রাজের সঙ্গে পরীমনির বিচ্ছেদ হয়েছে প্রায় দুই বছর। বিচ্ছেদের পর থেকে তাদের দুজনের মুখ দেখাদেখিও বন্ধ ছিল। এতদিনে সন্তানকেও দেখার সুযোগ হয়নি রাজের। এই সময়ে রাজ চুপচাপ থাকলেও অনেকবারই ব্যক্তিজীবন নিয়ে কথা বলেছেন পরীমনি।
ছেলের প্রতি দায়িত্ব পালন না করার অভিযোগ তুলে বেশ কয়েকবার দেশ-বিদেশের গণমাধ্যমে রাজের সমালোচনা করেছেন। কিন্তু হঠাৎ করে তাদের দুজনকে ঘিরে দৃশ্যপট যেন পাল্টাচ্ছে, এমন খবরই পাওয়া যাচ্ছে।
মাসখানেক হলো রাজ নাকি পরীর বাসায় যাতায়াত করছেন। এর মধ্যে কয়েকটি অনুষ্ঠানেও দুজনকে একসঙ্গে দেখা হয়েছে। সন্তানকে দেখার জন্য এরই মধ্যে বেশ কয়েকবার পরীমনির বাসায় গেছেন রাজ।
রাজের বাসায় যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন পরীমনি। তিনি বলেন, ‘অন্য একটি বিষয়ের জন্য সে (রাজ) বাসায় এসেছিল। বিচ্ছেদ হওয়ার পর আমার সঙ্গে দেখা হয়নি। আমি দেখা করতেও চাইনি। বাসায়ও আসা মানা ছিল তার। কিন্তু হঠাৎ করেই কিছু দিন আগে আমার বাসায় এসেছিল। সেই সময় বাসা থেকে যাওয়ার আগে তার কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র আমার বাসায় রয়ে গিয়েছিল। কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে বাসায় এসেছিল। কাগজপত্রগুলো আমি যত্ন করেই রেখে দিয়েছিলাম। এসে নিয়ে গেছে। বেশ অনেকক্ষণই ছিল। এলে তো আর বের করে দিতে পারি না।’
ছেলের সঙ্গে দেখা হয়েছে কিনা, জানতে চাইলে অভিনেত্রী বলেন, ‘হ্যাঁ, দেখা তো হবেই। তারও তো সন্তান পুণ্য। আমি রান্না করেছিলাম। সবাই মিলে একসঙ্গে খাওয়াদাওয়া করেছি। এই আরকি।’
তা হলে দুজনের মধ্যে সম্পর্কের জায়গাটা শীতল হয়েছে, বলা যাবে কি— এমন প্রশ্নে পরীমনি বলেন, ‘শীতলের কী আছে। আর শীতল তো হতেই পারত, কিন্তু সেটি মেইনটেইন করেনি রাজ। এই শহরে অনেকেরই তো বিচ্ছেদ হয়েছে, হয়। সন্তানকে ঘিরে কি বিচ্ছেদ বাবা-মায়ের দেখা-সাক্ষাৎ হয় না? কথা হয় না? সন্তানকে ঘিরে সুন্দর সময়ও কাটে না বাবা-মায়ের? কিন্তু রাজের বিষয়টি ভিন্ন। ও বাচ্চাকে সময় দেয়নি। সন্তানের ভরণপোষণের দায়িত্ব নেয়নি। শখ করেও কোনো দিন সন্তানকে খেলনা পর্যন্ত কিনে দিতে দেখলাম না। ঠিকমতো খবরই তো রাখেনি। আমার মনে হয়, সন্তানের মর্মই ও বোঝে না।’
তিনি বলেন, ‘কয়েক দিন তো দেখলাম। রাজ পুণ্যকে কোলে নিতে চাইলে ওভাবে রাজকে বাবা হিসেবে চিনতে পারে না এখন। অথচ আগে রাজ ছাড়া পুণ্য কিছুই বুঝত না। এটি রাজের জন্য নির্মম।’ এই নায়িকার মন্তব্য, ‘সব কথার শেষ কথা— রাজের সাফল্যেও আমার যায় আসে না, ব্যর্থতাতেও নয়। সে তো আমার জীবনে অতীত। সে এখন আমার কাছে ঘৃণার পাত্র।’
পরী বলেন, ‘অনেক কিছুই তো শুনি রাজকে নিয়ে। এমন কোনো কাজ যেন বাবা হিসেবে রাজ না করে, যাতে বড় হয়ে সবার কাছে ছোট হয় সন্তান। কারণ সন্তানের বাবা হিসেবে রাজকে তো আর অস্বীকার করতে পারব না।’
তিনি বলেন, ‘মায়া আছে বলেই তো বাসায় ঢুকতে দিয়েছি। হাজার হলেও সে আমার সন্তানের বাবা। তাই বলে সে চাইলেই সব সময় বাসায় আসতে পারবে না। তার প্রতি আমার ঘৃণা থাকতেই পারে। তবে সে যেখানেই থাকুক, ভালো ভালো কাজ করুক, ভালো থাকুক। কারণ সন্তানের সুন্দর জীবনের জন্য বাবাকেও ভালো থাকতে হয়।’