২০১৯ সালে বরগুনার বহুল আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডের ছায়া অবলম্বনে ‘পরাণ’ নির্মাণ করেন রায়হান রাফী। এতে মিন্নির আদলে অনন্যা চরিত্রে বাজিমাত করেন বিদ্যা সিনহা মিম।
সেই সাফল্যের রেশ ধরে আবারও সত্য ঘটনা অবলম্বনে পর্দায় আসছেন মিম।
ঘটনাটি ২৭ বছর আগের। ১৯৯৫ সালের ২৩ আগস্ট রাতে ঢাকা থেকে রাতে ঠাকুরগাঁওগামী বাসে দিনাজপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় ইয়াসমিন নামে এক কিশোরী। বাসের স্টাফরা ভোররাতে তাকে দিনাজপুর-দশমাইল মোড়ে এক চায়ের দোকানদারের জিম্মায় দিয়ে সকাল হলে দিনাজপুরগামী বাসে তুলে দেওয়ার অনুরোধ করেন।
কিন্তু এর কিছুক্ষণ পর কোতোয়ালি পুলিশের টহল পিকআপ আসে। বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে জোর করে মেয়েটিকে পিকআপে তুলে নেয়। পথে কিশোরীকে ধর্ষণ শেষে হত্যা করে লাশ ফেলে দেয় মহাসড়কে। এ ঘটনা কেন্দ্র করে সৃষ্ট দিনাজপুরবাসীর প্রতিবাদ, আন্দোলনে ২৪ থেকে ২৭ আগস্ট দিনাজপুর ছিল উত্তাল। পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারান সাত আন্দোলনকারী। আহত হন দুই শতাধিক। দিনাজপুরসহ সারাদেশে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে।
সেই ইয়াসমিনের চরিত্রে অভিনয় করবেন মিম। ছবির নাম রাখা হয়েছে—আমি ইয়াসমিন বলছি। এরই মধ্যে ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন নায়িকা।
ছবি প্রসঙ্গে মিম বলেন, ‘এখন সব ধরনের চিত্রনাট্যে কাজ করছি না। ‘আমি ইয়াসমিন বলছি’ ছবির চিত্রনাট্য ছয় মাস আগে পড়েছি। যখন পড়েছি তখন কেঁদে ফেলেছিলাম।
বাস্তবে ইয়াসমিনের বয়স ছিল ১৩ বছর। তাই এই চরিত্রটি ফুটিয়ে তুলতে ওজন কমাতে হবে মিমের। সেজন্য নিজেকে প্রস্তুতের পর এপ্রিল থেকে ছবির শুটিং শুরু করবেন তিনি।
সিনেমাটি পরিচালনা করবেন সুমন ধর। তিনি বলেন, ‘ইয়াসমিনের পরিবারের কাছ থেকে গল্পটির অনুমতি নিতে প্রায় দুই বছর লেগেছে। প্রথমে তারা রাজি ছিলেন না। সিনেমার মাধ্যমে ইয়াসমিন বেঁচে থাকবে, বিষয়টি বোঝানোর পর অনুমতি দেন তার মা। পরিবারের কাছ থেকে লিখিত অনুমতি নিয়ে চিত্রনাট্যের কাজ শুরু করেছি।’
পরিচালক জানান, গল্পের প্রেক্ষাপট দিনাজপুরে ছবিটির ৫০ শতাংশ শুটিং হবে। বাকি কাজ ক্রোমা ও সেট বানিয়ে ঢাকায় শেষ করা হবে।
এদিকে মিম এখন কলকাতায় অবস্থান করছেন। সেখানে জিতের বিপরীতে ‘মানুষ’ সিনেমায় অভিনয় করছেন তিনি। সেখান থেকেই ‘আমি ইয়াসমিন বলছি’ ছবির প্রস্তুতি নেবেন তিনি।