কিশোরী ধর্ষণ: বিজিবি সদস্যের বিরুদ্ধে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ
নীলফামারীতে বিজিবি সদস্য কর্তৃক কিশোরী ধর্ষণ
নীলফামারীর এক কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনায় বিজিবি সদস্য মো. আকতারুজ্জামানের বিরুদ্ধে নতুন করে তদন্ত করতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
নীলফামারীর পিবিআই প্রধানকে ৬০ দিনের মধ্যে তদন্ত শেষ করে আদালতে এই প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। এছাড়া এই মামলার পুলিশের সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতেও আইজিপিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহ সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার এই আদেশ দেন। এছাড়াও আদেশে ধর্ষণের শিকার ওই কিশোরীকে মানসিক চিকিৎসা দেওয়ার জন্য ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ অ্যান্ড মেন্টাল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গত ১৫ জুন মাকে নিয়ে নীলফামারী থেকে হাইকোর্টে এসে বিচার চায় ওই কিশোরী। ধর্ষণের শিকার জানিয়ে সেদিন কিশোরী আদালতে বলে, ‘আমরা গরিব মানুষ, টাকা-পয়সা নাই। আমি ধর্ষণের শিকার। একজন বিজিবি সদস্য আমাকে ধর্ষণ করেছেন। নীলফামারীর আদালত তাকে খালাস দিয়ে দিয়েছেন। আমি বিচার চাই।’
কিশোরীর বক্তব্য শুনে সেদিন হাইকোর্টের এই বেঞ্চ সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইডের মাধ্যমে কিশোরীর মামলাটি নিতে সংশ্লিষ্ট আইনজীবীকে বলেন। এরপর সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইডের প্যানেল আইনজীবীর মাধ্যমে ২৬ জুন ট্রাইব্যুনালের আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন কিশোরীর মা। পরে ২৯ জুন ওই কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ করা মামলা থেকে বিজিবির সদস্যকে অব্যাহতির আদেশ ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেন হাইকোর্ট। এছাড়াও বিজিবির ওই সদস্যকে চার সপ্তাহের মধ্যে নীলফামারীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এ আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার ফের আদেশ দেন হাইকোর্ট।
আইনজীবীদের তথ্যানুযায়ী, ১৪ বছর বয়সী ওই কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে তার মা নীলফামারীর সৈয়দপুর থানায় ২০২০ সালের ২১ নভেম্বর মামলা করেন। নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ৯ (১) ও দণ্ডবিধির ৩২৮ ধারায় আকতারুজ্জামান নামে বিজিবির এক সদস্যকে আসামি করে মামলাটি করা হয়। মামলায় নেশাজাতীয় দ্রব্য খাইয়ে ওই কিশোরী ধর্ষণের অভিযোগ করে তার মা।
তদন্ত শেষে পুলিশ চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়, তাতে আসামিকে অব্যাহতি দেওয়ার কথা বলা হয়। এর বিরুদ্ধে নারাজি দেন মামলার বাদী কিশোরীর মা। গত ১৭ মে নীলফামারীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ আসামিকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়ে ও বাদীর নারাজি আবেদন খারিজ করেন। পরে ওই আদেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইডের সহায়তায় কিশোরীর মা হাইকোর্টে আপিল করেন। এই আপিলের শুনানিই এখন হাইকোর্টে চলছে।