ছয়দিনের টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে বান্দরবানের লামায় ভয়াবহ বন্যার দেখা দিয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে খাবারের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। অফিস-আদালতসহ সরকারি সকল দপ্তরসহ তলিয়ে গেছে হাট-বাজার, বাড়ি-ঘর ও আবাদি জমি।
বিভিন্নস্থানে পাহাড় ধসের ঘটনাও ঘটেছে। এতে চাপা পড়েছে বেশকিছু ঘরবাড়ি। পাহাড়ি ঢলে রাস্তা ডুবে যাওয়ায় লামা-আলীকদমের সঙ্গে দেশের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে মাতামুহুরী নদীর পানি।
লামা পৌর শহরের নয়াপাড়া, টিএন্ডটি পাড়া, চেয়ারম্যান পাড়া, পাহাড় পাড়া, উপজেলা পরিষদের আবাসিক এলাকা, বাসস্ট্যান্ড এলাকায় কয়েক শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। লামা-আলীকদম সড়কের লাইনঝিরি, ছাগলখাইয়া, শিলেরতুয়া, কেরারঝিরি, দরদরাঝিরি এলাকায় রাস্তা পানির নিচে ডুবে গেছে। এতে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। অতিবৃষ্টির ফলে মাতামুহুরী নদীসহ লামার সবকয়টি খালে বিপদসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
লামা পৌর শহরে চেয়ারম্যান পাড়া ও নয়া পাড়া, ফাইতং ইউনিয়নের বড় মুসলিমপাড়া এবং সরই আন্ধারি এলাকায় কয়েকস্থানে পাহাড় ধসের খবর পাওয়া গেছে। রোববার সকাল থেকে কখনো হালকা কখনো ভারী বৃষ্টি হচ্ছে।
লামা এনজেড একতা মহিলা সমিতির নির্বাহী পরিচালক আনোয়ারা বেগম বলেন, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য ফাতেমা পারুল ও এনজেড একতা মহিলা সমিতির উদ্যোগে লামায় পানি বন্দিদের মধ্যে শুকনো খাবার ও খিচুড়ি বিতরণ করা হয়েছে। পানিবন্দি মা ও শিশু উদ্ধার করে নিরাপদে সরিয়ে আনতে কাজ করছে সংস্থার সাহায্যকর্মীরা।
লামা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল বলেন, ভয়াবহ বন্যায় লামা ‘কার্যত বিচ্ছিন্ন’ হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন জায়গায় মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা হচ্ছে। পৌরশহরের অনেক মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে হোটেলে ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। শনিবার রাত থেকে উপজেলা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ইন্টারনেট সেবাও বন্ধ রয়েছে। ফলে যোগাযোগের ক্ষেত্রে চরম সমস্যা হচ্ছে।