কাতার বিশ্বকাপ জয়ের পর প্রথম জন্মদিনটা নিজ জন্মভূমিতেই কাটালেন ফুটবল জাদুকর লিওনেল মেসি। নিজ শহর রোজারিওতে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর পাশাপাশি শৈশবের ক্লাব নিওয়েলস ওল্ড বয়েজের বিপক্ষে আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে একটি প্রদর্শনী ম্যাচও খেললেন ফুটবলের এই মহাতারকা। সেই ম্যাচে করলেন হ্যাটট্রিকও।
শৈশবের ক্লাব নিওয়েলস ওল্ড বয়েজের বিপক্ষে আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে মাঠে নামেন তিনি। আর মাঠে নেমেই নিজের জন্মদিনটা আরও রঙিন করেন দুর্দান্ত এক হ্যাটট্রিক করে।
মেসির সাবেক সতীর্থ ম্যাক্সি রদ্রিগেজ ওল্ড বয়েজে তিন বছর খেলার পর কিছুদিন আগেই অবসর নিয়েছেন। সে কারণেই আয়োজন করা হয় প্রদর্শনী ম্যাচের। মেসির জন্মদিনের দিনটিতেই আয়োজন করা হয় ম্যাচটির।
আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে মেসির সঙ্গে মাঠে নামেন দেশটির ফুটবল কোচ লিওনেল স্ক্যালোনিও। এ ছাড়াও ডি মারিয়া, সার্জিও আগুয়েরোসহ সাবেক ও বর্তমান অনেক ফুটবলারই অংশ নেন ম্যাচটিতে।
মার্সেলো বিয়েলসা স্টেডিয়ামে হওয়া সেই প্রীতি ম্যাচটি মেসিকে আবার অন্যরকম স্বাদও দিয়েছে। জন্মশহরে দেখা পেয়েছেন হ্যাটট্রিকের।
বিশ্বকাপ জয়ী তারকাকে দেখতে এদিন ৪২ হাজার দর্শক উপস্থিত ছিলেন। বিপুল দর্শক উপস্থিতিতে প্রথমার্ধেই হ্যাটট্রিক পূরণ করেছেন মেসি। চার মিনিট পার হতেই প্রথম গোল পান তিনি। তাও আবার বাঁ পায়ের ফ্রি কিক থেকে। তার জন্মদিনটা স্মরণীয় করে রাখতে দর্শকরাও কম চেষ্টা করেননি। সুরে সুরে শুভ জন্মদিন বলে মেসিকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
বার্সেলোনা একাডেমিতে যাওয়ার আগে এই শহরেই তিনি নিজের ছোটবেলা কাটিয়েছিলেন। তাই সাত বারের ব্যালন ডি’অর জয়ী ম্যাচের পর ভিন্নভাবে কাটানো জন্মদিনে আপ্লুত হওয়ার কথা জানিয়েছেন। নিজের অনুভূতি জানিয়ে ইএসপিএন আর্জেন্টিনাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক বলেছেন, ‘আমি রোজারিওতে নিজের জন্মদিন পালন করতে পছন্দ করি। বিশ্বকাপের পরে এটিই আমার জন্মদিন। একটি বিশেষ জন্মদিন। এর আগে কখনও এমন অনুভূতি পাইনি, যা এবার পাচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হতে বিশেষ ও আলাদা কিছু করেছি। এটা সব ফুটবলারের একদম ছোটবেলার স্বপ্ন থাকে, এটাই সেরা। আমার ক্যারিয়ারজুড়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ জিনিসই জিতেছি কিন্তু তারা পেছনেই পড়ে থাকবে। যখন আমি ফুটবল ছাড়বো, সবকিছু মনে থাকবে আর যা কিছু অর্জন করেছি উপভোগ করবো।’
মেসির এই কথা শোনা পর মেসিভক্ত নেটিজেনদের মনে শঙ্কার কালো মেঘ দানা বাঁধতে শুরু করে। তবে কি অবসরের পথে হাঁটছেন মেসি? শেষ হতে যাচ্ছে তার বর্ণিল ক্যারিয়ার। যদিও সরাসরি অবসরের কিছুই বলেননি মেসি। কিন্তু তারপরও অজানা আতঙ্ক জেঁকে বসেছে মেসিভক্তদের মনে।
১৯৮৭ সালের ২৪ জুন আর্জেন্টিনার রোজারিও শহরে জন্ম নেন মেসি। জন্মের পর শারীরিক অনেক প্রতিবন্ধকতা স্বত্বেও তার পায়ের কারিশমায় মুগ্ধ হয় বার্সা। ধীরে ধীরে বার্সার মূল দলে নাম লেখান তারকা এই ফুটবলার। এরপর আর পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি।
২০০৪ থেকে ২০২১ অবধি বার্সার হয়ে প্রায় সব শিরোপাই জেতেন মেসি। সেখান থেকে পিএসজি হয়ে এখন ইন্টার মায়ামিকে রাঙানোর অপেক্ষায়। এর মধ্যে আরাধ্যের বিশ্বকাপও জেতা হয়েছে তাঁর। তার ৩৬তম জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানিয়েছে সাবেক দুই ক্লাব পিএসজি ও বার্সা।