ক্রোয়েট রূপকথার ইতি টেনে কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠে গেলো আর্জেন্টিনা।গতবারের সেমিফাইনালিস্ট ক্রোয়েশিয়াকে কোনরকম ছাড় না দিয়ে মেসি এবং আলভারেজ জাদুতে ৩-০ গোলের ব্যবধানে হারিয়েছে মেসিরা।
বাংলাদেশ সময় আজ রাত ১টায় ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামে গত আসরের রানার্স-আপ ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে মাঠে নামে আর্জেন্টিনা।
ম্যাচের শুরু থেকে ক্রোয়েশিয়া বল দখলে রাখলেও ম্যাচের সুযোগ তৈরি করতে পারতেছিল না ক্রোয়েশিয়া। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠে আর্জেন্টিনা। অভিজ্ঞ ক্রোয়াট মিডফিল্ডারদের পায়ে বলের পজিশন দিয়ে ঠান্ডা মাথায় খেলতে থাকে স্কালোনির শিষ্যরা। যে রক্ষণ জাপান-ব্রাজিল ভাঙতে পারেনি কাউন্টার অ্যাটাকে ভরসা করা দলটি ম্যাচের ৩৪ মিনিটে তা খুলে ফেলে। পেনাল্টি থেকে লিওনেল মেসি দলের পক্ষে প্রথম গোল করেন। বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার হয়ে গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতাকে ছাড়িয়ে ১১ গোলের কীর্তি গড়েন।
কিন্তু ম্যাচের সেরা মুহুর্ত আসলে তখনো আসেনি। হুলিয়ান আলভারেজ পেনাল্টি এনে দিয়েই দায়িত্ব শেষ মনে করেননি যে! মিনিট পাঁচেক পরে মাঝমাঠে ফাউলে পড়ে গিয়ে মেসি ফ্রি-কিকের আবেদন করছেন, বল আলভারেজের পায়ে দেখেই হয়তো রেফারি খেলা চালিয়ে গেলেন। ড্রিবল করে তিন ক্রোয়েশিয়ার খেলোয়াড়কে পেরিয়ে গেলে আলভারেজ। ও দিকে রদ্রিগো দি পল ও মলিনা ছুটে গিয়ে বিভ্রান্ত করে দিলেন ক্রোয়াট রক্ষণভাগকে।
ডি-বক্সে ঢুকে আলভারেজ ক্রোয়াট ডিফেন্ডার বোরনা সোসাকেও কাটালেন, তারপর লিভাকোভিচকে কাটিয়ে বল পাঠালেন জালে। ১৯৮৬ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যারাডোনার মতো নয় হয়তো, তবে আলভারেজের গোলটা দেখে সবার আগে হয়তো দর্শকদের ওই গোলের কথাই মনে হয়েছে।
ম্যাচটা ওখানেই অর্ধেক শেষ হয়ে গিয়েছিল। যেটুকু বাকি ছিল সেটা বিরতির পর মাঠে নেমে শেষ করে দিলেন আবার সেই মেসি-আলভারেজ জুটি। ৬৯ মিনিটের সেই গোল অবশ্য একেবারে নিখাদ মেসি-জাদু।
ডান পাশ দিয়ে ক্রোয়াট রক্ষককে এলোমেলো করে দিয়ে বল নিয়ে ঢুকলেন, ইওস্কো গাভারদিওলকে কাটাতে বল নিয়ে গেলেন একেবারে সীমানার কাছাকাছি। সেখান থেকে কাট ব্যাক করে আলভারেজকে পাস বাড়ালেন। এই গোল নষ্ট করার লোক আলভারেজ নন। আলভারেজের আগের গোলটা যদি টুর্নামেন্টের অন্যতম সেরা গোল হয়, মেসি এই অ্যাসিস্ট সম্ভবত টুর্নামেন্টের সেরা অ্যাসিস্ট।
ম্যাচের বাকিটা সময় লিড বাড়ানোর চেষ্টা করে গেছে আলবিসেলেস্তারা। তবে আর কোনো গোল না হওয়ায় ৩-০ গোলে জিতেই ফাইনাল নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়ে আর্জেন্টিনা।