The news is by your side.

দেশের টাকা পাচার করে যুক্তরাষ্ট্রে বাড়ি কিনেছেন ২৫২ জন আমলা-পুলিশ

0 161

দেশের অর্থনৈতিক উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার হচ্ছে বিদেশে। দেশের টাকা পাচার করে যুক্তরাষ্ট্রে বাড়িকিনেছেন ২৫২ জন আমলা, পুলিশসহ সরকারী কর্মকর্তা কর্মচারীদের একটি অংশ। সরকারের শীর্ষ মহলে পাঠানো হয়েছে সেই তালিকা।

তালিকা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে ২৫২ জনের মধ্যে অন্তত ৩০-৩৫ জন পুলিশের ওসি (ইন্সপেক্টর) রয়েছেন। এদের কারও একাধিক বাড়িও আছে। যুক্তরাষ্ট্রে কারা বাড়ি কিনেছেন এ নিয়ে কয়েকমাস ধরে তদন্ত করছিল একটি গোয়েন্দা সংস্থা। সেই রিপোর্টটি এখন সামনে এসেছে। এদের সবাই দেশ থেকে টাকা পাচার করে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়েছেন। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

সরকারের সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তা ছাড়াও পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তাও আছেন এই তালিকায়। শুধু এই সরকারের আমলে নয়, বিগত সরকারগুলোর সময়ও আমলা, পুলিশ কর্মকর্তা সরকারী কর্মকর্তারাসহ বিদেশে টাকা পাচার করেছেন।

গত জানুয়ারি মাসে জাতীয় সংসদে বিদেশে বাড়ি গাড়ি আছে এমন আমলাদের তালিকা সংসদে প্রকাশের দাবি করেছিলেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারি। তখন তিনি বলেছিলেন, গণমাধ্যমে এসেছে আমলাদের বিদেশে প্রচুর সম্পদ আছে। আমলাদের মধ্যে কাদের বিদেশে বাড়ি-গাড়ি আছে তাদের তালিকা সংসদে প্রকাশ করা উচিৎ তাদের বরখাস্ত করে বিচারের আওতায় আনা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ও সমাজ অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক বলেন, ‘এই ধরনের তথ্য আমাদের জন্য খুবই উদ্বেগের। তারা জনগণের টাকা বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের টাকা লোপাট করে বিদেশে নিয়ে গেছেন। যারা সমাজের মানুষের কল্যাণে কাজ করবেন তারা যদি নিজেদের উন্নয়নে বাস্ত থাকেন তাহলে দেশের মানুষের উন্নয়ন হবে কীভাবে সংবাদ মাধ্যমে যখন এই ধরনের খবর আসে তখন তাদের প্রতি মানুষের আর শ্রদ্ধাবোধ থাকেনা। এখন সরকারের উচিৎ হবে বিদেশে যারা সম্পদ কিনেছেন তাদের সম্পদগুলো রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া।

এক তথ্যে দেখা গেছে, আমলাদের অর্ধেকের বেশির সন্তান বিদেশে পড়াশোনা করে। আবার পুলিশেরও ঊর্ধ্বতনদের বড় একটা অংশের ছেলে মেয়ে বিদেশে পড়াশোনা করে। যেখানে তারা পড়াশোনা করে সেখানেই তারা স্ত্রীকে পাঠিয়ে বাড়ি কিনে স্থায়ীভাবে থাকার ব্যবস্থা করছে। শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড এমনকি ভারতেও অনেক কর্মকর্তা বাড়ি কিনে রেখেছেন।

বিভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে দেশ থেকে পাচার করা টাকা দিয়ে কানাডায় গড়ে উঠেছে বেগম পাড়া। একইভাবে মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম কর্মসূচির তালিকায়ও বাংলাদেশিরা  শীর্ষ পাঁচে আছে। এ ছাড়া দুবাইয়েও রয়েছে বাংলাদেশিদের টাকা।

গত জানুয়ারি মাসে সংসদ অধিবেশনে জাতীয় পার্টির এমপি মুজিবুল হক চুন্নু বলেছিলেন, বাংলাদেশিদের বিদেশে বাড়ি, গাড়ি, সম্পত্তি সম্পর্কে সংবাদমাধ্যমে যে খবর প্রকাশ হয়েছে তা সত্য কী না বিষয়গুলো তদন্ত হওয়া উচিৎ।

তিনি বলেন, ইদানিং লক্ষ্য করছি টাকা পাচার, বিদেশে ফ্ল্যাট কেনার সংবাদ পত্র-পত্রিকাসহবিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশ হচ্ছে, নিউজ আসছে। দেখলাম আমাদের পররাষ্ট্র সচিব বলছেন, আমাদের বাংলাদেশের মানুষ বিভিন্ন দেশে থাকে তারা এ দেশের সম্পত্তি বিক্রি করে টাকা নিয়ে যাচ্ছেন। সেটা বৈধ পথে নিচ্ছেন না। পররাষ্ট্র সচিব এ বিষয়টি স্বরাষ্ট্র এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন বলে দেখলাম। তিনি বলেন, যারা ইউরোপ-আমেরিকায় থাকে তারা তাদের সম্পত্তি বিক্রি করে বৈধ পথে টাকা নিলে আমাদের আপত্তি নাই।

Leave A Reply

Your email address will not be published.