চিত্রনায়ক শাকিব খানের বিরুদ্ধে অসদাচরণ ও ধর্ষণের মতো বিস্ফোরক অভিযোগ নিয়ে এসেছেন তাঁর নির্মিতব্য ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ সিনেমার প্রযোজক রহমত উল্লাহ।
বুধবার বিকালে চলচ্চিত্রের তিন সমিতির কাছে শাকিবের বিরুদ্ধে এই লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন এই প্রযোজক।
লিখিত অভিযোগে প্রযোজক রহমত উল্লাহ ২০১৭ সালে ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ সিনেমার চিত্রায়নের সময় শাকিব খান যেসব ক্ষতিকর কাজ করেছিলেন তার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দিয়েছেন। এই লিখিত অভিযোগটি গ্রহণ করার কথা নিশ্চিত করেছেন শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নিপুণ আক্তার।
নিপুণ বলেন, ‘শিল্পী সমিতিসহ প্রযোজক, পরিচালক, ক্যামেরাম্যান এসোসিয়েশনে ওই প্রযোজক অভিযোগ করেছেন। অভিযোগ তো আসলে যে কেউই যে কারো নামে করতে পারে। তবে সেই অভিযোগের সত্য মিথ্যা যাচাই করা না পর্যন্ত কিছুই বলতে পারব না। যার বিরুদ্ধে অভিযোগটি এসেছে তিনি দেশের জনপ্রিয় অভিনেতা। এখানে তথ্য যাচাই বাছাই করা খুব জরুরি। যাচাই-বাচাইয়ের আগে আমরা এ বিষয়ে কিছুই বলতে পারছি না।’
অভিযোগপত্রে শাকিবের অসদাচরণ সঙ্গে বর্ণনা দিয়ে দাবি করা হয়েছে, শুটের সময় নিয়মিত পতিতালয়ে নিয়ে যেতে হতো, আর তা না হলে তার হোটেল কক্ষে অস্ট্রেলিয়ান যৌনকর্মীদের নিয়ে আসতে হতো। এই ব্যাপারটি ছিল প্রতিদিনের রুটিন। কখনো কখনো একাধিকবার। এই সব যৌনকর্মীদের মোটা অঙ্কের পারিশ্রমিক আমাদেরকেই দিতে হতো।
সহ-প্রযোজককে অভিযোগে ধর্ষণের অভিযোগ (মামলা নাম্বার : NSW Police reference no: E ৬২৪৯৪৯৫৯) এনে দাবি করা হয়েছে, একবার তিনি আমাদের একজন নারী সহ-প্রযোজককে কৌশলে ধর্ষণ করেন। ভুক্তভোগী এই নারীকে তিনি অত্যন্ত পৈশাচিকভাবে নির্যাতন করেন। গুরুতর জখমসহ রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়েছিল। নির্যাতিতা তখন এই ব্যাপারে অস্ট্রেলিয়ান পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। নির্যাতিতা নিজেও একজন বাংলাদেশ বংশোদ্ভূত নারী। আমি সেই ফৌজদারি অভিযোগের সাক্ষী ছিলাম। এই ঘটনার পর তিনি এবং তার পরিবার সামাজিকভাবে যেই গ্লানি এবং কুৎসার স্বীকার হন, তা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। ধর্ষণের বিচার চাইতে গিয়ে একটা পর্যায়ে তার নিজের এবং তার পরিবারের টিকে থাকাটাই অসম্ভব হয়ে পড়ে। ওইদিন আমরা যখন সহকর্মীকে নিয়ে হাসপাতালে ব্যস্ত, শাকিব খান সেইদিন কাউকে কিছু না জানিয়ে অস্ট্রেলিয়া থেকে চুপিসারে চলে যান। এরপর থেকে শাকিবের সঙ্গে বিভিন্ন সময় যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছি। পরবর্তীতে ২০১৮ সালে তিনি আবার অস্ট্রেলিয়ায় আসলে ধর্ষণের অভিযোগে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন। সামাজিক চাপে এবং আরও নিগ্রহের ভয়ে নির্যাতিতা প্রকাশ্যে মুখ খুলতে রাজি না হওয়ায় শাকিব সেই যাত্রায় ছাড়া পেয়ে যান।
এ অভিযোগ প্রসঙ্গে মন্তব্য জানাতে শাকিব খানের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁর সাড়া পাওয়া যায়নি।