বলিউডের ইতিহাসের সব রেকর্ড ভেঙে চুরমার করে দিচ্ছে শাহরুখ খানের ‘পাঠান’। অথচ ছবিটি মুক্তির আগে ৫৭ বছর বয়সী এই নায়ক প্রচারণায় বেরোননি, কোনো মিডিয়ার সঙ্গে কথাও বলেননি। এমনটি তার ছবি যখন বয়কটের কবলে পড়ছিল তখনও কিছু বলেননি তিনি। কেবল অপেক্ষায় থেকেছেন ‘পাঠান’ মুক্তির।
তাই মুক্তির পাঁচদিন পর যখন বিশ্বজুড়ে পাঠানের জয়জয়কার তখনই মিডিয়ার সামনে এলেন কিং খান। বললেন, ‘আপনারা সবাই আমায় এত স্নেহ–ভালোবাসা দিয়েছেন। আমার বয়স এখন ৫৭। আমি তরুণদের বলতে চাই যে সিনেমা মানুষকে আনন্দ, আর খুশি দেওয়ার জন্য বানানো হয়। আমরা সবাই কোনো না কোনো চরিত্রে অভিনয় করি মানুষকে আনন্দ দেব বলে। আমরা কখনোই কারও মনে আঘাত দিতে চাই না।’
সফলরা এমনই হয়। অন্যরা যেখানে মুখে মুখে বলে তারা সেখানে কাজ করে দেখিয়ে দেয়। শাহরুখও তাই করলেন। সব বিতর্ক উড়িয়ে দিয়ে পশাহরুখ সবটাই সোজা ব্যাটে খেললেন। বুঝিয়ে দিলেন বলিউডকে বাঁচাতে হলে বুড়ো হাড়ের ভেলকিই লাগে!
পর্দায় চার বছর নেই শাহরুখ। এই চার বছর খুব একটা ভালো সময় যায়নি সুপারস্টারের। যা অকপটে বলে গেলেন মিডিয়ার কাছে। সোমবার সন্ধ্যায় মুম্বাইয়ের তাজ হোটেলে হাজির হয়েছিল পুরো ‘পাঠান’ টিম। সেখানে কিং খানের ভাষ্যটা এমন, “আমি সবচেয়ে বেশি দুঃখী হই যখন মানুষকে নিরাশ করি। আমাকে ‘পাঠান’ সিনেমায় অভিনয় করার সুযোগ দেওয়ার জন্য আদিত্য চোপড়া আর সিদ্ধার্থ আনন্দের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। এই চার দিনে আমি ওই চার বছর ভুলে গেছি।”
মজা করে কিং খান সংবাদ সম্মেলনে এটাও বলেছেন, ‘আমার শেষ সিনেমাটা চলেনি। আর সেই ভয় থেকে আমি দ্বিতীয় ব্যবসার কথা ভাবতে শুরু করেছিলাম। আমি ভেবেছিলাম, রেড চিলিজ ফুড ইটারি নামের রেস্তোরাঁ খুলব। আমি ওই সময়ে ইতালিয়ান খাবার বানানো শিখেছিলাম। আমি আমার শুটিংয়ের সময় আদিকে (আদিত্য চোপড়া) পিৎজা খাইয়েছিলাম। সে আমায় বলেছিল, আগামী দিনেও আমায় কাজ দেবে।’
শাহরুখ আরও বলেন, আমরা শুধুই বিনোদন দিতে চাই। এখানে আমরা সবাই মিলেমিশে, হাসিঠাট্টা করে কাজ করি। দীপিকা অমর, আমি আকবর, আর জন অ্যান্টনি। আমাদের মধ্যে কোনো ভেদাভেদ নেই। ১০০ কোটি, ৫০০ কোটি বা হাজার কোটি আমার কাছে প্রাধান্য পায় না। আপনারা আমার ছবি দেখে যে আনন্দ পান, আর আপনাদের মুখে হাসি দেখে যে খুশি আমি পাই, তার চেয়ে কোনো পুরস্কার বা পরিণাম বড় নয়।’
বলিউড হাঙ্গামা জানাচ্ছে, ভারতীয় বক্স অফিসে ষষ্ঠ দিনে সিনেমাটি সংগ্রহ করেছে ২৫ কোটি রুপি। আর সব মিলিয়ে ভারতে বক্স অফিসে সংগ্রহ ৩০৫ কোটি রুপি, যা হিন্দি সিনেমার ইতিহাসে দ্রুত সময়ে ৩০০ কোটির ক্লাব স্পর্শ করার রেকর্ড গড়লো।