The news is by your side.

৮৯ বছরের ধনকুবেরকে বিয়ে করে স্বামীর সম্পত্তি পাননি ‘প্লেবয়’ মডেল নিকোল স্মিথ!

বয়স ছাব্বিশ। কেরিয়ারের তুঙ্গে। সেই সময়েই বিয়ে করেছিলেন ৮৯ বছরের এক ধনকুবেরকে।

0 123

স্বামীর মৃত্যুর পর জানতে পারেন, দলিলে তাঁর নামে কিছুই নেই। এ নিয়ে দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পরেও স্বামীর সম্পত্তির কিছুই পাননি ‘প্লেবয়’ পত্রিকার মডেল তথা অভিনেত্রী আনা নিকোল স্মিথ।

২০০৭ সালে মাত্র ৩৯ বছর বয়সে মারা গিয়েছিলেন আনা। হলিউডের একটি নামী হোটেলে অচৈতন্য হয়ে পড়েছিলেন তিনি। আনার রক্তে ৮ থেকে ১১ ধরনের মাদকের হদিস পাওয়া গিয়েছিল বলে সংবাদমাধ্যমের দাবি। অতিরিক্ত মাদকসেবনেই তাঁর মৃত্যু হয়েছিল বলে জানায় পুলিশি রিপোর্ট। তবে আনার মৃত্যুর থেকেও তাঁর রঙিন জীবন নজর কেড়েছিল অনেকের।

১৯৬৭ সালের ২৮ নভেম্বর টেক্সাসের হিউস্টনে জন্ম আনার। সেই সময় অবশ্য ভার্গি আর্থার আর ডোনাল্ড হোগানের মেয়ের নাম ছিল ভিকি লিন হোগান। স্কুলে পড়াশোনার সময় থেকে তাঁর মায়ের এক আত্মীয়ার টেক্সাসের মেক্সিয়ার বাড়িতে চলে আসা। সেখান থেকেই হাই স্কুলের পড়াশোনা। তবে মাঝপথেই তা ছেড়েছুড়ে দেন তিনি।

১৯৮৫ সালে মাত্র ১৮ বছর বয়সে প্রথম বিয়ে আনার। পরের বছর মা হয়েছিলেন তিনি। বিলি স্মিথের সঙ্গে সে বিয়েটা অবশ্য ভেঙে যায় ’৯৩-এ। তার আগে থেকেই মডেলিংয়ের দুনিয়ার পা রেখেছিলেন আনা। ’৯২-এ ‘প্লেবয়’ পত্রিকার প্রচ্ছদেও জায়গা করে নেন।

১৯৯২ সালে আনাকে লেন্সবন্দি করেছিলেন ‘প্লেবয়’ পত্রিকার খ্যাতনামী চিত্রগ্রাহক স্টিফেন ওয়েডা। সে সব ছবিতে তুমুল জোয়ার ওঠে আনার কেরিয়ারে। সে বার ‘প্লেবয় প্লেমেট’ হিসাবে আনার ছবিতে ভরে উঠেছিল পত্রিকাটি।

‘প্লেবয়’ পত্রিকার হয়ে মডেলিংয়ের আগে অবশ্য কষ্টের দিন দেখতে হয়েছে আনাকে। স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর ওয়ালমার্ট-সহ আমেরিকার বেশ কয়েকটি বিপণিতে কাজ শুরু করেছিলেন তিনি। তবে সে রোজগারে কুলিয়ে উঠতে পারতেন না। বাধ্য হয়েই হিউস্টনের একটি স্ট্রিপ ক্লাবে ঢুকে পড়েন।

অচেনা মানুষজনের সামনে নগ্ন হতে হত আনাকে। হিউস্টনের ওই ক্লাবেই এক ধনকুবেরের নজরে পড়েন তিনি। স্ট্রিপ ক্লাবের কাজের সময় থেকেই দ্বিতীয় জে হাওয়ার্ড মার্শালের সঙ্গে প্রেমের শুরু।

আনার প্রেমে পাগল মার্শাল তাঁকে আর্থিক ভাবেও সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছিলেন। সেই সময় থেকেই আনার কেরিয়ারের রেখচিত্র ঊর্ধ্বমুখী হতে শুরু করে। সে সব মার্শালের দাক্ষিণ্যে না কি আনার দক্ষতায়, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

একে একে ‘প্লেবয়’ পত্রিকার প্রচ্ছদেও তাঁর ছবি প্রকাশিত হয়। এর পর ‘গেস’ বা ‘এইচ অ্যান্ড এম’-এর মতো নামী ব্যান্ডের মডেল হিসাবে দেখা যায় আনাকে।

মডেলিং জগতে নামডাক হওয়ার পরে হলিউডে পা রাখেন আনা। লেসলি নেলসনের ‘নেকেড গান’ সিরিজের ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ পান তিনি।

লেসলির সঙ্গে ‘নেকেড গান ৩৩ অ্যান্ড ওয়ান থার্ড’ ছবিতে তানিয়ার ভূমিকায় মুখ দেখালেও হলিউডে বিশেষ দাগ কাটতে পারেননি আনা। তবে তাতে তাঁর খ্যাতিতে ভাটা পড়েনি।

কেরিয়ারের তুঙ্গে থাকাকালীন মার্শালের সঙ্গে বিয়েটা সেরে ফেলেন আনা। সেই সময় মার্শালের বয়স ৮৯ আর আনার ২৬। তবে কি মার্শালের নয়, তাঁর তেলের খনির প্রেমে পড়েছিলেন আনা? নিন্দকেরা নানা ক যদিও নিন্দকদের কথায় কান দেননি আনা। ’৯৪-এ বিয়ে সেরে ফেলার পর তাঁর দাবি ছিল, এমন ভাবে কারও কাছ থেকে ভালবাসা পাননি তিনি। তাই মার্শালকে বিয়ে করেছিলেন।থা বলতে শুরু করেন।

মার্শালের সঙ্গে তাঁর বিয়ের কারণ নিয়ে জল্পনার অন্ত ছিল না। ২০০২ সালে আমেরিকার টেলিভিশনে ‘ল্যারি কিং লাইভ’ শোয়ে আনার মন্তব্য ছিল, ‘‘ছেলে (ড্যানিয়েল ওয়েন স্মিথ) আর আমার জন্য এত কিছু করেছে… সে জন্যই ওঁকে এত ভালবাসতাম। এ রকম ভালবাসা আমি আর কারও কাছ থেকে পাইনি। কেউ আমাকে এতটা ভালবাসা দেয়নি, এত সম্মানও করেনি। লোকে আমার সম্পর্কে যা-ই বলুক না কেন, পরোয়া করি না।’’

মার্শালের সঙ্গে আনার দাম্পত্য টিকেছিল মাত্র ১৩ মাস। ’৯৫-এ মৃত্যু হয় নবতিপর মার্শালের। স্বামীর মৃত্যুর পর অবশ্য ‘অন্য আঘাত’ পান আনা। জানতে পারেন, নিজের দলিলে তাঁর নামে কানাকড়িও লিখে যাননি মার্শাল। তাঁর কোটি কোটি ডলারের সম্পত্তির দখল পেতে এর পর আদালতের দ্বারস্থ হন আনা।

আইনি লড়াইয়ের মাঝেই আনার প্রথম সন্তান ড্যানিয়েলের মৃত্যু হয়। আইনি খরচ সামলাতে রিয়্যালিটি অনুষ্ঠান ‘দি আনা নিকোল শো’ শুরু করেছিলেন তিনি। ২০০৬ সালে এক কন্যাসন্তানের জন্মও দিয়েছিলেন আনা। যা নিয়েও কম জলঘোলা হয়নি। অনেকেই ওই সন্তানের পিতৃত্ব দাবি করেন। ডিএনএ পরীক্ষার পর ল্যারি বার্কহে়ড নামে এক চিত্রগ্রাহকের পিতৃত্ব প্রমাণিত হয়।

প্রথম সন্তানের মৃত্যুশোক নিয়ে আইনি লড়াইয়ের মাঝেই নিজের শর্তে বেঁচেছিলেন আনা। সঙ্গে মাদকাসক্তও হয়ে পড়ছিলেন। সেই আসক্তিই তাঁকে জীবনের কাছ থেকে কেড়ে নিয়েছিল। তবে স্বাধীনচেতা আনাকে যেন কিছুতেই হারাতে পারেনি।

 

 

 

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.