বিশ্বকাপ ফুটবলে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শিরোপার মালিক জার্মানি। সবচেয়ে ধারাবাহিক দলও তারাই। বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি সেমিফাইনাল খেলেছে তারাই। অথচ ২০১৪ বিশ্বকাপে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরের দুই আসরে গ্রুপ পর্বও পার হতে পারেনি জার্মানরা। দুর্দান্ত জার্মানদের এই পতনের কারণ খুঁজছেন দেশটির ফুটবল সংশ্লিষ্টরা। তেমনই কারণ খুঁজতে গিয়ে চাঞ্চল্যকর দাবি করেছেন কিংবদন্তি বাস্তিয়ান শোয়েনস্টেইগার। ২০১৪ বিশ্বকাপ জয়ী জার্মান ফুটবলার বাস্তিয়ান শোয়েনস্টেইগার দায়ী করছেন পেপ গার্দিওলাকে।
অনেকেই ভাবতে পারেন গার্দিওলা কীভাবে দায়ী। সে তো কখনো জার্মান দলের কোচ ছিলেন না। জাতীয় দলের না হলেও তিন বছর গার্দিওলা কোচ ছিলেন বায়ার্ন মিউনিখের। ২০১৩-১৬ পর্যন্ত। জার্মান ক্লাব বায়ার্নের বেশি ভাগ খেলোয়াড় খেলে থাকেন জাতীয় দলে। সেই সময়টাতেই জার্মান ফুটবল নিজেদের স্বকীয়তা হারিয়েছে বলে মনে করেন শোয়েনস্টেইগার।
গত কয়েক বছরে জার্মানির ধারাবাহিক ব্যর্থতার দায় গার্দিওলার ওপর চাপিয়ে শোয়েইনস্টেইগার বলেন, ‘যখন পেপ গার্দিওলা বায়ার্ন মিউনিখের দায়িত্ব নিয়ে এ দেশে আসেন, তখন সবাই বিষয়টা বুঝতে পেরেছিল। সবাই বুঝেছিল যে আমাদেরকেও এখন শর্ট পাস এবং তেমন (গার্দিওলার স্টাইলের) ফুটবল খেলতে হবে। এর ফলে ব্যাপারটা এমন হলো যে আমরা নিজেদের স্বকীয়তা হারিয়ে ফেললাম।’
জার্মানি ফুটবল দলের পরিচিতি লড়াকু মানসিকতার জন্য। হারার আগে হার না মানার মানসিকতাই তাদের জয়ের রহস্য। অথচ সেই জার্মানি লম্বা সময় ধরে জিততেই ভুলে গেছে। ২০১৮ ও ২০২২ বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বও পার হতে পারেনি দলটা। সর্বশেষ ১৫ ম্যাচে মাত্র ৩টিতে জয় পেয়েছে চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। কাতার বিশ্বকাপের পর তো ৫ ম্যাচ খেলে জয় পেয়েছে মাত্র ১টিতে। সেই জয়ও খর্ব শক্তির পেরুর বিপক্ষে। এই জার্মান কিংবদন্তি মনে করেন, লড়াকু মানসিকতা হারিয়ে ফেলাতেই ধুকছে জার্মানি।
শোয়েইনস্টেইগার বলেন, ‘আমার মনে হয়, বেশির ভাগ দেশ জার্মানিকে দেখে লড়াকু হিসেবে। আমরা শেষ পর্যন্ত লড়াই করতে পারি। কিন্তু গত সাত–আট বছরে আমরা নিজেদের সেই শক্তি হারিয়ে ফেলেছি। আমরা সব ভুলে গেলাম এবং নিজেদের মধ্যে সুন্দরভাবে বল দেওয়া–নেওয়ায় মনোযোগী হয়ে পড়লাম। এটা একটা কারণ।’
অবশ্য শোয়েইনির কথার বিরোধিতা করতে পারেন গার্দিওলার সমর্থকরা। জার্মানি যখন বিশ্বকাপ জেতে তখন বায়ার্নের কোচের দায়িত্বে ছিলেন গার্দিওলাই। এরপর ২০১৬ সালে তিনি বায়ার্ন ছাড়ার পর দুটি বিশ্বকাপে জার্মানি গ্রুপ পর্বই পার হতে পারেনি।
বার্সেলোনার সাবেক কোচ বিদায়ের পর পেরিয়ে গেছে আরও ৬ বছর। কেউ চাইলে তাই প্রশ্ন তুলে বলতেই পারেন যে এত লম্বা সময় পেয়েও কেন নিজেদের ফুটবলকে সঠিক পথে আনতে পারছে না জার্মানি? তবে কি সমস্যা অন্য কোথাও!