সুকেশ চন্দ্রশেখর। অভিনেত্রী চাহাত খন্নার দাবি, তাঁকেও প্রেমপ্রস্তাব দিয়েছিলেন ‘কনম্যান’। ২০০ কোটি টাকার আর্থিক তছরুপের অভিযোগে যখন কারাবন্দি ছিলেন সুকেশ, তাঁর সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন একাধিক বলিউড তারকা। যাঁদের মধ্যে ছিলেন চাহাত।
দিল্লির পাতিয়ালা আদালতে গিয়ে চাঞ্চল্যকর বয়ান নথিভুক্ত করালেন তিনি। চাহাতের দাবি, একগুচ্ছ তাঁকে অনবরত হুমকি দেওয়া হত। শেষে জেলে গিয়ে সুকেশের সঙ্গে দেখা করতে বাধ্য করা হয়েছিল চাহাতকে, এমনই অভিযোগ। চাহাতের কথায়, “আমি ঘটনার শিকার হয়েছি। অনেক কিছুর মধ্যে দিয়ে গিয়েছি। গোটা বিশ্বকে সে সব জানাতে চাই। আমার গল্পটাও সবাই শুনুক।”
অভিনেত্রীর কথায়, “বুঝতেই পারিনি যে আমাকে তিহাড় জেলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল।” ২০১৮ সাল তখন। দিল্লিতে একটি স্কুলের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ রক্ষা করতে চলেছিলেন। মুম্বইয়ের বিমানবন্দরে অ্যাঞ্জেল খান নামের এক মহিলা এসে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন।
জানান, সেই অনুষ্ঠানে তিনিও যাচ্ছেন, চাহাতের সঙ্গী হতে চান সেই যাত্রায়। তাতে রাজি হয়ে যান অভিনেত্রী। এর পর চাহাতের কথায়, “দিল্লিতে নেমে আমরা একটা গাড়ি নিলাম স্কুল অবধি যাওয়ার জন্য। কিন্তু মাঝরাস্তায় অ্যাঞ্জেল নামে সেই মহিলা বললেন, এই গাড়ি নিয়ে স্কুল চত্বরে যাওয়া যাবে না। অন্য গাড়ি নিতে হবে। আমরা এর পর সেই গাড়ি থেকে নেমে ধূসর রঙের একটি ইনোভায় উঠি। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে বুঝতে পারি, স্কুলে নয়, জেলে যাচ্ছি।”
অ্যাঞ্জেলের সঙ্গে সুকেশের সহকারী পিঙ্কি ইরানির আঁতাঁত ছিল। পিঙ্কিকেই প্রথম ২০০ কোটি টাকার তছরুপের মামলায় গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তার পর সুকেশ শ্রীঘরে যান।
চাহাতের মনে পড়ে যায়, তিনি আতঙ্কে চিৎকার করছিলেন গাড়িতে। বাবা-মায়ের কাছে রেখে এসেছিলেন নিজের দুই সন্তানকে। তাদের আবার দেখতে পাওয়ার আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন চাহাত। বললেন, “বুঝেছিলাম ফাঁদে পড়েছি। গাড়ি থেকে নামার পর আমায় একটা ঘরে নিয়ে যাওয়া হল, যেখানে চারদিকে শুধু ল্যাপটপ, ঘড়ি আর বিলাসবহুল জিনিসপত্র। একরত্তি ঘরে কত যে জিনিস, ভাবা যায় না!”
সেখানেই শেখর রেড্ডি পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি দেখা করেন চাহাতের সঙ্গে। তাঁর গায়ে কেতাদুরস্ত শার্ট আর দামি পারফিউম। সেই ব্যক্তির কোলে বসে পড়ে চুম্বন বিনিময় করতে থাকেন অ্যাঞ্জেল। যা সামনে থেকে দেখে শিউরে ওঠেন চাহাত। পালিয়ে আসতে চাইছিলেন সেখান থেকে। যদিও ধরে রাখেন অ্যাঞ্জেল। জানান, এই শেখর নামের ব্যক্তি তাঁর প্রিয় বন্ধু।
ঘটনার ২৫ মিনিট পরে চাহাতকে নিয়ে বেরিয়ে আসেন অ্যাঞ্জেল। অ্যাঞ্জেল বার বার বলতে থাকেন, শেখরের খুব পছন্দ হয়েছে চাহাতকে। আবার আসতে হবে। এর পর চাহাতের কথায়, “মুম্বই ফিরে ক্রমাগত হুমকি পাই। পরিবারকে গুম করে ফেলার হুমকি। সে দিন জেলে ওই ব্যক্তির সঙ্গে আমার দেখা হওয়ার ভিডিয়ো সিসিটিভি ফুটেজে ধরে রেখেছে কেউ। সেটাই আমাকে হুমকি হিসাবে পাঠানো হয়। এর পর টাকা চাওয়া হয়, আমি দিয়ে দিই। পরিবারের সুরক্ষায়।”
পরে চাহাত জানতে পারেন জেলে দেখা হওয়া সেই শেখর নামের ব্যক্তিই আসলে সুকেশ। যাঁর চক্রান্তেই পরে আবার দেখা করতে আসতে হয় তাঁকে তিহাড় জেলে। চাহাত তাঁর থেকে উপহার নিতেও বাধ্য হয়েছিলেন।