বিক্ষোভের আগুনে জ্বলছে ইরান। হিজাব বিরোধী বিক্ষোভ দমন করতে তৎপর প্রশাসন। অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতিতে ইরানে মৃত্যুমিছিল অব্যাহত। বিক্ষোভে শামিল হয়ে ৭৫ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন বলে দাবি ইরানের মানবাধিকার সংগঠনের। যদিও সরকারি ভাবে জানানো হয়েছে মৃতের সংখ্যা ৪১।
মাহশা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদে উত্তাল ইরান। বিক্ষোভকারীদের দমন করতে ব্যাপক ধরপাকড় শুরু হয়েছে সে দেশে। সোমবার প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, ১২০০ জনেরও বেশি বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অশান্তিতে যাঁরা মদত দিচ্ছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে বলে রবিবারই বার্তা দিয়েছে ইরান সরকার। বিক্ষোভ কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা যে হবে না, সে বার্তা দিয়েছিলেন খোদ প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইস।
ইরানের কুর্দিস্তান থেকে রাজধানী তেহরানে যাচ্ছিলেন ২২ বছরের মাহশা। সে সময় তাঁর পথ আটকায় নীতিপুলিশ। হিজাব ঠিকমতো না পরেই রাস্তায় বেরিয়েছেন মাহশা, এই অভিযোগে তাঁকে পাকড়াও করে নিয়ে যায় নীতিপুলিশের দল। পুলিশের হেফাজতে অসুস্থ হয়ে যাওয়ার পর তাকে হাসাপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তিনদিন কোমায় থাকার পর মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন এ কুর্দি তরুণী।
পুলিশি অত্যাচারেই মাহশার মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। যদিও প্রশাসনের তরফে দাবি করা হয়েছে, হৃদ্রোগে মৃত্যু হয়েছে ওই তরুণীর। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই ইরান জুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়।
প্রথমে বিক্ষোভ ইরানের কুর্দি অধ্যুষিত উত্তরপশ্চিমাঞ্চলে শুরু হলেও ক্রমে তা দেশটির ৮০টি শহর ও নগরে ছড়িয়ে পড়ে।
হিজাব পুড়িয়ে প্রতিবাদ করতে দেখা গিয়েছে ইরানের মহিলাদের। বিক্ষোভের নানা ছবি ও ভিডিয়ো ছড়িয়েছে সমাজমাধ্যমে। এই পরিস্থিতিতে সে দেশে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে।
২০১৯ এ পেট্রলের দাম নিয়ে হওয়া বিক্ষোভের পর দেশটির দেখা সবচেয়ে বড় প্রতিবাদ এটি।