বিরোধী জোটের সলতে পাকানোর উদ্দেশে সম্প্রতি সক্রিয় হয়েছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। রাজধানীতেও তাঁর সেই সক্রিয়তা লক্ষ্য করা গিয়েছে। এ বার এই প্রসঙ্গে নীতীশ-সহ বিরোধী দলগুলিকে কটাক্ষ করল বিজেপি। বিরোধী জোটগঠনের চেষ্টাকে ‘কৌরবদের ব্যর্থ চেষ্টা’ বলেও তোপ দেগেছে পদ্মশিবির।
বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালবীয় তাঁর টুইটার হ্যান্ডলে নীতীশ কুমারের একটি ছবি পোস্ট করেন। ওই ছবিতে দেখা যাচ্ছে রাহুল গান্ধীর দিকে ঝুঁকে কংগ্রেস নেতাকে অভিবাদন জানাচ্ছেন নীতীশ। ছবিটি দিয়ে মালবীয় বিদ্রুপ করে লেখেন, “এটা ভেবেই অবাক হচ্ছি যে, নীতীশ কুমার আর কার কার সামনে মাথা ঝোঁকাবেন।” কখনও বিজেপির সঙ্গে, কখনও বা কংগ্রেসের সঙ্গে— নীতীশের বার বার অবস্থান এবং পক্ষ বদল নিয়েই বিজেপি নেতা কটাক্ষ করতে চেয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
বিরোধীদের জোট গঠনকে কৌরবদের চেষ্টার সঙ্গে তুলনা করেছেন বিজেপি নেত্রী খুশবু সুন্দর। তাঁর কথায়, বিরোধীরা ব্যর্থ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আমার এদের দেখে কৌরবদের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। কংগ্রেসও জানে, এই লড়াইয়ে কে জিততে চলেছে।” কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর বিরোধীদের ‘জোটবন্ধন’কে ‘ঠগবন্ধন’ বলে কটাক্ষ করেছেন।
আগামী বছরের লোকসভা নির্বাচনকে ‘পাখির চোখ’ করে বিরোধী জোটগঠনে সক্রিয় হয়েছেন জেডি(ইউ) নেতা নীতীশ। বুধবারই কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী, কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে এবং দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়ালের সঙ্গে বৈঠক করছিলেন তিনি। বৈঠকে ছিলেন বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী তথা আরজেডি নেতা লালুপ্রসাদ যাদবের পুত্র তেজস্বী যাদবও। নীতীশের সঙ্গে বৈঠককে ‘ঐতিহাসিক’ বলে বর্ণনা করেছিলেন খড়্গে।
নীতীশও একই কথা জানিয়েছিলেন। কংগ্রেসের একটি সূত্র জানাচ্ছে, ২০২৪-কে পাখির চোখ করে মূলত দু’টি সূত্র মেনে বিরোধী ঐক্য গড়তে চাইছেন খড়্গে।
প্রথমত, লোকসভা নির্বাচনের আগেই কোনও আনুষ্ঠানিক বিরোধী জোট বা মঞ্চ তৈরির বদলে যত বেশি সম্ভব আসনে বোঝাপড়ার মাধ্যমে বিজেপি বিরোধী ঐক্যবদ্ধ প্রার্থী দেওয়ার যায়। দ্বিতীয়ত, আনুষ্ঠানিক বিরোধী জোট না ঘোষণা করার ফলে সেই জোটের কে নেতা বা ‘মুখ’ হবেন, তা নিয়ে বিতর্ক এড়িয়ে যাওয়া যাবে। সূত্রের খবর, অনেক বিরোধীরই আপত্তি রয়েছে বুঝে কংগ্রেস আগেভাগে রাহুলকে বিরোধী জোটের নেতা হিসাবে তুলে ধরার চেষ্টা করবে না। ইতিমধ্যেই বিরোধী নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে রাহুল নিজেও সেই ‘বার্তা’ দিয়েছেন।