জাতিসংঘের শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) বলছে, বাংলাদেশে ১৮ বছরের নিচে প্রায় দুই কোটি শিশু জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে শিশুরা বিভিন্ন ধরনের বিপজ্জনক কাজে যুক্ত হচ্ছে এবং পরিবারগুলো শহরমুখী হচ্ছে।
আজ শুক্রবার ইউনিসেফ বাংলাদেশের ওয়েবসাইটে জলবায়ু পরিবর্তন এবং বাংলাদেশের শিশুদের ভবিষ্যৎ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের ২০টি জেলা জলবায়ু ঝুঁকিতে আছে। সামুদ্রিক ঝড়, বন্যা, আকস্মিক বন্যা, খরার মতো জলবায়ু পরিবর্তনের শিকার হতে পারে এসব জেলা। এর মধ্যে উপকূলীয় জেলাগুলোতে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি বেশি। ২০টি জেলা হলো—ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, কক্সবাজার, নোয়াখালী, টাঙ্গাইল, ফরিদুপর, বাগেরহাট, খুলনা, যশোর, সাতক্ষীরা, নেত্রকোনা, জামালপুর, সিরাজগঞ্জ, রাজশাহী, নীলফামারী, গাইবান্ধা, হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ।
এসব জেলায় শিশুরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৮ বছরের নিচে ১ কোটি ৯৪ লাখ ১৯ হাজার ৮২৯ শিশু এ জলবায়ু পরিবর্তনের শিকার হবে। এ ছাড়া ৫ বছরের নিচে ঝুঁকিতে আছে ৫৩ লাখ ৫৯ হাজার ৬৭ শিশু।
ঝুঁকির মধ্যে থাকা প্রায় ২ কোটির মধ্যে নদীভাঙন এলাকা বা তার কাছাকাছি থাকে প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ শিশু। আরও সাড়ে ৪০ লাখ শিশু উপকূলীয় অঞ্চলে বাস করে, যে এলাকা শক্তিশালী সামুদ্রিক ঝড়ের আঘাতে জর্জরিত হয়। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মধ্যে প্রায় ৫ লাখ শিশু ঝড় থেকে রক্ষা পেতে বাঁশ ও প্লাস্টিকের ঘরে বাস করে, যা ক্ষতিকর। এ ছাড়া ৩০ লাখ শিশু বাস করে খরাপ্রবণ এলাকায়।
প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, নদীভাঙন ও বন্যার কারণে শিশু ও তার পরিবারের সদস্যরা নিজ বাড়ি-স্কুল ছেড়ে শহরের বস্তিতে আশ্রয় নিচ্ছে। অনেক শিশু এবং তরুণ বিশেষ করে যাদের তেমন দক্ষতা নেই, তারা কম বেতনে হলেও বেঁচে থাকার জন্য বিপজ্জনক ও শোষণমূলক কাজে নিযুক্ত হয়। এ ক্ষেত্রে মেয়েরা বাল্যবিবাহের শিকার হয় বা যৌনকর্মী হিসেবে কাজ করে।