The news is by your side.

পদ্মা সেতু পাড়ি দিতে ভোরের আলো ফোটার আগেই জড়ো হন মোটরসাইকেল আরোহীরা

0 174

‘ঈদের আগেই আমাদের ঈদের খুশি শুরু হয়ে গেছে। গতকাল সারা রাত ঘুমাইনি। কখন সকাল হবে, পদ্মা সেতুতে উঠে বাড়ি যাব। ভোরে মাওয়া এসেছি। টোল প্লাজায় এসেই অল্প সময়ের মধ্যে সেতুতে ওঠার সুযোগ পেয়েছি। এই প্রথম সড়কপথে কোনো ভোগান্তি ছাড়া বাড়ি যাচ্ছি।’

কথাগুলো বলছিলেন ঢাকার মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা মোহাম্মদ সোহেল। স্ত্রী ও এক সন্তানকে নিয়ে মোটরসাইকেলে পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়ে ঈদ করতে গ্রামের বাড়ি বরিশালে যাচ্ছিলেন তিনি। পদ্মা সেতু দিয়ে দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোতে যাতায়াত করা মোটরসাইকেল আরোহীদের চোখমুখে এমন স্বস্তি দেখা গেছে।

দীর্ঘ অপেক্ষার পর আজ বৃহস্পতিবার ভোর ৫টা ৫৫ মিনিটের দিকে টোল আদায় করে পদ্মা সেতু পাড়ি দেওয়ার সুযোগ করা হয় মোটরসাইকেল আরোহীদের। তবে ভোরের আলো ফোটার আগে থেকেই মাওয়া টোল প্লাজা এলাকায় জড়ো হতে থাকেন মোটরসাইকেল আরোহীরা। পদ্মা সেতুর উত্তর থানা থেকে টোল প্লাজা পর্যন্ত মোটরসাইকেলের দীর্ঘ সারি তৈরি হয়। প্রথমে একটি বুথ দিয়ে টোল আদায় করা হচ্ছিল। মোটরসাইকেলের চাপ থাকায় পরবর্তীকালে দুটি বুথের মাধ্যমে টোল আদায় করা হয়।

পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ রজ্জব আলী প্রথম আলোকে বলেন, যানবাহন আসামাত্রই টোল পরিশোধ করে সেতু পারি দিতে পারছে। কোথাও কোনো চাপ নেই। ভোর থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত তিন হাজারের বেশি মোটরসাইকেল পদ্মা সেতু দিয়ে পারাপার হয়েছে। সকালের দিকে মোটরসাইকেলের অনেক চাপ ছিল। তখন দুটি বুথের মাধ্যমে টোল আদায় করা হয়েছে। তবে সকাল আটটার পর চাপ কমতে থাকলে আবার একটি বুথ দিয়ে টোল আদায় করা হচ্ছে। যদি আবারও চাপ বাড়ে, সে ক্ষেত্রে দুটি বুথে টোল আদায় করা হবে।

আজ সকাল সাড়ে সাতটায় পদ্মা উত্তর থানা এলাকায় দেখা যায়, সেখান থেকে সেতুর টোল প্লাজা পর্যন্ত মোটরসাইকেলের দীর্ঘ সারি। সবার চোখেমুখে বাড়িতে ফেরার উচ্ছ্বাস। ধীরে ধীরে মোটরসাইকেলগুলো মাওয়া টোল প্লাজার দিকে এগোচ্ছিল। মোটরসাইকেল আরোহীদের বিভিন্ন ধরনের দিকনির্দেশনা দিচ্ছিলেন পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা। এ সময় যাত্রীদের অনেক পুলিশকে হাসিমুখে সালাম দিচ্ছিলেন। পুলিশও তাঁদের ঈদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছিলেন।

টোল প্লাজার সামনে স্বামীর মোটরসাইকেলে বসেছিলেন তামান্না আক্তার। রাজধানীর মিরপুর থেকে ঈদ করতে গ্রামের বাড়ি বরিশালের গৌরনদীতে যাচ্ছেন তাঁরা। তীব্র রোদ আর গরম উপেক্ষা করেই তাঁরা বাড়িতে যাচ্ছেন। তবে গরমের বিরক্তি চাপা পড়েছে মোটরসাইকেলে পদ্মা সেতু পাড়ি দেওয়ার আনন্দে। তামান্না বলেন, ‘মোটরসাইকেলে চড়ে এটিই প্রথম আমার বাড়ি যাওয়া। পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল শুরু হওয়ায় আমরা খুব খুশি। তবে আমরা চাই, দু-একজনের ভুলে যেন আবার পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ হয়ে না যায়।’

রাজধানীর ডেলটা মেডিকেল কলেজের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী মো. শাকিল ফজরের নামাজের পরপরই ঢাকা থেকে রওনা দিয়েছেন। মোটরসাইকেলে তিনি পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়ে খুলনায় যাবেন। শাকিল বলেন, ‘পদ্মা সেতুতে বাইক পারাপার শুরু না হলে অনেক ভোগান্তিতে পড়তে হতো। মানিকগঞ্জ দিয়ে ঘুরে খুলনায় যেতে হতো। পদ্মা সেতু দিয়ে এখন খুব সহজেই অল্প সময়ের মধ্যে গ্রামের বাড়িতে যাব। সেখানে ঈদ করব। এর চেয়ে বেশি খুশি মনে আর কিছুই হতে পারে না।’

পদ্মা উত্তর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. জয়নাল আবেদীন প্রথম আলোকে বলেন, আজ ভোরের আলো ফোটার আগেই মোটরসাইকেল আরোহীরা সেতু এলাকায় আসতে শুরু করেন। এ সময় পদ্মা উত্তর থানা থেকে সেতুর টোল প্লাজা পর্যন্ত ২০০ মিটার এলাকায় মোটরসাইকেলের দীর্ঘ সারি ছিল। মোটরসাইকেল আরোহীরা নিয়ম মেনে টোল পরিশোধ করেন। ভোরে চাপ থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চাপ কমতে শুরু করেছে।

 

 

 

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.