কেরিয়ার শুরুর আগেই ছন্দপতন। অডিশন দেওয়ার পরে একের পর এক হিন্দি ছবি থেকে বাদ পড়ছিলেন প্রিয়ঙ্কা চোপড়া। প্রিয়ঙ্কার মুখের আদল দেখেই নাকি তাঁকে ফিরিয়ে দিচ্ছিলেন বলিপাড়ার নামী পরিচালকেরা।
সম্প্রতি ওটিটি প্ল্যাটফর্মে মুক্তি পেয়েছে ‘সিটাডেল’ ওয়েব সিরিজ়। সেই সিরিজ়ের প্রচারে একটি শোয়ে এসে তাঁর কেরিয়ারের অন্ধকার সময়ের উল্লেখ করেন অভিনেত্রী নিজেই।
২০০৩ সালে ‘দ্য হিরো: লভ স্টোরি অফ এ স্পাই’-এ অভিনয়ের মাধ্যমে বলিপাড়ায় পা রাখেন প্রিয়ঙ্কা। অনিল শর্মার পরিচালনায় হিন্দি ছবিতে প্রথম বার অভিনয় করতে দেখা যায় নায়িকাকে। প্রথম ছবিতেই সানি দেওল এবং প্রীতি জ়িন্টার সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেয়েছিলেন প্রিয়ঙ্কা।
তবে প্রিয়ঙ্কার অভিনয় জীবনের শুরু দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রির হাত ধরে। ২০০২ সালে তামিল ছবি ‘থামিজান’-এ অভিনয় করেছিলেন তিনি। কিন্তু কেরিয়ারের শুরুতেই বাধা পেয়েছিলেন অভিনেত্রী।
শোয়ে এসে প্রিয়ঙ্কা জানান যে, কেরিয়ার শুরুর মুখে তাঁর নাকের হাড়ে সমস্যা লক্ষ করেন চিকিৎসকেরা। নাকে অস্ত্রোপচারও হয় নায়িকার। কিন্তু অস্ত্রোপচারে ত্রুটির কারণে বিপদে পড়ে প্রিয়ঙ্কার কেরিয়ার।
প্রিয়ঙ্কা জানান, ২০০০ সালের শুরুর দিকে তাঁর নাকে এমন সমস্যা ধরা পড়ে যে চিকিৎসকেরা জানিয়ে দিয়েছিলেন, অস্ত্রোপচার না করে এর সমাধান মিলবে না। চিকিৎসকদের নির্দেশ অনুযায়ী অস্ত্রোপচারও করিয়ে ফেলেন নায়িকা। কিন্তু সমস্যা হয় তার পরেই।
প্রিয়ঙ্কা ভেবেছিলেন যে, অস্ত্রোপচারের পর তিনি আবার অডিশন দেওয়া শুরু করবেন। কেরিয়ার নিয়েই ব্যস্ত হয়ে পড়বেন তিনি। কিন্তু হল ঠিক তার বিপরীত।
অস্ত্রোপচারের পর মুখের আদল বদলে গিয়েছিল প্রিয়ঙ্কার। তিনি যেখানেই কাজের জন্য যাচ্ছিলেন, তাঁকে সেখান থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছিল।
এমনকি, যে ছবি নির্মাতারা প্রিয়ঙ্কাকে কাজ দেবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলেন, তাঁরাও নাকি মুখের অবস্থা দেখে ফিরিয়ে দেন নায়িকাকে। প্রিয়ঙ্কা বলেন, ‘‘তিনটে ছবিতে কাজ করার কথা ছিল আমার। কিন্তু আমার মুখ দেখার পরেই সকলে আমাকে ফিরিয়ে দিচ্ছিলেন।’’
পর পর তিনটি ছবি থেকে বাদ পড়েছিলেন প্রিয়ঙ্কা। নায়িকার দাবি, অনিল ছাড়া আর কেউ তাঁকে কাজ দিতে চাননি। কেরিয়ারের শুরুতেই এই বাধার সম্মুখীন হবেন তা ভাবতে পারেননি প্রিয়ঙ্কা।
বলিপাড়ার ছবি নির্মাতারা প্রিয়ঙ্কাকে ফিরিয়ে দিচ্ছিলেন বলে মানসিক অবসাদে ভুগতে শুরু করেছিলেন অভিনেত্রী। জীবনের এই মুহূর্তটিকে একটি ‘অন্ধকার অধ্যায়’ বলে উল্লেখ করেছেন প্রিয়ঙ্কা।
নিজেকে আয়নায় দেখেও নাকি ভয় পেতেন প্রিয়ঙ্কা। তবে এই কঠিন সময়ে অভিনেত্রীর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন তাঁর বাবা। প্রিয়ঙ্কা বলেন, ‘‘আমার বাবা আমাকে সব সময় বলত আমার কেরিয়ার শেষ হয়ে যায়নি। আমি যখনই ভয় পেতাম, তখনই আমায় সাহস জোগাত বাবা।’’
প্রিয়ঙ্কা জানান, তাঁর বাবা সাহস জুগিয়েছিলেন বলে এমন পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছিলেন তিনি। তার পর দীর্ঘকালীন চিকিৎসার মধ্যে দিয়ে গিয়েছিলেন প্রিয়ঙ্কা। শেষমেশ নাকের সমস্যা সারিয়ে মুখ বদলেও ফেলেছিলেন তিনি।