ভারতীয় সিনেমার ‘চার্লি চ্যাপলিন’-ই হোক বা বলি ইন্ডাস্ট্রির ‘শোম্যান’— বলিউড সিনেমাজগতে রাজ কপূরের অবদান অনস্বীকার্য। অভিনেতা হিসাবে তিনি দর্শকের কাছে যতটা ভালবাসা পেয়েছেন, ঠিক ততটাই প্রশংসা কুড়িয়েছেন পরিচালক হিসাবে।
‘মেরা নাম জোকার’, ‘প্রেমরোগ’, ‘ববি’ এবং ‘সঙ্গম’-এর মতো বহু ছবি পরিচালনা করেছিলেন রাজ। কিন্তু পরিচালক হিসাবে তিনি আরও জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন ‘সত্যম শিবম সুন্দরম’ ছবির মাধ্যমে।
১৯৭৮ সালে মুক্তি পায় ‘সত্যম শিবম সুন্দরম’। এই ছবিতে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছিল শশী কপূর এবং জিনাত আমনকে।
বড় পর্দায় জিনাতের অভিনয় দেখে বলিপাড়ার অধিকাংশ দাবি করেছিলেন যে, অভিনেত্রীকে এই ছবিতে এমন সাহসী চরিত্রে দেখা গিয়েছে যা সচরাচর দেখা যেত না।
সিনেমা মুক্তির চার দশক পরেও দর্শক ‘সত্যম শিবম সুন্দরম’ দেখে একই মন্তব্য করে থাকেন। ১৯৮৬ সালে সানডে ম্যাগাজ়িনকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে রাজ কপূর এই ছবি নিয়ে আলোচনা করেছিলেন।
জিনাত ‘সত্যম শিবম সুন্দরম’ ছবিতে যে চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন তার নাম ছিল রূপা। পরিচালক রাজের মতে, রূপা চরিত্রই এই ছবির মূল আকর্ষণ। এই চরিত্রের দু’টি নজরকাড়া বৈশিষ্ট্য ছিল। রূপার মুখের পোড়া অংশ এবং বুকের গড়ন।
বলিপাড়ায় তখন বহু সুন্দরী অভিনেত্রী ছিলেন। কিন্তু তাঁদের সকলের মধ্যে জিনাতকে বেছে নিয়েছিলেন রাজ। তার কারণও সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন তিনি।
বলিপাড়ায় যে অভিনেত্রীরা ছিলেন, তাঁদের কারও বুকের গড়ন মনে ধরেনি রাজের। কিন্তু জিনাতের বুকের গড়ন ভাল লেগে যায় পরিচালকের। সে কারণেই জিনাতকে অভিনয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন রাজ।
রাজ সাক্ষাৎকারে স্বীকার করেন যে, তাঁর পরিচালিত সমস্ত ছবিতে অভিনেত্রীদের স্নানের দৃশ্য রাখার চেষ্টা করতেন তিনি। অভিনেত্রীদের লাস্যময়ী রূপ যেন পর্দায় ফুটে ওঠে তাই এমন দৃশ্য নিজের ছবিতে রাখতেন তিনি।
সিনেমায় স্নানের বিশেষ দৃশ্য ব্যবহারের কথা প্রসঙ্গে রাজ সাক্ষাৎকারে তাঁর শৈশবের কথাও মেলে ধরেন। রাজ বলেন, ‘‘আমি ছোটবেলায় বহু বার মায়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়েছি। সম্পূর্ণ নগ্ন হয়ে মায়ের সঙ্গে স্নানও করেছি। মাকে নগ্ন দেখে আমি কামার্ত হয়ে পড়তাম। পাঠান মহিলাদের মতো আমার মায়েরও ধারালো শরীর ছিল।’’
শুধু মায়ের সঙ্গেই নয়, বহু মহিলার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়েছিলেন রাজ। নিজের জীবনে মহিলাদের অবদানকে সম্মান জানাতে তিনি স্নানের দৃশ্য শুট করতেন।
রাজ নগ্নতার পূজারী হিসাবেও নিজের পরিচয় দিয়েছিলেন। ১৯৮৫ সালে মুক্তি পাওয়া ‘রাম তেরি গঙ্গা মইলি’ ছবিতেও মন্দাকিনির স্নানের দৃশ্য রেখেছিলেন রাজ।
সম্প্রতি পুরনো এই সাক্ষাৎকার নিয়ে সরব হয়েছেন স্বঘোষিত চলচ্চিত্র সমালোচক কমল আর খান বা কেআরকে। প্রয়াত অভিনেতা রাজের ওই পুরনো সাক্ষাৎকারের কিছুটা অংশ টুইটারে পোস্ট করেন কেআরকে।
পোস্ট করা মাত্র নেটাগরিকদের অধিকাংশ রাজের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে পড়েন। কেআরকের উদ্দেশে কুমন্তব্য করতেও পিছপা হন না।
রাজের ব্যক্তিগত জীবনও ছিল বহুল চর্চিত। রাজ তাঁর বাবার এক তুতো বোনকে বিয়ে করেছিলেন। কিন্তু বিয়ে করার পরেও পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন।