৩২ থেকে ৪৮ দেশের ২০২৬ ফুটবল বিশ্বকাপ যৌথভাবে আয়োজন করবে উত্তর আমেরিকার তিন দেশ- যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকো। ফুটবল বিশ্বকাপের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো তিনটি দেশ একসঙ্গে আয়োজক হিসেবে নির্বাচিত হয়। এবার ফুটবল এবং বৈচিত্র্যের উদযাপনে ২০২৬ বিশ্বকাপের অফিশিয়াল লোগো উন্মোচন করেছে বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা।
বুধবার (১৭ মে) সন্ধ্যায় লস অ্যাঞ্জেলসে জমকালো এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এ লোগো উন্মোচন করেন ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো এবং ব্রাজিলিয়ান পোস্টারবয় রোনাল্ডো নাজারিও।
ট্রফিটির নিচে ২০২৬ বিশ্বকাপের বোল্ড ছাপ দেওয়া হয়েছে। এবারই প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের লোগোতে সোনালি ট্রফি ব্যবহার করা হয়েছে। যদিও অন্য আসরগুলোতে মূল ছবির পরিবর্তে অঙ্কিত কোনো ছবি ব্যবহার করা হতো। লোগোটিকে লাল, সাদা এবং নীল ঢালের বিপরীতে বিশেষভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
লোগো উন্মোচন অনুষ্ঠানে ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো বলেন, এটি এমন একটি মুহূর্ত, যখন তিনটি দেশ এবং একটি সমগ্র মহাদেশ সম্মিলিতভাবে বলে, আমরা বিশ্বকে স্বাগত জানাতে এবং সর্বকালের সবচেয়ে বড় ও সেরা এবং সবচেয়ে অন্তর্ভুক্তিমূলক ফিফা বিশ্বকাপ উপহার দিতে একত্রিত হয়েছি।
তিনি আরও যোগ করেন, এই টুর্নামেন্টটি প্রতিটি আয়োজক দেশ এবং অংশগ্রহণকারী দলকে ফিফা বিশ্বকাপের ইতিহাসের বইয়ে তাদের নিজস্ব পৃষ্ঠা লিখতে সক্ষম করবে এবং এটি ২০২৬ বিশ্বকাপের পথে একটি বড় পদক্ষেপ।
২০২৬ ফুটবল বিশ্বকাপে মোট ১০৪টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। আর ৪৮ দলের বর্ধিত কলেবর হলেও ৪ দলের গ্রুপ নিয়েই মাঠে গড়াবে যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও কানাডায় অনুষ্ঠেয় ফুটবল বিশ্বকাপ। ১২টি গ্রুপে ৪৮টি দলকে ভাগ করা হবে। প্রতিটি গ্রুপে ৪টি করে দল থাকবে। আর প্রথমবারের মতো থাকবে রাউন্ড অব থার্টি-টু।
প্রতিটি গ্রুপের শীর্ষ দুই দল শেষ ৩২-এ জায়গা করে নেবে। এর সঙ্গে প্রতিটি গ্রুপে তৃতীয় দলগুলোর মধ্যে ৮টি দল রাউন্ড অব থার্টি-টুতে জায়গা পাবে। এরপর ৩২ দল নিয়ে হবে নক-আউট পর্ব, এরপর যথাক্রমে শেষ ষোলো, কোয়ার্টার ফাইনাল, সেমিফাইনাল ও ফাইনাল হবে।
এর আগে, আয়োজক এ তিন দেশের ১৬টি শহরকে ভেন্যু হিসেবে নিশ্চিত করেছিল ফিফা। যেখানে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য পায় যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির ১১টি মেট্রো অঞ্চলকে ২০২৬ বিশ্বকাপের ভেন্যু হিসেবে বেছে নেয় ফিফা।
এ ১১টি অঞ্চল হচ্ছে : আটলান্টা, বোস্টন, ডালাস, হিউস্টন, কানসাস সিটি, লস অ্যাঞ্জেলস, মিয়ামি, নিউইয়র্ক-নিউ জার্সি, ফিলাডেলফিয়া, সান ফ্রান্সিসকো বে এরিয়া ও সিয়াটল।
বাকি ৫ শহরের মধ্যে তিনটি মেক্সিকোর ও দুটি হচ্ছে কানাডার। মেক্সিকোর গুয়াদালাহারা, রাজধানী মেক্সিকো সিটি ও মন্টেরিকে বেছে নেওয়া হয়। আর কানাডা থেকে আয়োজক শহর হিসেবে নির্বাচিত হয় টরন্টো ও ভ্যানকুভার।
আয়োজক তিন দেশের মধ্যে মেক্সিকো সবচেয়ে সফল ফুটবল বিশ্বকাপে। এ ছাড়াও প্রথম দেশ হিসেবে সর্বোচ্চ তিনবার বিশ্বকাপের স্বাগতিক হতে যাচ্ছে লাতিন আমেরিকার দেশটি। এর আগে, ১৯৭০ ও ১৯৮৬ সালে বিশ্বকাপ আয়োজন করেছিল মেক্সিকো।
এ ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র এর আগে ১৯৯৪ সালে স্বাগতিক হিসেবে বিশ্বকাপ আয়োজন করেছে। কাতার বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো বিশ্বমঞ্চে জায়গা করে নেওয়া কানাডার জন্য ২০২৬ সালে স্বাগতিক হওয়া হবে নতুন অভিজ্ঞতা।