৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রে লিগ্যাল স্ট্যটাস না পাওয়া প্রযুক্তি-কর্মীর ১০ হাজার জন কানাডায় স্থায়ী বসতি গড়ার আবেদন করেছেন। ১৬ জুলাই কানাডার ইমিগ্রেশন দফতর পরীক্ষামূলকভাবে একটি কর্মসূচি চালু করে। এতে প্রযুক্তি-কর্মীরা আবেদনের পরই কানাডায় ওয়ার্ক পারমিটের পথ বেয়ে ছয় মাসের মধ্যেই স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতিও পাবেন।
উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন প্রযুক্তি কর্মীরা এইচ-ওয়ানবি ক্যাটাগরি ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে আসতে পারেন। তারা তিন বছর পর্যন্ত কাজের অনুমতি পান। এসব কর্মী যদি রীতি অনুযায়ী কাজ করেন তাহলে আর তিন বছর বসবাসের সুযোগ পেয়ে আসছেন। তবে এসব কর্মীর স্ত্রী-সন্তানেরা বসবাসের ক্ষেত্রে জটিল প্রশ্নের সম্মুখীন হচ্ছেন। শুধু তাই নয়, যুক্তরাষ্ট্রে নতুন চালু/স্থাপিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের স্পন্সরশিপ পাওয়াও কষ্টসাধ্য। একইভাবে বিদেশ থেকে আনা অর্থে নয়া ব্যবসা চালুর পর সেখানেই কর্মসংস্থানের বিদ্যমান সুযোগ নিতেও নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
এইচ-ওয়ান বি ভিসাধারীরা যদি লে-অফের ভিকটিম হন তাহলে ৬০ দিনের মধ্যেই নতুন কাজ যোগদান করতে হয় ভিসা অব্যাহত রাখতে। অন্যথায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কারের হুমকিতে নিপতিত হন ওইসব দক্ষ কর্মী।
অপরদিকে, কানাডায় লে-অফের শিকার হলেও নতুন কাজ পেতে বেশী অপেক্ষা করতে হয় না। এছাড়া, সহজশর্তেই নয়া ব্যবসা চালু করাও সম্ভব হয়। স্ত্রী/স্বামী পছন্দের কাজ করতে পারেন এবং উচ্চ শিক্ষা গ্রহণেও কোনও বাধা নেই কানাডায়। এই অবস্থায় ১৬ জুলাইয়ের পরীক্ষামূলক কর্মসূচিটি মন্ত্রের মত কাজ করায় কানাডা প্রশাসন চাচ্ছে টেক সেক্টরের চাহিদা অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রে এইচ-ওয়ানবি ভিসাধারীদের অধিক সংখ্যায় স্বাগত জানাতে।
কানাডা টেক সেক্টরে কর্মীর সংখ্যা ১২ লাখের মতো। সেস্থলে মাত্র ১০ হাজার নতুন কর্মী যোগ হওয়ায় কোনও সমস্যা দূরের কথা, তেমন কোনও চাপ পড়ারও আশঙ্কা নেই বলে ইমিগ্রেশন দফতরের পদস্থ কর্মকর্তারা গণমাধ্যমে মন্তব্য করেছেন। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, টেক সেক্টরসমূহ কানাডার অর্থনীতিতে ৫% অবদান রাখছে। অর্থাৎ এই অর্থের পরিমাণ ১০৪.৫ বিলিয়ন ডলারের মত। এ তথ্য কম্প্যুটিং টেকনোলজি ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের। এই কর্মী বাহিনীর মধ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সেক্টরের ২২ হাজার কর্মীও রয়েছেন শুধুমাত্র টরন্টো এলাকাতেই।
স্মরণ করা যেতে পারে, নানাবিধ কারণে গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি সেক্টরে বেশ কিছু কর্মীকে লে-অফ দেওয়া হয়েছিল। সেসব বিদেশি দক্ষ শ্রমিক কানাডায় আবেদনের সুযোগ পেয়েছেন এবং ইতোমধ্যেই তারা স্থায়ীভাবে বসতি শুরু করেও দিয়েছেন পরিবারসহ। অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রের জটিল রীতির ভিকটিম হয়ে যেসব মেধাবি কর্মী অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখোমুখি হয়েছিলেন তাদেরকে আশ্রয় দিয়ে কানাডা তার উৎপাদন-ক্ষমতায় নয়া মাত্রা যোগ করেছে বলে অভিজ্ঞজনেরা মন্তব্য করছেন।