অন্যের অধীনে কাজ করা তাঁর মোটেও পছন্দ নয়। নিশ্চিন্ত জীবিকা ছেড়ে হয়েছেন পর্নস্টার। নিজের ইচ্ছাতে নিজের বিছানায় শুটিং করেন। ইচ্ছা না হলে ছেলেদের সঙ্গে সময় কাটান।
১০টা-৫টার চাকরিতে মন বসত না। অন্য রকম পেশা চেয়েছিলেন। সেই চাওয়া পূরণও করেছেন। তবে সে জন্য কম খেসারত দিতে হয়নি তরুণীকে। তবু দুই ছেলেকে নিয়ে তিনি আজ সুখী। কারণ লক্ষ্য পূরণ হয়েছে। লুসি ব্যাঙ্কস এখন সফল পর্নস্টার।
ব্যাঙ্কে চাকরি করে যা রোজগার করতেন লুসি, এখন তার থেকে চার গুণ রোজগার তাঁর। ছেলেদের মানুষ করার জন্য কারও মুখাপেক্ষী নন। দুই সন্তানকে নিয়ে সুখের জীবন। যেমন জীবনযাপন করতে চেয়েছিলেন, তেমনই পেয়েছেন তরুণী।
লুসি অস্ট্রেলিয়ার পারথের বাসিন্দা। কর্পোরেটের চাকরি ছেড়ে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ভিডিয়ো তৈরি করেন তিনি এখন। আর এর কাজটা দারুণ উপভোগ করেন। লুসির দাবি, নতুন পেশায় আসার পর থেকে অনেক ভাল মা হয়েছেন তিনি।
১৭ বছর বয়সে ব্যাঙ্কের চাকরি পেয়েছিলেন লুসি। সেই চাকরি হঠাৎ কিসের তাগিদে ছাড়লেন তিনি? নেপথ্যে রয়েছে দীর্ঘ এক গল্প।
লুসির বাবা, মা থাকতেন ভিন দেশে। লুসি পারথে থেকেই পড়াশোনা করতেন। নিজের খরচ নিজেকে চালাতে হত। বাবা-মায়ের থেকে কোনও সাহায্য পেতেন না।
সারা সপ্তাহে স্কুলে পড়াশোনা করতেন লুসি। সপ্তাহান্তে কাজ করতেন। সেই টাকা দিয়ে বাড়ি ভাড়া, পড়ার খরচ মেটাতেন। তাই ছোট থেকেই লুসি ছিলেন স্বাবলম্বী।
একটি সাক্ষাৎকারে ৩২ বছরের লুসি জানান, তখন তাঁর ১৭ বছর বয়স। একটি বিজ্ঞাপনে দেখেছিলেন, ব্যাঙ্কে কর্মী নিয়োগ করা হবে। যদিও ব্যাঙ্কে কাজ করার কোনও অভিজ্ঞতা ছিল না লুসির। তবু চাকরির দরকার ছিল। সে কারণেই ইন্টারভিউ দিতে গিয়েছিলেন তিনি।
লুসি জানিয়েছেন, অঙ্কে মোটেও ভাল ছিলেন না। হিসাবেও ছিলেন কাঁচা। তবু তাঁর মতো এক কিশোরীকে চাকরিটা দিয়েছিলেন ব্যাঙ্কের কর্তারা। কেন? লুসির ধারণা, তাঁর আত্মবিশ্বাস দেখেই চাকরিটা দেওয়া হয়েছিল।
লুসির কাছে ওই ব্যাঙ্কের চাকরি ছিল স্বপ্নের মতো। যদিও সেই স্বপ্ন ভেঙে গিয়েছিল। কয়েক বছর পরেই সেই চাকরি ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন লুসি।
লুসি জানান, ব্যাঙ্কের কাজে অসম্ভব চাপ ছিল। বড়সড় লক্ষ্য স্থির করা থাকত। যার জেরে নাভিশ্বাস উঠত কর্মীদের। লুসির কথায়, ‘‘টাকা ফেরত দিতে পারবেন না জেনেও কিছু লোককে ঋণ দেওয়া হত। এই কাজে আমাদের মতো কর্মীদের বাধ্য করা হত।’’
লুসি আরও জানিয়েছেন, তিনি গ্রাহকদের ফোন করে গৃহঋণের জন্য অনুরোধ করতেন। গ্রাহকরা বন্ধক রেখে ঋণের আবেদন করতেন। সেই ঋণের আবেদন আবার অনুমোদন করতেন ম্যানেজার। এ ভাবে বার্ষিক লক্ষ্যপূরণ করত ব্যাঙ্ক।
লুসি জানান, এক বার ম্যানেজারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিলেন। সে জন্য তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার হুঁশিয়ারি দেন কর্তারা। লুসির এ ভাবে মানুষকে ঠকানোর কাজ ভাল লাগত না। ধীরে ধীরে মনে হতে থাকল, অন্য কিছু করা দরকার।
চাকরি নিয়ে যখন টানাপড়েন চলছে, তখনই স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয় লুসির। দুই সন্তানকে মানুষ করার দায়িত্বও তাঁর উপর এসে চাপে। লুসি ভাবতে থাকেন, কী ভাবে এই ব্যাঙ্কের চাকরি ছাড়বেন অথচ রোজগার বজায় থাকবে।
সে সময় লুসির এক বন্ধু এগিয়ে আসেন। তিনি একটি সোশ্যাল প্লাটফর্মে পর্ন ভিডিয়ো পোস্ট করে রোজগার করতেন। বন্ধুর থেকে তা শুনে লুসির সামনে নতুন দরজা খুলে যায়।
প্রথমে যদিও লুসি বুঝতে পারেননি এই ওয়েবসাইট ঠিক কী ভাবে কাজ করে। কী করতে হয় সেখানে। ধীরে ধীরে বুঝতে পারেন। তখন আর পিছিয়ে আসেননি লুসি। কারণ দুই সন্তানের দায়িত্ব ছিল তাঁর কাঁধে। ওই ওয়েবসাইটে নিজের পর্ন ভিডিয়ো পোস্ট করতে শুরু করেন লুসি।
এই কাজটাও প্রথমে সহজ ছিল না। লুসি একটি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, মাত্র ২২ বছর বয়সে বিয়ে হয়েছিল তাঁর। কখনও স্ট্রিপ ক্লাবে যাননি তিনি। কী ভাবে নিজেকে আকর্ষণীয় করে তুলতে হয়, তাও জানতেন না।
কিন্তু খুব তাড়াতাড়ি এ সব ছলাকলা শিখে নেন। তার পর এই জগৎটাকে ভাল লাগতে শুরু করে তাঁর। গত চার বছর ধরে এই পর্ন ভিডিয়ো পোস্ট করার কাজই করছেন লুসি। নিজের কাজের জন্য পুরস্কৃতও হয়েছেন।
এই কাজে করে সংসার, সন্তানদের সামলাতেও কোনও সমস্যা হয় না লুসির। তিনি জানিয়েছেন, ছেলেদের স্কুলে পাঠিয়ে পর্ন ছবি শুট করেন। তার পর আবার ছেলেদের স্কুল থেকে নিয়ে আসেন। তাদের যথেষ্ট সময়ও দিতে পারেন তিনি।
নতুন এই পেশায় প্রবেশের পর থেকে আত্মবিশ্বাসও অনেক বেড়েছে লুসির। সে কথা জানিয়েছেন নিজেই। এখন নিজেকে এবং নিজের শরীরকে আরও বেশি ভালবাসেন তিনি। কীভাবে সুন্দর দেখাতে হয়, সে সব বুঝে ফেলেছেন।
ছেলেদের খরচ চালাতেও এখন কোনও সমস্যা হয় না। মাসে মাসে প্রচুর টাকা রোজগার করেন। শুধু ওই পর্ন ওয়েবসাইট নয়, আরও বিভিন্ন প্রযোজনা সংস্থা থেকেও অনেক প্রস্তাব পেয়েছেন লুসি। তবে তিনি রাজি হননি।
কেন পর্ন ছবি করতে রাজি হননি লুসি? তিনি জানিয়েছেন, আমেরিকার প্রযোজনা সংস্থা থেকেও প্রস্তাব এসেছিল তাঁর কাছে। কিন্তু তিনি যাননি। কারণ তা হলে ছেলেদের লালনপালনে সমস্যা হত। এখন তিনি ঘরে থেকেই পর্ণ ভিডিয়ো শুট করেন।
লুসি একটি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, ছেলেদের স্কুলে পাঠিয়ে নিজের বিছানাতেই পর্ন ছবির শুটিং করেন। আর এটাই চালিয়ে যেতে চান। স্টুডিয়ো গিয়ে কাজ করতে চান না।
লুসির কথায়, কাজের চাপের জন্য ব্যাঙ্কের চাকরি ছেড়েছিলেন। তখনই ঠিক করেছিলেন, অন্য কারও অধীনে কাজ করবেন না। তাই নতুন করে আর সেই বাঁধাধরা চাকরিতে ফিরতে চান না। কারণ, প্রযোজনা সংস্থার হয়ে পর্ন ছবির কাজ করা চাকরির মতোই।
এখন লুসি নিজের ইচ্ছায় কাজ করেন। ইচ্ছা না করলে কাজ করেন না। সপ্তাহান্তে নিশ্চিন্তে ছুটি কাটান। দরকারে কাজ কামাই করে ছেলেদের স্কুলেও যান। নিজের ইচ্ছার মালিক তিনি নিজেই। আর এ ভাবেই দুই ছেলেকে নিয়ে বাকি জীবন হেসেখেলে কাটাতে চান লুসি।