বাংলাদেশের কিছু পণ্যের বাজার বড় সিন্ডিকেটের দখলে ছিল। কিন্তু গত এক-দেড় বছর ধরে বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যর্থতায় ছোট ছোট অনেক পণ্যের সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। এতে ভোক্তাকে দুই থেকে তিনগুণ বেশি দামে পণ্য কিনতে হচ্ছে। বাজার ব্যবস্থাপনা যে সিন্ডিকেটের দখলে এ কথা কয়েকবার স্বীকারও করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী। তবে সিন্ডিকেটের কারণে বাজার নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার ভারতসহ কয়েকটি দেশ থেকে ডিম আমদানির অনুমতি দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
চার প্রতিষ্ঠানকে চার কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দিয়েছে মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশে প্রতিদিন গড়ে চাহিদা চার কোটি ডিম। অর্থাৎ এক দিনের ডিম আমদানির অনুমতি দিয়েছে সরকার।
বাজারে ডিমের দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে বেশ কিছুদিন ধরেই ডিম আমদানি নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল। গত বৃহস্পতিবার বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি সংবাদ সম্মেলনে আলু ও পেঁয়াজের সঙ্গে ডিমের দামও বেঁধে দেন।
প্রতিটি ডিমের দাম ১২ টাকা নির্ধারণ করে দিয়ে ওই সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বেঁধে দেওয়া দামে ডিম বিক্রি করা না হলে আমদানির অনুমতি দেওয়া হবে।’ এরই ধারাবাহিকতায় ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
ভারতে খুচরা পর্যায়ে ডিমের পিস গড়ে ৫ রুপিতে। সে হিসাবে বাংলাদেশি মুদ্রায় তা ৬ টাকা ৬৫ পয়সা। কিন্তু আমদানিকারকরা বিশাল অঙ্কে আমদানি করবেন। সাধারণত তখন ৩ থেকে ৪ রুপিতে দাম পড়ার কথা। যেহেতু মন্ত্রী নিজেই ১২ টাকা দাম নির্ধারণ করে দিয়েছেন। ৬ থেকে ৭ টাকা দরে আমদানি করা ডিম ১২ টাকায় বিক্রি হলে লাভবান হবে আমদানিকারকরাই।
আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, দেশের বাজারে প্রতিটি ডিম তারা ১০ টাকার কমে বিক্রি করতে পারবে। ভারত থেকে ডিম আনতে সময় লাগতে পারে এক সপ্তাহ।
আমদানি করা ডিমের দাম কী হবে এ প্রশ্নের উত্তরে বাণিজ্য সচিব বলেন, বাজারে যেহেতু ডিমের খুচরা মূল্য ১২ টাকা করে নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, তাই আমদানি করা ডিমও প্রতিটি ১২ টাকার বেশি দামে বিক্রি করা যাবে না। তবে বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, প্রয়োজন হলে আরও ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়া হবে। ডিমের বাজারে সরবরাহ ও মূল্য পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।