ধর্মঘটের মুখে পড়ে অচল হয়ে পড়েছে হলিউড। বড় সম্প্রচার কোম্পানিগুলোর রাজস্ব ভাগাভাগিতে ন্যায্য হিস্যা ও বেতন বৃদ্ধিসহ নানা দাবিতে এবার ধর্মঘটে নেমেছেন হলিউডের অভিনয় শিল্পী ও চলচ্চিত্রের কলাকুশলীরা। আমেরিকাজুড়ে অধিকাংশ চলচ্চিত্র ও টিভি প্রোডাকশনের নির্মাণ সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায়।
হলিউডের অভিনেতা–অভিনেত্রী ও কলাকুশলীদের সংগঠন দ্য স্ক্রিন অ্যাক্টরস গিল্ডের (স্যাগ) প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজার সদস্য আমেরিকান সময় বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকেই কর্মবিরতি পালন শুরু করেন।
অনলাইনে প্রকাশিত এসএজির এক নোটিশে বলা হয়, অভিনয়, নাচ ও গানের সঙ্গে সম্পৃক্ত শিল্পী, স্টান্ট পারফরমার এবং অ্যানিমেশন নির্মাতা ও ফিল্ম চিত্রগ্রহনকারী কর্মীদের ক্ষেত্র কর্মবিরতি পালন বাধ্যতামূলক। একই সঙ্গে চলচ্চিত্রের নির্মাণ ও প্রোমোশনাল কার্যক্রমে যুক্ত অন্যান্য শিল্পীদের ক্ষেত্রেও এই আদেশ প্রয়োজ্য হবে।
এর আগে গত মে মাস থেকেই ধর্মঘট পালন করছিলেন চলচ্চিত্র পান্ডুলিপি লেখকদের সংগঠন রাইটার্স গিল্ড অব আমেরিকা (ডব্লিউজিএ)। সবমিলিয়ে গত ৬৩ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় ধর্মঘটের মুখে পড়েছে বিশ্বের সর্ববৃহৎ ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি হলিউড। যে কারণে হলিউডের এই ধর্মঘটকে ঐতিহাসিক হিসেবে আখ্যায়িত করা হচ্ছে। কারণ ১৯৬০ সালের পর কখনো একযোগে ধর্মঘট পালন করেনি হলিউডের প্রভাবশালী এ দুই সংগঠন।
ধর্মঘট শুরু হওয়ার খবর পেয়ে লন্ডনে চলচ্চিত্র পরিচালক ক্রিস্টোফার নোল্যানের ওপেনহেইমার ছবির মহরত অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে নিজেদের প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন ছবিটির সঙ্গে যুক্ত একঝাঁক তারকা। যাদের মধ্যে রয়েছেন ছবির মূল চরিত্রে অভিনয়ে চুক্তিবদ্ধ তারকা সিলিয়ান মারফি, ম্যাট ডামন, ফ্লোরেন্স পাফ ও এমিলি ব্লান্ট।
স্যাগের ডাকা ধর্মঘট বৃহস্পতিবার লস অ্যাঞ্জেলেস সময় বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় শুরু হয়। মার্কিন সময় শুক্রবার সকালে স্যাগ সদস্যদের ক্যালিফোর্নিয়ায় অবস্থিত হলিউডের বড় নির্মাতা ও সম্প্রচার কোম্পানিগুলোর সদর দপ্তরের সামনে পিকেটিং করার কথা রয়েছে। যেগুলোর মধ্যে রয়েছে নেটফ্লিক্স, প্যারামাউন্ট, ওয়ার্নার ব্রাদার্স ও ডিজনি।
বৃহৎ সম্প্রচার কোম্পানিগুলোর আয় থেকে ন্যায্য হিস্যা, ভাল কর্মপরিবেশ ও অধিক বেতন, শিল্পীদের মুভি ও টিভি নাটক, সিরিয়ালে অভিনয় ও কাজে চুক্তিবদ্ধ করার ক্ষেত্রে উপযুক্ত শর্তাবলী নির্ধারণসহ আরও কিছু দাবি আদায়ে এ ধর্মঘটে যায় স্যাগ। এসবের মধ্যে রয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ও কম্পিউটার ভিত্তিক প্রোগ্রাম ব্যবহার করে অভিনেতা–অভিনেত্রী, শিল্পীদের মুখ ও কণ্ঠের প্রতিরুপ তৈরি না করা। যেন অভিনেতা–অভিনেত্রী, শিল্পীদের অনুপস্থিতে বিকল্প পথে তাদের ব্যবহার করে চলচ্চিত্র ও টিভি প্রোডাকশন নির্মাণ করা না হয়। এছাড়া চলচ্চিত্র শিল্পীদের স্বনির্মিত অডিশনের ভিডিও টেপ নেওয়ার প্রথা বন্ধ করা। কারণ স্বনির্মিত অডিশন ভিডিও টেপ তৈরি করতে শিল্পীদের অযথা প্রচুর অর্থ ব্যয় হয়।