প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে ‘শুভ জন্মাষ্টমী’ উপলক্ষে সনাতন সম্প্রদায়ের ধর্মীয় নেতৃবৃন্দের সংগে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
প্রধানমন্ত্রী জন্মাষ্টমীর শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশের মাটিতে যারা জন্ম নিয়েছেন, তারা সবাই এই মাটির সন্তান ও নাগরিক। এ মাটির ওপরই আপনাদের অধিকার। কেনো সংখ্যালঘু বলেন নিজেদের? কে জাতীয় পার্টি, কে বিএনপি, কে আওয়ামী লীগ, কে হিন্দু, কে মুসলমান, কে খ্রিষ্টান- তা দেখে সেবা করি না আমরা। সব রক্তের রঙ লাল। মুক্তিযুদ্ধে সবার রক্ত মিশে গেছে এক স্রোতে। এই দেশ সবার।
বাংলাদেশ ধর্ম নিরপেক্ষ দেশ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন,সংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদে বলা আছে বাংলাদেশ ধর্ম নিরপেক্ষ দেশ। কিন্তু জিয়াউর রহমান ওই অনুচ্ছেদ বাতিল করেছিল। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে সংবিধান সংশোধন করে ধর্মনিরপেক্ষতার ভিত্তি ও অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র আবারও প্রতিষ্ঠা করেছে।
বিএনপির মাধ্যমে অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাংলাদেশ ভূলুণ্ঠিত হয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাংলাদেশ ভূলুণ্ঠিত হয়েছিল বিএনপির মাধ্যমে। বার বার অত্যাচার হয়েছে অসাম্প্রাদায়িক চেতনার ওপর। ভোট দিয়ে দেশসেবার সুযোগ দিয়েছিলেন বলেই, মুক্তিযুদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনা ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, দেশে এখন কোনো ক্ষেত্রে বৈষম্য নেই। কে দক্ষ, কে কাজ করে আমরা সেটিই দেখি। ধর্ম দেখে যোগ্যতা-দক্ষতা দেখে মূল্যায়ন করি না। অর্পিত সম্পত্তি আইন নিয়ে আপনাদের আপত্তি ছিল, তা বাতিল করছি। আপনারা যেভাবে চেয়েছেন সেভাবেই আইন করে দিয়েছি। আরও একটা কাজ করে দিয়েছি- হেবা আইনে আমরা মুসলমানরা যে অধিকারটা ভোগ করি, সেটা হিন্দু ধর্মসহ অন্যান্য সকল ধর্মের জন্য বাস্তবায়ন করে দিয়েছি। আপনার সম্পত্তি যেন অন্য কেউ নয়-ছয় করতে না পারে সেজন্য।
মন্দির রক্ষায় আওয়ামী লীগ ও সরকারের নেয়া বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমরা মানব ধর্মে বিশ্বাস করি। শ্রীকৃষ্ণ কিন্তু তাই চেয়েছিলেন। ঠিক তেমনই আমাদের মহানবী (সা.) সব সময় সব ধর্মের সমানাধিকারের কথা বলেছেন। তিনি সেটা বিশ্বাস করতেন।
সেই চেতনায় বিশ্বাসের কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে কোনো কথা বলা ঠিক না। কারণ এটা হচ্ছে মানুষের বিশ্বাস।আমরা যদি বিশ্বাস করি যে এই বিশ্বটা আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন, তাহলে অবশ্যই এটা বিশ্বাস করতে হবে যে ধর্ম বর্ণ যা-ই থাকুক না কেন কার মধ্যে কী শক্তি আছে তা আমরা জানি না, সৃষ্টিকর্তা জানেন।