প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ এখন কেবল উন্নয়নেরই নয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাতেও বিশ্বে একটি রোল মডেল।
রোববার সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘বন্যা, খরা, ঘুর্ণিঝড়, অগ্নিকাণ্ড– এসবে ক্ষয়ক্ষতি যাতে হ্রাস পায় তার জন্য যা ব্যবস্থা নেওয়ার ইতোমধ্যে আমরা তা নিয়েছি, যা আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত হয়েছে এবং সবাই মনে করে এটাও বাংলাদেশের কাছ থেকে শেখার রয়েছে। অনেকে আমাদের কাছ থেকে এটা এখন জানতে চায়।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বে এখন আমরা শুধু উন্নয়নের রোল মডেলই নয়, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলাতেও রোল মডেল হিসেবে একটা সম্মান পেয়েছি। বন্যা, খরা, ঘূর্ণিঝড়, অগ্নিকাণ্ড—এসবে ক্ষয়ক্ষতি যাতে হ্রাস পায়, তার জন্য যা ব্যবস্থা নেওয়ার ইতিমধ্যে আমরা তা নিয়েছি, যা আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত হয়েছে এবং সবাই মনে করে এটাও বাংলাদেশের কাছ থেকে শেখার রয়েছে। অনেকে আমাদের কাছ থেকে এটা এখন জানতে চায়।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ বছর জুলাই মাসে ঢাকায় গ্লোবাল কমিশন অন অ্যাডাপ্টেশনের সভা হয়েছে। সেখানে জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন দুর্যোগ প্রতিরোধে বাংলাদেশের সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘বিশ্ব অভিযোজন কেন্দ্র-ঢাকা অফিস’ স্থাপনের ঘোষণা দেন।
বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থানের উল্লেখ করে যেকোনো ধরনের দুর্যোগের জন্য সবাইকে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যেকোনো মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগ আসুক আর প্রাকৃতিক দুর্যোগই আসুক, সব ধরনের দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য বাংলাদেশ সব সময় প্রস্তুত থাকবে, সেটাই আমি চাই। আমাদের ভলান্টিয়াররা নিবেদিতপ্রাণ হয়ে কাজ করবে, সেটারই আমি আশা পোষণ করি।’
এ সময় তিনি যেকোনো ধরনের দুর্যোগ মোকাবেলায় জান-মালের ক্ষয়-ক্ষতি কমিয়ে আনার জন্য তড়িৎ পদক্ষেপ গ্রহণেও সংশ্লিষ্ট কতৃর্পক্ষকে নির্দেশনা দেন।
শেখ হাসিনা জানান, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘূর্ণিঝড় থেকে জনগণের জানমাল রক্ষায় ১৭২টি সাইক্লোন সেন্টার নির্মাণ করেন। স্থানীয় লোকজন এর নাম দিয়েছিলে মুজিব কেল্লা।
“তারই আলোকে আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি। বর্তমানে প্রায় ৫৬ হাজার প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবক রয়েছে আমাদের। তাছাড়া ৩২ হাজার নগর স্বেচ্ছাসেবক, ২৪ লক্ষ আনসার ভিডিপি, ১৭ লক্ষ স্কাউটস, ৪ লক্ষ বিএনসিসি, গার্লস গাইডের প্রায় ৪ লক্ষ সদস্য- তারাও এক্ষেত্রে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। যেকোনো দুর্যোগের সময় তারা সকলে সেখানে উপস্থিত হয় এবং কাজ করে।”
১৯৯১ সালের ঘুর্ণিঝড়ে ক্ষয়ক্ষতি এবং তখনকার সরকারের উদাসীনতার কথা উল্লেখ করে সমালোচনাও করেন তিনি।
“একটা সরকার যদি সচেতন না থাকে, সজাগ না থাকে তাহলে কত বড় ক্ষতি হতে পারে সেটা একানব্বই সালের ঘূর্ণিঝড়ে আমরা দেখেছি।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা সব সময় যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ এলে পূর্বাভাস দেওয়া, যারা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে সেই লোকগুলোকে সাইক্লোন সেন্টারে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করি। দুর্যোগকালীন সময়ে করণীয় বিষয়ে তাদের প্রশিক্ষণ ও সচেতন করা হয়। এরফলে এখন ঘূর্ণিঝড়ে মৃতের সংখ্যা একেবারে নাই।”
অনুষ্ঠানে নবনির্মিত ১০০টি ঘুর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র এবং ১১৬০৪টি দুর্যোগসহনীয় বাড়ি উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান ও মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব শাহ কামাল অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতির জন্য সেরা ৮২ জন স্বেচ্ছাসেবকের মধ্যে তিনজনের হাতে পুরস্কার তুলে দেন শেখ হাসিনা।
দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান এ বি তাজুল ইসলাম এবং সিনিয়র সচিব মো. শাহ কামাল অনুষ্ঠানে বক্তব্য করেন।