২০৩০ সাল নাগাদ বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতে ২৬.৭৮ বিলিয়ন বা দুই হাজার ৬৭৮ কোটি ডলারের রপ্তানি আয় কম হতে পারে।
তীব্র দাবদাহ ও বন্যার কারণে শ্রমিকদের উৎপাদনশীলতা যেমন কমবে তেমনি অনেক পোশাক কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত দুর্যোগে। গত বুধবার প্রকাশিত শ্রোডার্স ও কর্নেল ইউনিভার্সিটির এক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
‘হায়ার গ্রাউন্ড : হাউ ফ্যাশন সাপ্লাই চেইনস আর বিয়িং ইমপেক্টেড বাই এক্সট্রিম হিট অ্যান্ড ফ্লাডিং’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে পূর্বাভাস দেওয়া হয়, জলবায়ু অভিযোজিত পরিস্থিতিতে যদি তৈরি পোশাক খাত কর্মীদের তাপের চাপ কমাতে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়, তাহলে ২০৩০ সাল নাগাদ দেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি দাঁড়াবে ১২২.০১ বিলিয়ন ডলার।
আর ২০৫০ সাল নাগাদ এ আয় দাঁড়াবে ১০৩৮.২২ বিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশ পোশাক উৎপাদক ও রপ্তানিকারক সমিতি গত বছর লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে, ২০৩০ সাল নাগাদ রপ্তানি আয় হবে ১০০ বিলিয়ন ডলার।
২০৩০ সাল নাগাদ বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতে মোট কর্মসংস্থান দাঁড়াবে ৪৮ লাখ ৩০ হাজার। ২০৫০ সাল নাগাদ কর্মীর সংখ্যা দাঁড়াবে ৬৩ লাখ ১০ হাজার। ২০২১ সালে এই খাতে কর্মীর সংখ্যা ছিল ৪২ লাখ ২০ হাজার।
গবেষণায় বলা হয়, তীব্র দাবদাহ ও বন্যার কারণে ২০৩০ সাল নাগাদ রপ্তানি আয় কমে হবে ৯৫.২২ বিলিয়ন ডলার। ২০৫০ সাল নাগাদ এ আয় কমে দাঁড়াবে ৩২৬.৯০ বিলিয়ন ডলার। একই সঙ্গে কর্মীর সংখ্যাও ২০৩০ সাল নাগাদ প্রত্যাশার চেয়ে কমে হবে ৪৫ লাখ ৭০ হাজার এবং ২০৫০ সাল নাগাদ দাঁড়াবে ৫০ লাখ চার হাজার।
ফলে ২০৩০ সাল নাগাদ তৈরি পোশাক খাতে বাংলাদেশ রপ্তানি আয় হারাবে ২১.৯৫ শতাংশ বা দুই হাজার ৬৭৮ কোটি ডলার। ২০৫০ সাল নাগাদ হারাবে রপ্তানি আয়ের ৬৮.৫১ শতাংশ বা ৭১১.৩২ বিলিয়ন ডলার।
প্রতিবেদনে বলা হয়, শুধু বাংলাদেশ নয়, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে এশিয়ার চার দেশের তৈরি পোশাক খাত ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বাংলাদেশ ছাড়া বাকি তিন দেশ হচ্ছে কম্বোডিয়া, পাকিস্তান ও ভিয়েতনাম। ২০৩০ সাল নাগাদ এই চার দেশের রপ্তানি আয় ৬৫ বিলিয়ন ডলার হ্রাস পাবে।
নিবন্ধের লেখকরা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, পোশাকশিল্পের আর্থিক খরচ লক্ষণীয়ভাবে বাড়ছে, এ ছাড়া এই শিল্পের কম্পানিগুলো সম্পর্কে যথেষ্ট তথ্যও পান না বিনিয়োগকারীরা। সুতরাং এই শিল্প এবং তাতে বিনিয়োগকারী—উভয় পক্ষকেই এ গবেষণার ফলকে সতর্কবার্তা হিসেবে নেওয়া উচিত।