The news is by your side.

মানবাধিকারকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা বন্ধ হওয়া প্রয়োজন : তথ্যমন্ত্রী

দয়া করে আমাদের গণতন্ত্র শিক্ষা দেবেন না কেউ

0 174

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘মানবাধিকার এখন একটি অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। ব্যবসার সুযোগ না পেয়ে কিছু ক্ষমতাধর দেশ উন্নয়নশীল দেশগুলোকে দমনের জন্য মানবাধিকারকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। মানবাধিকারকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা বন্ধ হওয়া প্রয়োজন।’

আজ সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মায়ের কান্না আয়োজিত জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার ও সংসদ এলাকা কবর অপসারণের দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘কিছু কিছু সংগঠন কাউকে কিল মারলে বিবৃতি দেয়, কাউকে ঘুষি মারলেও বিবৃতি দেয়। অথচ ২০১৩-১৪ সালে যারা মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করেছে, ফিলিস্তিনের শিশুরা যখন ঢিল ছুঁড়ে তার প্রতিবাদে ইজরাইলে সৈন্যরা যখন পাখির মতো শিশুদের শিকার করে, তখন কোনো বিবৃতি নাই। তারা আসলে মানবাধিকারের ব্যবসা করে। তাদের কাছে প্রশ্ন করতে চাই মায়ের কান্না’র কান্না কি আপনাদের কানে পৌঁছে না? আপনারা যদি মানবাধিকার ব্যবসাটা করেন তাহলে মায়ের কান্নার দিকেও আপনারা তাকাবেন।

তিনি বলেন, ‘বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নির্দেশে ২০১২-১৪ সালে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। পেট্রল বোমা নিক্ষেপ করে গাড়ির ভেতর ঘুমন্ত চালক-হেলপারকে পুড়িয়ে অঙ্গার করে দেওয়া হয়েছে। এই হচ্ছে তাদের নির্মমতা, নৃশংসতা। রাজনৈতিক দাবি আদায়ের জন্য পৃথিবীর কোথাও এইভাবে মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়নি।

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান নাস্তা খেতে খেতে ফাঁসির আদেশে সই করতেন। এভাবেই রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে, খুনের ওপর দাঁড়িয়ে দলটির জন্ম হয়েছে। জন্ম থেকে তারা মানবাধিকার লঙ্ঘন করে চলছে।’

সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সরকার নির্বাচন কমিশনকে সব ধরনের সহায়তা করবে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু এবং জনগণের অংশগ্রহণে আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন হবে। সরকার সর্বোচ্চভাবে নির্বাচন কমিশনকে এটি করার জন্য সহযোগিতা করবে।

দয়া করে আমাদের গণতন্ত্র শিক্ষা দেবেন না কেউ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এদেশের মানুষ সামরিক স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়াই সংগ্রাম করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করেছে। আমাদের পার্লামেন্ট ভবনে ঘেরাও করে কেউ হত্যাকাণ্ডের শিকার হয় নাই। এবং আমাদের দেশে পরাজিত প্রার্থীরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পরাজয় মেনে নেয়। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডোনাল্ড ট্রাম্প এখনও পরাজয় মেনে নেননি। যারা গণতন্ত্র শিক্ষা দিতে চান তাদের অনেকের দেশেই গণতন্ত্র নাই।’

খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসা গ্রহণের অনুমতি প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপি বেগম খালেদা জিয়াকে রাজনীতির দাবার গুটি বানিয়েছে, রাজনীতির গিনিপিগ বানিয়েছে। তারা চায় না বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থ হোক। তারা চায় বেগম খালেদা জিয়া আরো অসুস্থ হয়ে থাকুক। তাহলে তারা রাজনীতিটা করতে পারে বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে। বেগম খালেদা জিয়ার দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী হওয়ায় সরকার তার জন্য সর্বোচ্চ ব্যবস্থা করেছে। কিন্তু বিদেশ যাওয়ার ব্যাপারটা আদালতের। আদালতের অনুমতি ছাড়া তো তিনি বিদেশ যেতে পারবেন না। এ নিয়ে দয়া করে রাজনীতি করবেন না।’

তিনি আরো বলেন, ‘দেশে আবার সন্ত্রাস করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। কারণ তারা বুঝতে পেরেছে এভাবে আন্দোলন করে বা হামাগুড়ি দিয়ে, কয়দিন হাঁটা কর্মসূচি বা বসা কর্মসূচি কয়দিন দাঁড়ানো কর্মসূচি- এ সমস্ত কর্মসূচি দিয়ে মানুষকে যে সম্পৃক্ত করা যায় নাই, সে তারা বুঝতে পেরেছে। তাই এখন দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য, দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার জন্য, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে বিশ্ব থেকে ফায়দা লুটতে পারে সেজন্য তারা সন্ত্রাসের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। আপনাদের বলে দিতে চাই, আওয়ামী লীগ রাজপথে আছে এবং রাজপথে থাকবে। কাউকে আর ২০১৩-১৫ সালের মতো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে দেওয়া হবে না। তাদের কঠোরতা দমন করা হবে।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেন, ‘জিয়াউর রহমানের নির্দেশে কয়েক হাজার মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যার ঘটনায় সেসময় বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা তদন্তের দাবি তুলেছিল। সেই তদন্তের ফলাফল আজও আলোর মুখ দেখেনি। আজ বাংলাদেশের নির্বাচনের বিষয়ে কয়েকটি দূতাবাসের কর্মকর্তারা কথা বলছেন। কিন্তু সাতাত্তরের এই নারকীয়তা তাদের মানবাধিকার অনূভূতিকে নাড়া দিচ্ছে না। তারা বিএনপির মুখপাত্রের ভূমিকা পালন করছেন।’

প্রধান বক্তা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী বলেন, ‘গুম খুনের রাজনীতি জিয়াউর রহমানের প্রথম শুরু করেছেন। ভোট কারচুপির রাজনীতি তিনি শুরু করেছেন। হা-না ভোট কোন আমলে হয়েছিল? আজকে তারা গণতন্ত্রের কথা বলে! ২০০৪ সালের একুশে আগস্ট রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা বঙ্গবন্ধুর কন্যাকে হত্যা করার লক্ষ্যে পৃথিবীর নিষ্ঠুরতম গ্রেনেড হামলা হয়েছিল। সেদিন আইভীর রহমানসহ আওয়ামী লীগের ২৪ জনকে হত্যা করা হয়েছিল। সেই দিন হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন তারেক রহমান। বিএনপির রাজনীতিই গুম-খুন ও ভোটভুরি। আওয়ামী লীগের এসব স্বভাব নেই।

মায়ের কান্না সংগঠনের আহ্বায়ক কামরুজ্জামান মিয়া লেলিনের সভাপত্বিতে মানববন্ধনে আরো বক্তব্য রাখেন ১৯৭৭ সালের ২ অক্টোবর ‘সামরিক আদালতের বিচারে’  চাকরিচ্যুত এবং নিহত সামরিক সদস্যদের পরিবারের সদস্যরা।

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.