২ সন্তানকে গলা কেটে ‘হত্যার পর মায়ের আত্মহত্যার চেষ্টা’
রাজধানীর খিলগাঁও এলাকায় একটি বাড়িতে আরিফুন্নেসা পপি নামে এক নারী তার দুই শিশু সন্তানকে গলা কেটে হত্যার পর নিজের শরীরে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছেন।
আজ শনিবার (৭ মার্চ) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে খিলগাঁওয়ের গোড়ান এলাকার ৩৭৯ নম্বর বাসা থেকে মেহজাবিন আলভী (১১) ও জান্নাতুল ফেরদৌস জান্নাত (০৬) নামে শিশু দুটির গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
খিলগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান, শুক্রবার রাতের কোনো এক সময়ে পপি তার দুই শিশু সন্তান আলফি ও জান্নাতুলকে গলা কেটে হত্যার পর নিজের শরীরে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালান।
তিনি জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় পপিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয় শিশু দুটির মা পপিকে। পুলিশ প্রহরায় তিনি সেখানেই এখন চিকিৎসাধীন। তার শরীরের ১৮ শতাংশ পুড়ে গেছে বলে জানা গেছে।
আরিফুন্নেসা পপি নিজের হাতেই বঁটি দিয়ে দুই শিশুকে গলা কেটে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের অবজারভেশন কক্ষে সাংবাদিকদের তিনি জানান, ঠিক মতো স্বামী সংসার খরচ না দেয়ায় জীবনযাপনে দুর্বিষহ হয়ে ওঠায় দুই সন্তানকে হত্যা করেছে তিনি।
খিলগাঁও থানার ওসি মশিউর রহমান বলছেন, শিশু দুটির লেখাপড়ার খরচসহ নানা বিষয়ে পপি এবং তার স্বামীর মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো। সাংসারিক শান্তি ছিল না তাদের মধ্যে। এসব কারণে স্ত্রী হতাশাগ্রস্ত ছিলেন। তাই ধারণা করা হচ্ছে, দুই শিশুকে হত্যার পর তিনি নিজে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। এ ঘটনায় তার স্বামী মোজাম্মেল হক বিপ্লবকেও থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
পপি আরও বলেন, শিশুদের বাবা তাদের দেখাশোনা করতো না। মেয়ে দুটো ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুলে পড়াশোনা করতো। আর মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরে নিজের ভাইয়ের সঙ্গে ইলেকট্রিকের ব্যবসা করে বিপ্লব। কিন্তু ব্যবসার সব আয় তার ভাই হিসাব করেন। সে কোনও হিসাব রাখে না। আমাদের ঠিকমতো টাকা-পয়সা দিতে চাইতো না। মেয়েদের স্কুলে যাওয়ার খরচ লাগে। এসব বিষয়ে তার কোনও মাথাব্যথা ছিল না। টাকার কথা বললেই বকাবকি করতো।