর্যয় আরও তীব্র হবে।
রিজার্ভের এই পরিস্থিতির মধ্যেই সেপ্টেম্বরে দেশের রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়েও বড় পতন দেখা গেছে। গত মাসে দেশে রেমিট্যান্স ১৩৪ কোটি ৩৬ লাখ ডলার এসেছে, যা গত ৪১ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন।
খবরে বলা হয়, উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক বাণিজ্যের চাপ, আর্থিক খাতের ঝুঁকি, দুর্বল মুদ্রানীতি, আমদানির ওপর শুল্ক আরোপ, নিম্নগামী রাজস্ব আদায় ব্যবস্থাপনার কারণে দেশের অর্থনীতি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। এর মধ্যে অন্যতম চ্যালেঞ্জ হলো মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনা।
মাত্র ১ মাসের ব্যবধানে রিজার্ভ থেকে ২ বিলিয়ন ডলার কমে যাওয়া মোটেও ভালো লক্ষণ নয় বলে মনে করছেন অর্থনীতি বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, ইতিমধ্যে সরকার আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের শর্ত পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে বৈশ্বিক ঋণদাতা গোষ্ঠীর প্রতিশ্রুত ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি স্থগিত করে দেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সেক্ষেত্রে দেশের রিজার্ভ বিপর্যয় আরও তীব্র হবে।
খেলাপি ঋণ রেকর্ড ১ লাখ ৫৬ হাজার ৩৯ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, যা মোট ঋণের যা ১০ শতাংশেরও বেশি। এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের দাম ১১৩ টাকা ৩০ পয়সায় বেঁধে দিয়েছে। তবে খোলাবাজারে ১২০ টাকা বা এরও বেশি দরে তা কিনতে হচ্ছে মানুষকে।