পশ্চিম সুদানের দারফুর অনাহারে ভুগছে। জাতিসংঘের একটি সংস্থা সতর্ক করে বলেছে, ক্রমবর্ধমান সহিংসতা আফ্রিকান জাতিকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। সেখানে খাবারের অভাবে মানুষ ঘাস এবং চিনাবাদামের খোসা খাচ্ছে।
ওয়ার্ল্ড ফুড প্রগ্রামের (ডাব্লিউএফপি) পূর্ব আফ্রিকার আঞ্চলিক পরিচালক মাইকেল ডানফোর্ড গতকাল শুক্রবার (৩ মে) বলেছেন, ‘মানুষ ঘাস এবং চিনাবাদামের খোসা খেতে বাধ্য হচ্ছে।
’ তিনি আরো বলেছেন, ‘তাদের কাছে দ্রুত সহায়তা না পৌঁছালে, আমরা দারফুর এবং সুদানের অন্যান্য সংঘাতপূর্ণ এলাকায় ব্যাপক অনাহার এবং মৃত্যুর সাক্ষী হব।’
বৃহস্পতিবার সুদানের জন্য জাতিসংঘের উপ-মানবিক সমন্বয়কারী টবি হেওয়ার্ড এ তথ্য জানিয়েছেন, সুদানে সর্বশেষ সহিংসতার ঘটনা ঘটে যখন আরএসএফ উত্তর দারফুরের রাজধানী এল ফাশারকে ঘেরাও করে ফলে। শহর এবং এর আশপাশের এলাকাগুলোতে নির্বিচারে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া পুরো গ্রাম পুড়িয়ে ফেলাসহ বিমান থেকে বোমা হামলার ঘটনা ঘটে।
হেওয়ার্ড আরো বলেছেন, এল ফাশার দারফুরের একমাত্র শহর, যেখানে আরএসএফ এখনো দখল নিতে পারেনি। যুদ্ধের কারণে বাস্তুচ্যুত হওয়া হাজার হাজার মানুষ সেখানে আশ্রয় নিয়েছে। জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থার (ইউনিসেফ) তথ্য অনুসারে, শহরটিতে আশ্রয় নেওয়াদের মধ্যে অন্তত পাঁচ লাখ মানুষ অন্যান্য স্থানে সহিংসতার কারণে বাস্তুচ্যুত হয়েছে। সাম্প্রতি ৩৬ হাজারের বেশি মানুষ এল ফাশারে তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছে বলে জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয় অফিস (ওসিএইচএ) জানিয়েছে।
২০১৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদান গৃহযুদ্ধের কবলে পড়েছে। ক্ষমতা নিয়ে সুদানের সেনাবাহিনী এবং আধাসামরিক র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)-এর মধ্যে লড়াই শুরু হয়েছিল। যা দ্রুত একটি নৃশংস সংঘাতে পরিণত হয়। যৌন নির্যাতন, গণহত্যাসহ নানা সহিংসতা বেড়ে যায় তখন। বহু বেসামরিক হতাহতের ঘটনা বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে উঠে আসে।
এ ছাড়া বাস্তুচ্যুত হয় অনেক মানুষ। এখন পর্যন্ত সুদানে ৪.৬ মিলিয়ন শিশুসহ ৮.৭ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ যুদ্ধের কারণে বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং ২৪.৮ মিলিয়ন মানুষের সহায়তা প্রয়োজন।
ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল বৃহস্পতিবার বলেছেন, দুই সপ্তাহ আগে যুদ্ধ পিরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় শহর ও এর আশপাশে কমপক্ষে ৪৩ জন নিহত হয়েছেন। পশ্চিম এল ফাশারের বেশ কয়েকটি গ্রামে সাম্প্রতিক হামলায় যৌন সহিংসতা, শিশু হত্যা, বাড়িঘরে আগুন দেওয়া এবং অবকাঠামো ধ্বংসসহ নানা সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে।