গত বছরের আগস্টে আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলে নেয় তালেবান। তালেবানের ক্ষমতা নেওয়ার পর দেশটি থেকে আন্তর্জাতিক ত্রাণসংস্থাগুলো মুখ ফিরিয়ে নেয়। এতে লাখ লাখ পরিবার দারিদ্র্যের মুখে পরে। চাকরি হারায় হাজার হাজার জন। অর্থনীতিতে ধুঁকতে থাকা দেশটিতে নেমে আসে আরও দুর্দশা।
এরই মধ্যে দেশটির ভয়াবহ চিত্র বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের খবরে উঠে এসেছে।
আজ বৃহস্পতিবার বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আফগানরা তাদের ক্ষুধার্ত শিশুদের ওষুধ খাইয়ে ঘুম পাড়াচ্ছেন। এছাড়া অনেকেই বেঁচে থাকার জন্য বিভিন্ন অঙ্গ, এমনকি তাদের কন্যাদেরকেও বিক্রি করছেন।
আব্দুল ওয়াহাব বলেন, ক্ষুধার জ্বালায় আমাদের শিশুরা কান্না করেই যাচ্ছে এবং তারা ঘুমাচ্ছে না। আমাদের কোনো খাবার নেই। তাই আমরা বাধ্য হয়ে ফার্মেসিতে যাচ্ছি, ট্যাবলেট নিচ্ছি এবং শিশুদের খাওয়াচ্ছি। যেন তারা ঘুমিয়ে পড়ে।
আব্দুল ওয়াহাব দেশটির তৃতীয় বৃহত্তম শহর হেরাতে যেখানে হাজার হাজার মাটির ঘরের বসতি সেখানেই বাস করেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, যুদ্ধে ঘরছাড়া লোকদেরই এখানে বসবাস।
বিবিসির সংবাদতারা সেখানে গেলে আব্দুলরা তাদের ঘিরে ধরেন। তাদের প্রশ্ন করা হয়, কতজন তাদের শিশুদের ওষুধ দিয়ে ঘুম পাড়াচ্ছেন। ভিড়ের মধ্যে লোকেরা বলেছেন, অনেকই, আমাদের সবাই।
ভিড়ের মধ্যে থাকা গুলাম হযরত নামে এক ব্যক্তি তার পকেট থেকে এক পাতা ওষুধ বের করে। সেইসবের মধ্যে ছিল অ্যালপ্রাজোলাম, ট্রানকুইলাইজার- যা উদ্বেগজনিত রোগের চিকিতসার কাজে ব্যবহৃত হয়।
গুলাম জানান, তার ছয় সন্তান, এর মধ্যে সবচেয়ে ছোটজনের বয়স এক বছর। তিনি বলেন, তাকেও আমি এই ওষুধ খাওয়াই। এছাড়া অন্যরাও তাদের কাছে থাকা ওষুধ বের করে দেখান। যা তারা তাদের শিশুদের খাওয়ান। এসব ওষুধ বিষাদ ও উদ্বেগের জন্য ব্যবহার করা হয়।
বিবিসির সংবাদদাতারা বলছেন, তারা যাদের সঙ্গে দেখা করেছেন তাদের বেশিরভাগই প্রতিদিন শুধু খাবারের জন্য কয়েক টুকরো রুটি ভাগাভাগি করেন। এক নারী বলেন, সকালে তারা শুধু শুকনো রুটি খেয়েছে রাতে তারা পানিতে ভিজিয়ে তা খাবে।